ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

তুর্কি সেনাঘাঁটি স্থাপনের প্রস্তাবে সৌদির ‘না’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯১১ ঘণ্টা, জুন ১৮, ২০১৭
তুর্কি সেনাঘাঁটি স্থাপনের প্রস্তাবে সৌদির ‘না’ ছবি: সংগৃহীত

মধ্যপ্রাচ্য সংকট আর রাজনীতি নিয়ে সৌদি আরব মোড়লগিরি দেখাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। এমনকি সন্ত্রাসে মদদ দেওয়ার অভিযোগে সৌদি নেতৃত্বাধীন কয়েকটি দেশ কাতারকে ‘একঘরে’ করে রেখেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।

উপসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে কাতারেই আছে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সেনাঘাঁটি। এবার দেশটিতে সেনাঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দিয়েছে তুর্কি সরকার।

সেই তুরস্ককে নিজ দেশে সেনাঘাঁটি স্থাপনের প্রস্তাবে একেবারে ‘না' বলে দিয়েছে সৌদি আরব।

সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা শনিবার (১৮ জুন) উল্লেখ করেছে, ‘নিজেদের এলাকায় কোনও তুর্কি ঘাঁটিকে মেনে নেবে না সৌদি। প্রতিবেশী কাতারে যেরকম তুর্কি সেনাঘাঁটি রয়েছে, ঠিক একইভাবে আরেকটি সেনাঘাঁটি সৌদিতে স্থাপনের অনুমতি দেওয়া হবে না। কারণ সৌদি আরবের সেনাসদস্য ও শক্তি উভয়ই যথেষ্ট ভালো পর্যায়ে রয়েছে। ’

নাম গোপন করে এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সৌদি অঞ্চলে তুরস্ককে কিছুতেই সেনাঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেওয়া যায় না। ’ ওই কর্মকর্তা আরও জানান; সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলা, অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় তুরস্কের ইনকিরলিক ঘাঁটিসহ বিদেশের বিভিন্ন স্থানে সৌদি সেনাবাহিনী কাজ করে যাচ্ছে।

পর্তুগিজ টেলিভিশন আরটিপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তুর্কি প্রেসিডেন্ট রিসেপ তায়েফ এরদোগান বলেন, ‘২০১৪ সালে কাতারে তুর্কি সেনাঘাঁটি স্থাপনের কাজ শুরু করার কদিন পরই সৌদি আরবকে সেনাঘাঁটি স্থাপন করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম। ’

তুর্কি প্রেসিডেন্ট আরো বলেন, ‘একই প্রস্তাব বাদশাহ সালমানকেও দিয়ে বলেছিলাম, বিষয়টি সঠিক হলে আমরা সৌদি আরবে সেনাঘাঁটি স্থাপন করতে পারি। তারা প্রস্তাবটি দেখবেন বলে জানালেও এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কার্যকরি কোনো ফল পাওয়া যায়নি। ’

তুর্কি প্রেসিডেন্টের এ সাক্ষাৎকারের একদিন পরই সৌদি স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে, তুরস্ককে তারা সেনাঘাঁটি স্থাপনের অনুমতি দেবে না।

গত সপ্তাহে কাতারের সেনাঘাঁটিতে সেনা মোতায়েনের অনুমতি পাস হয় তুরস্কের সংসদে। আরব দেশগুলোর কূটনৈতিক সংকট সমাধানে নেতৃস্থানীয় মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করছে তুরস্ক।

গত ৫ জুন থেকে কাতারের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করেছে সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মিসর। সম্পর্ক ছিন্ন করা দেশগুলো বলছে, সন্ত্রাসী ও আঞ্চলিক বিদ্রোহী পক্ষ ইরানকে মদদ দিচ্ছে কাতার। তবে এটিকে ভিত্তিহীন অভিযোগ বলে দাবি কাতারের।

যে দেশগুলো কাতারের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদে সহায়তার অভিযোগ এনেছে, তাদের প্রমাণ দেখাতে বলেছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেবলুত কেভুসওগলো। শনিবার তিনি বলেন, ‘যতো দ্রুত সম্ভব সংকট নিরসন করা উচিত। ’

সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের  সঙ্গে গত ১৬ জুন বৈঠক শেষে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘কাতার তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণ চেয়েছে, সংকট মধ্যস্থতাকারী দেশ কুয়েতও তা চায়, আমাদের চাওয়াও একই। ’

বাদশাহ সালমান আরো বলেন, ‘দোহার বিরুদ্ধে এখন পর্যন্ত যারা অভিযোগ করে বেড়াচ্ছেন, তার দলিল উপস্থাপন করুন বা কারো কাছে প্রমাণ দেখান। ’

এদিকে সৌদি আরব সফরের সময় সংকট সমাধানে তুরস্কের প্রচেষ্টার বিষয়টি তুলে ধরেছেন বলে জানিয়েছেন তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী। কূটনৈতিক সূত্রের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা এএফপি জানিয়েছে, বৈঠকটি ছিল ইতিবাচক। তবে এর মাধ্যমে সুনির্দিষ্ট কোনোকিছুই জানা যায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ০১০৪ ঘন্টা, জুন ১৯, ২০১৭
জিওয়াই/বিএসকে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।