ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মিয়ানমারকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে বললো ইইউ-ভারত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০১৭
মিয়ানমারকে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে বললো ইইউ-ভারত ছেলের সঙ্গে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা এক রোহিঙ্গা বৃদ্ধা, ছবি: বাংলানিউজ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে দেশটিকে বাংলাদেশের সঙ্গে এক হয়ে কাজ করতে বললো ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ও ভারত। তারা বলেছে, কফি আনানের প্রতিবেদনের পূর্ণ বাস্তবায়নই পারে সমস্যার সুরাহা করতে।

একটি যৌথ ঘোষণায় নয়া দিল্লি ও ইইউ এসব বিষয় তুলে ধরেছে। তবে তারা ‘রোহিঙ্গা’ নামটির কথা উল্লেখ করেনি।

ঠিক একইভাবে মিয়ানমারও তাদের ‘রোহিঙ্গা’ নয়, মুসলিম জনগোষ্ঠী, কখনও কখনও ‘বাঙালি’ বলে আখ্যা দিচ্ছে।

যৌথ ঘোষণায় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ছাড়াও ইইউ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক ও ইউরোপীয়ান কমিশন প্রেসিডেন্ট জিন-ক্লড জাঙ্কার স্বাক্ষর করেন। ইইউ'র দুই নেতার সঙ্গে মোদি

তারা বলেছেন, সহিংসতার জন্য আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) দায় রয়েছে।

তবে তারা অতি দ্রুতই যেকোনো রকম সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানান। উল্লেখ করেন, যেন রাখাইনে স্বাভাবিক দিন ফিরে আসে। পাশাপাশি আরও আহ্বান জানান, যেন সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করে মিয়ানমার। এছাড়া আনান কমিশনের প্রতিবেদনও বাস্তবায়নে জোর দেন।

রোহিঙ্গাদের জন্য বাংলাদেশ যা করছে তা সত্যিই বড় অবদান বলেও ঘোষণায় স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকার বলে আসছে কফি আনান কমিশনের প্রতিবেদন বিনা দ্বিধা-শর্তে বাস্তবায়ন করতে হবে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে হবে বলে শনিবারও (০৭ অক্টোবর) বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন।

                      নতুন করে রোহিঙ্গাদের ঢল নামার শঙ্কা জাতিসংঘের

এদিকে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) কর্মকর্তা জোয়েল মিলম্যান একটি পৃথক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, প্রতিদিন দুই হাজার করে রোহিঙ্গা এখনও বাংলাদেশে আসছেন।

সব মিলিয়ে আরও লাখ খানেক মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশের জন্য অপেক্ষা করছে বলেও জানাচ্ছে আইওএম।

মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দেওয়া তথ্যে জানা যায়, রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ৪০০’র বেশি রোহিঙ্গা গ্রামের মধ্যে অর্ধেকের বেশি জ্বালিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় বৌদ্ধ মগরা। রাখাইন থেকে মুসলিম বিতাড়নের উদ্দেশ্যে তারা এ কাজ করেছে। এখনও থেমে নেই জ্বালাও-পোড়াও।

আইওএম বলছে, এখন পর্যন্ত পালিয়ে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা সোয়া পাঁচ লাখ। তবে বেসরকারি হিসেবে এই সংখ্যা সাড়ে ছয় লাখ ছাড়িয়েছে। যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু। সহিংসতায় প্রাণ গেছে তিন হাজারের বেশি মানুষের। বেসরকারিভাবে এই সংখ্যা দশ হাজার পার করেছে মধ্য সেপ্টেম্বরেই। কোনো আন্তর্জাতিক প্রতিনিধিদল সেখানে কাজ করার সুযোগ না পাওয়ায় নতুন তথ্য জানা যাচ্ছে না।

ঘটনার শুরু গত ২৪ আগস্ট দিনগত রাতে রাখাইনে যখন পুলিশ ক্যাম্প ও একটি সেনা আবাসে বিচ্ছিন্ন সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটে। এর জেরে ‘অভিযানের’ নামে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী নিরস্ত্র রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশুদের ওপর নির্যাতন ও হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। ফলে লাখ লাখ মানুষ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য চলে আসছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬১৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৭
আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।