ঢাকা: মায়ানমারের উত্তর-পশ্চিমের রাখাইন রাজ্যে (পূর্বের আরাকান) স্থানীয় মুসলমানদের গণহত্যার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেন দেশটির ক্ষমতাধর গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি। রোহিঙ্গাদের দমনপীড়নের ঘটনায় নীরবতার জন্য সমালোচিত শান্তিতে নোবেল জয়ী নেত্রী উল্টো দুষেছেন, ঘটনা নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নাড়ানাড়িকেই।
অং সান সু চি দাবি করেছেন, মায়ানমারের সে রাজ্যে (রাখাইন) সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান চালানো হয়েছে। এতে পরিস্থিতি শান্ত রাখতে পারা গেছে। এছাড়া সাময়িক সৃষ্ট সমস্যা উন্নয়নের চেষ্টা করছে সরকার।
তিনি বলেন, আমরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি এবং শান্ত করেছি। তবে সবসময় অসন্তোষ প্রকাশ না করে দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্পর্ক উন্নয়ন এবং শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি আমাদের সহায়তা করে, তবে তার প্রশংসা করবো।
রাষ্ট্রীয় সফরে শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) সিঙ্গাপুর সফরকালে দেশটির টেলিভিশন চ্যানেল নিউজ এশিয়াকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সু চি এসব বিষয়ে কথা বলেন।
মায়ানমার সরকারের মতে, রাজ্যটিতে সরকারি বাহিনীর অভিযানে ৮৬ জন মুসলিম নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১০ হাজার মানুষ বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন। প্রকৃত পক্ষে এ সংখ্যা আরও বেশি; প্রায় দ্বিগুণ।
মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ কৃত্রিম উপগ্রহের ছবি বিশ্লেষণ করে দেখেছে, রাখাইনের রোহিঙ্গা গ্রামগুলোর কয়েক হাজার ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনারের দফতর (ওএইচসিএইচআর) সম্প্রতি এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের সঙ্গে মায়ানমার সরকারের আচরণ ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের মতোই।
তবে রাখাইন রাজ্যে চলমান নির্যাতনকে অতিরঞ্জিত না করে সেগুলো নিরসনে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে উল্লেখ করে অং সান সু চি বলেন, এ জন্য আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলকেও এক হতে হবে। অতিরঞ্জিত করা যাবে না।
তিনি বলেন, শুধু রোহিঙ্গা মুসলমানরাই নয়, রাখাইনে বসবাসকারী অন্য জাতিগোষ্ঠীর মানুষও ভীত। তার দাবি, নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলার কারণেই রাখাইন রাজ্যে অভিযান চালানো হয়।
***রাখাইন প্রদেশ পরিদর্শন করে কফি আনানের ক্ষোভ
এদিকে, শুক্রবারই রাখাইন রাজ্য পরিদর্শন করেছেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব কফি আনান। সেখানে গিয়ে তিনি বাড়ি-ঘরে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ধ্বংসস্তূপ পরিদর্শন করেছেন, কথা বলেছেন নির্যাতনের শিকার মানুষজনের সঙ্গে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৩, ২০১৬
আইএ