‘অ্যাম্বুলেন্সের ছেলেটি!’ এটাই তার পরিচয় হয়ে উঠেছে। এখন এই দু'টি শব্দ বললেই যে কারো চোখে ভেসে উঠছে বোমার আঘাতে ভেঙে পড়ার কংক্রিটের ধুলোয় ছেয়ে যাওয়া এক শিশুর মুখ।
সে শিশুর বয়স মোটে ৫ বছর। বসে আছে একটি অ্যাম্বুলেন্সের ভেতরের একটি চেয়ারের ওপর। এতই ছোট যে পা দুটো চেয়ারে ঝোলানোও যায় না। সোজা হয়ে আছে। পুরো শরীর ধুলোয় ধুসর। মাথায় ঝাকড়া চুলগুলো যে কোন রঙের ছিলো তা বোঝার উপায় নেই। স্রেফ ধুসর রঙা।
আর শরীরটা যেস্থানগুলো রক্তাক্ত ছিলো সেই স্থানগুলো ভিজে কাদার ছোপ ছোট রূপ নিয়েছে। সিরিয়ার এই ওমরান দাকনিশ (৫) মানবতার সকল বিপর্যয়ের চিহ্ন হয়ে বসে আছে চেয়ারের ঝকঝকে রঙ ম্লান করে দিয়ে।
সিরিয়ায় যে গৃহযুদ্ধ চলছে, তার ভয়াবহতার, মানবতা বিবর্জতার জলন্ত প্রমান হয়ে সামনে এসেছে এই ছবি ও ভিডিও। ভিডিওতে দেখা গেছে ওমরান সকল দৃশ্যে হতবিহ্বল। আতঙ্কভরা চোখে কেবল সোজা তাকিয়ে।
সিরিয়ান আমেরিকান মেডিকেল সোসাইটির বরাত দিয়ে মিডিয়াগুলো বলছে, একটি বুধবার উত্তর সিরিয়ার আলেপ্পোতে চালানো বিমান হামলার শিকার এই ওমরান দাকনিশ।
পরে অবশ্য চিকিৎসা দিয়ে ওমরানকে চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দিয়েছেন চিকিৎসকরা। তবে যে দৃশ্যের অবতারণা ঘটেছে তাকে নিয়ে তা আধুনিক বিশ্বে মানবতার বিপর্যয় হিসেবেই ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে থাকবে।
সিরিয়ার এই গৃহযুদ্ধে অনেক শিশুসহ লাখ লাখ মানুষের প্রাণ গেছে।
এর আগে তুরষ্কের উদ্বাস্তু পরিবারের শিশু আইলান কুর্দির লাশ সমুদ্র তীরে পড়ে থাকার দৃশ্য বিশ্ব মানবতাকে নাড়া দিয়েছিলো বলে কথা হচ্ছিলো। কিন্তু সে কি আদৌ সত্য। তাহলে আইলান কুর্দির পর ফের ওমরান দাকনিশ কেন? সে প্রশ্ন উঠেছে সকল মহলে।
বাংলাদেশ সময় ১৩৪৫ ঘণ্টা, আগস্ট ১৯, ২০১৬
এমএমকে