এদিকে উরির হামলার ঘটনায় ভারতীয় তোড়জোড়ের মুখে চুপ করে বসে নেই পাকিস্তানও। সম্ভাব্য ভারতীয় হামলাকে আমলে রেখে ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে ইসলামাবাদ।
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যোগ দিতে পাকিস্তানের সরকার প্রধান নওয়াজ শরীফ বর্তমানে নিউইয়র্কে অবস্থান করলেও ভারতের বিরুদ্ধে যে কোনো পদক্ষেপের শেষ সিদ্ধান্ত যে সেনাপ্রধান রাহিল শরীফ নেবেন তা অনেকটাই স্পষ্ট। উরির ঘটনার পরপরই সামরিক বাহিনীর কোর কমান্ডারদের নিয়ে জরুরিভিত্তিতে বৈঠকে বসেছিলেন তিনি। সেখানেই ভারতীয় যে কোনো হামলার পাল্টা জবাব দেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন রাহিল শরীফ।
ভারতীয় সামরিক বাহিনী এবার সত্যিই সত্যিই সীমান্ত অতিক্রম করে পাকিস্তানের মাটিতে হামলা চালাতে পারে এ বিশ্বাস দৃঢ় হচ্ছে পাকিস্তানের বিভিন্ন মহলে। সেদেশের সংবাদপত্রগুলোও এ সংক্রান্ত খবর ছাপছে।
ভারতের সেনাবাহিনী পাকিস্তানের সীমান্তের কাছাকাছি এলাকায় সরে আসছে। এমন খবর প্রকাশ হয়েছে পাকিস্তানের গণমাধ্যমেও।
ভারতের এসব তৎপরতায় স্বভাবতই উদ্বিগ্ন পাকিস্তানের রাজনৈতিক ও সামরিক নেতৃত্ব।
পরিস্থিতির গুরুত্ব অনুধাবন করতে পেরে সেনা প্রধান জেনারেল রাহিল শরীফের সঙ্গে দফায় দফায় টেলিফোনে শলাপরামর্শ করছেন বর্তমানে নিউইয়র্কে অবস্থানরত পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরীফ।
জানা গেছে, শরীফের কাছে গ্রিন সিগন্যাল পেয়েই কোর কমান্ডারদের সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেন রাহিল শরীফ। সম্ভাব্য ভারতীয় আক্রমণের মুখে পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরীফ যতই হুংকার ছাড়ুন না কেন, সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার মুখে আসলেই উদ্বিগ্ন পাক জেনারেলরা।
কোর কমান্ডারদের সঙ্গে রাহিল শরীফের বৈঠকই এর প্রমাণ। কারণ সাধারণত গুরুতর কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলেই কেবল নিয়মিত বৈঠকের বাইরে কোর কমান্ডারদের এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় পাকিস্তানে।
জানা গেছে, ওই বৈঠকেই ভারতীয় হামলা মোকাবেলায় করণীয় নিয়ে জেনারেলদের সঙ্গে বসে ছক কষেছেন রাহিল শরীফ। দিয়েছেন প্রয়োজনীয় নির্দেশনা।
এদিকে সম্ভাব্য ভারতীয় হামলার শঙ্কা সামনে রেখে, পাকিস্তানের ভারত সীমান্ত সংলগ্ন উত্তরাঞ্চলীয় এলাকায় বেশ সতর্কতা অবলম্বন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।
এমনকি ভারতীয় বিমান হামলার ভয়ে নিজেদের আকাশ সীমায় বেসামরিক বিমান চলাচলেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করেছে পাকিস্তানি কর্তৃপক্ষ। বুধবার পাকিস্তানের রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থা পিআইএ'র একজন মুখপাত্র সংবাদমাধ্যমকে জানান, সকাল থেকেই গিলগিট ও চিত্রল এলাকায় 'বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ'। পাশাপাশি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে, ইসলামাবাদ ও পেশোয়ারের মধ্যকার মূল মহাসড়কের কিছু অংশও।
যদিও পাকিস্তানি কর্মকর্তারা দাবি করেছেন সংস্কারের জন্যই বন্ধ করা হয়েছে এই মহাসড়ক। কিন্তু জানা গেছে, অত্যাধুনিক এই মহাসড়ক এমনভাবে নির্মাণ করা হয়েছে যেন প্রয়োজনের সময় যুদ্ধবিমানের ওঠানামায় ব্যবহার করা সম্ভব হয়।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন যেহেতু খুবই উত্তপ্ত, তাই যে দুই দেশের মধ্যে লড়াই বাধার যে কোনো সম্ভাবনার কথা তাই এই মুহূর্তে উড়িয়ে দেয়া যায় না।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২১, ২০১৬
আরআই