ঢাকা: প্রচলিত ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল ঘোষণার পর নতুন ৫০০ ও ২০০০ রুপির নোট বাজারে ছাড়ছে ভারত। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) জাতির উদ্দেশে দেওয়া বিশেষ ভাষণে এ কথা জানান।
রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়ার (আরবিআই) পক্ষ থেকে এরইমধ্যে নতুন নোট দু’টির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সে ছবি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশও হয়েছে।
আকস্মিক দেওয়া ভাষণে মোদী জানান, মঙ্গলবার রাত ১২টার পর থেকে প্রচলিত ৫০০ ও ১০০০ রুপির নোট বাতিল হয়ে যাবে। এই নোট দিয়ে আর লেনদেন করা যাবে না। এসব নোট আগামী ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংক ও পোস্ট অফিস থেকে বদল (অন্যান্য ছোট নোটের সঙ্গে) করে নিতে হবে।
মোদী বলেন, বড় নোট দু’টি বাতিল ঘোষণা করা হচ্ছে দেশে ব্ল্যাকমানির (কালোমুদ্রা) আধিপত্য রুখতে। আজ থেকে ৫০০ ও ১০০০ নোট দু’টি পরিত্যক্ত কাগজে পরিণত হলো। শিগগির রিজার্ভ ব্যাংক বাজারে নতুন ৫০০ ও ২০০০ রুপির নোট ছাড়বে।
মোদীর তার ভাষণে জানান, নোট দু’টি বাজারে লেনদেন অবৈধ হলেও স্বাভাবিক থাকবে প্রচলিত অন্যান্য মুদ্রার লেনদেন ও বিনিময়। তবে, রেলওয়ে এবং হাসপাতালগুলোতে আগামী ৭২ ঘণ্টা (১১ নভেম্বর রাত ১২টা পর্যন্ত) লেনদেন করা যাবে বাতিল ঘোষিত নোট দু’টি।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, নোট দু’টির বাতিলের ঘোষণা কার্যকরে বুধবার (৯ নভেম্বর) দেশজুড়ে সব ব্যাংকের গ্রাহকের কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। তবে, ব্যাংকগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে পারবে। কোনো কোনো এলাকায় এটিএম বুথ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী আগামী ১১ নভেম্বর পর্যন্ত এটিএম বুথ থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২০০০ রুপি উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা দেন। আর ব্যাংক থেকে উত্তোলনের বাধ্যবাধকতা দিলেন প্রতিদিন সর্বোচ্চ ১০ হাজার রুপির।
দু’টি শীর্ষ নোট বাতিল ঘোষণার আগে প্রধানমন্ত্রী মোদী ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশ নিয়ে কথা বলেন। তিনি জানান, আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আইএমএফ) ভারতকে বৈশ্বিক অর্থনীতির কেন্দ্র বলে মনে করে। কিন্তু এখানকার অর্থনৈতিক বিকাশের প্রধান অন্তরায় দুর্নীতি ও ব্ল্যাকমানি।
এসময় তিনি ব্ল্যাকমানি জব্দের ফিরিস্তি তুলে ধরেন। তুলে ধরেন কালোবাজারের বিবরণও। মোদী দেশবাসীর উদ্দেশে বলেন, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’ই আমাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য (সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সবার উন্নয়নে কাজ করা)।
প্রধানমন্ত্রী নোট দু’টি ঘোষণা নিয়ে জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার আহ্বান জানান। বলেন, আপনাদের অর্থ আপনাদেরই থাকবে। কেবল কালোমুদ্রার চোখ রাঙানি থামাতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে, বড় অংকের অর্থ যারা এতোদিন লুকিয়ে রেখেছিলেন দেশের অভ্যন্তরে, তারাই বিপদে পড়ে গেছেন। স্বল্প বা মাঝারি অংকের অর্থ সহজেই ব্যাংক ও পোস্ট অফিস থেকে বদল করে নেওয়া যাবে, কিন্তু বড় অংকের অর্থ বদল করতে গেলেই প্রক্রিয়ায় আটকে যাবেন ‘ব্ল্যাকাররা’।
বাংলাদেশ সময়: ২৩০০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৮, ২০১৬
এইচএ/