ঢাকা: রাজধানী ইসলামাবাদ অচল করতে বুধবার (২ নভেম্বর) ডাকা সমাবেশে বাতিল করেছেন পাকিস্তানের বিরোধী দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। গণগ্রেফতার ও সংঘাত এড়াতে তিনি এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে দলটির শীর্ষ পর্যায় থেকে জানানো হচ্ছে।
পানামা পেপারসে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সরকার এবং তার স্বজন ও ঘনিষ্ঠজনদের গোপন আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর থেকে আন্দোলনে নেমেছে ইমরানের পিটিআই। দলটির দাবি, দুর্নীতির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করতে হবে নওয়াজ সরকারকে।
দফায় দফায় নানা কর্মসূচি পালনের ধারাবাহিকতায় বুধবার ইসলামাবাদ অচলের ডাক দেন ইমরান খান। ভারতের সঙ্গে সীমান্তে উত্তেজনার জেরে রাজনৈতিক ও কূটনৈতিকভাবে টালমাটাল পরিস্থিতি পার করা নওয়াজ সরকার এ কর্মসূচির ডাকে আরও নাজুক অবস্থায় পড়ে। তবে, এই অবস্থা কাটিয়ে উঠতে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বিক্ষোভ ঠেকাতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।
এরমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরুর আদেশ দেওয়া হয়। একইসঙ্গে পানামা পেপারস কেলেঙ্কারি ইস্যুতে তার বক্তব্য চাওয়া হয়।
অন্যদিকে সরকারের নির্দেশনা মতো শুরু হয় পিটিআই নেতাকর্মীদের ধরপাকড়। দলটির শীর্ষ নেতারা অনেকটা গৃহবন্দি বা আত্মবন্দি হয়ে পড়েন। ইসলামাবাদ ঘিরে কড়া অবস্থান নেয় নিরাপত্তা বাহিনী। কয়েক ধাপে ইমরানের কর্মীরা ইসলামাবাদে ঢুকতে চাইলে তাদের রাবার বুলেট ও টিয়ার গ্যাস নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
এরই প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ইমরান তার ইসলামাবাদের বাসভবনের বাইরে জড়ো হওয়া নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, এখন ইসলামাবাদ অচল করার পরিবর্তে আমরা উল্লাস করবো (নওয়াজের দুর্নীতির তদন্তে আদালতের নির্দেশ জারি হয়েছে বিধায়)।
পিটিআইয়ের শীর্ষ কয়েকজন নেতা বলেন, কর্মসূচি ঘনিয়ে আসতেই দেড় হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বেশ ক’জন সংগঠক নেতাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে। পুলিশ রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে যেন নেতাকর্মীরা ইসলামাবাদে না ঢুকতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলেন, বিপুল সাড়া না পেয়েই এবং পুলিশের সঙ্গে সংঘাত এড়াতেই হয়তো ইমরান তার এই আলোচিত কর্মসূচি বাতিল করেছেন।
কিন্তু তার সিদ্ধান্তে হতাশ নওয়াজবিরোধী নেতাকর্মীরা। করাচির ফয়সাল শেরজান নামে এক পিটিআই কর্মী বলেন, রাজনীতিতে সময়মতো পদক্ষেপ নিতে পারাটাই সবকিছু। তেমনি সাহসও। আপনি যে বক্তব্য দেন সেটা কাজে মেলাতে হবে।
সমাবেশ বাতিলের সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করে শেরজান বলেন, পিটিআই কর্মী-সমর্থকরা ভীষণ হতাশ। আমি তাদের মধ্যে একজন।
মনে করা হচ্ছে, ইসলামাবাদ অচল করে ইমরান সেনাঅভ্যুত্থানের পথ সুগম করতে চাইছেন বলে যে খবর ছড়িয়েছে, সে দায় থেকে মুক্তি পেতেই কর্মসূচিটি বাতিল করে থাকতে পারেন তিনি। তবে এ কর্মসূচি বাতিলে যে সরকারে স্বস্তি ফিরেছে সে খবর দিচ্ছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৬
এইচএ/