ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মুখোমুখি ইরাকি-কুর্দি সেনারা, নতুন সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্য!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
মুখোমুখি ইরাকি-কুর্দি সেনারা, নতুন সংঘাতে মধ্যপ্রাচ্য! কিরকুকে পেশমারগা সেনাদের প্রহরা ; ছবি- সংগৃহীত

ঢাকা: ইরাকের তেলসমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চলীয় কিরকুক নগরীর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বর্তমানে মুখোমুখি অবস্থানে ইরাকের সরকারি বাহিনী ও কুর্দি যোদ্ধারা।

যে কোনো মুহূর্তে কিরকুক ও এর চারপাশের তেলক্ষেত্রগুলোর দখল নিতে ইরাকি সেনা ও সরকার সমর্থিত মিলিশিয়ারা হামলা চালাতে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্বায়ত্বশাসিত কুর্দিস্তান আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষ (কেআরজি)

বর্তমানে কিরকুক শহর এবং সংলগ্ন তেলক্ষেত্রগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে কুর্দিসেনাদের দখলে।

কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকারের প্রধান মাসুদ বারজানির এক শীর্ষ সহযোগী হেমিন হারামি শুক্রবার (১৩ অক্টোবর) টুইটারে জানান, ইরাকি সেনাদের তৎপরতার মুখে ভারী অস্ত্রে সজ্জিত কুর্দিস্তানের পেশমারগা মিলিশিয়া বাহিনীর কয়েক হাজার সদস্য বর্তমানে কিরকুক ঘিরে অবস্থান নিয়েছে।

তাদের যে কোনো মূল্যে কিরকুক রক্ষার নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলে জানান হেমিন হারামি।

কমপক্ষে ৬ হাজার পেশমারগা যোদ্ধা বর্তমানে কিরকুকে অবস্থান নিয়েছে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম।

অপরদিকে কিরকুক নগরীর দক্ষিণ ও পশ্চিম দিকে ইরাকি সেনা ও সরকার সমর্থিত মিলিশিয়াদের তৎপরতা লক্ষ্য করার কথা আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

সরকারি সেনাদের পাশাপাশি কিরকুকের দক্ষিনে অবস্থিত শিয়া তুর্কমেন জনজাতি অধ্যুষিত পাবর্ত্য এলাকায় ইরান সমর্থিত ইরাকের আধাসামরিক মিলিশিয়া পপুলার মবিলাইজেশন ফোর্সের সেনারা অবস্থান নিয়ে সংঘর্ষের পাঁয়তারা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করছে কুর্দিরা।

কিছুদিন আগে জঙ্গি সংগঠন আইএস এর দখল থেকে কিরকুক মুক্ত করে কুর্দি পেশমারগা বাহিনী। সেই থেকে এই নগরী ও এর আশপাশের তেলক্ষেত্রগুলো নিয়ন্ত্রণে রেখেছে তারা। তবে কিরকুকের দখল নিয়ে ইরাকের কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে তাদের।

ইরাকের শাসক সাদ্দাম হোসেনের পতনের পর থেকে প্রায় স্বাধীন রাষ্ট্রের মতো স্বায়ত্বশাসন ভোগ করে আসছে ইরাকের কুর্দি অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা নিয়ে গঠিত কুর্দিস্তান আঞ্চলিক সরকার।

সম্প্রতি ইরাক থেকে আলাদা হয়ে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে আয়োজিত গণভোটে স্বাধীনতার স্বপক্ষে ভোট দেয় ইরাকি কুর্দিরা।

তবে কুর্দিস্তানের এই স্বাধীনতার আকাঙ্খাকে ভালোভাবে নিচ্ছে না বাগদাদের কেন্দ্রীয় সরকার। স্বাধীনতা ঘোষণা করলে কুর্দিস্তানে সামরিক ব্যবস্থারও হুঁশিয়ারি দিয়েছে তারা।

আঞ্চলিক দুই প্রভাবশালী দেশ ইরান ও তুরস্কও তাদের সীমান্তে কোনো স্বাধীন কুর্দি রাষ্ট্র ঘোষণার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছে। তবে স্বাধীন কুর্দিস্তানের প্রতি সরাসরি সমর্থন জানিয়েছে ইসরায়েল। এ পরিস্থিতিতে কিরকুক নিয়ে ইরাকি ও পেশমারগা সেনারা লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়লে যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে নতুন করে সংঘাতের সূচনা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন অনেকেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ১৩, ২০১৭
আরআই

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।