কেননা চলার সময় গতিপথ পরিবর্তন করতে এবং যে কোনো রাডারের চোখ ফাঁকি দিতে সক্ষম সর্বাধুনিক প্রযুক্তির এইসব রুশ ক্ষেপণাস্ত্র।
এই দাবি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের।
ভিডিও প্রেজেন্টেশন ব্যবহার করে দেওয়া ভাষণে মি. পুতিন রাশিয়ার সামরিক শক্তি, রাশিয়ার অর্থনীতি, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি, বৈদেশিক সম্পর্ক, কূটনীতি, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্কসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেন এবং এসব বিষয়ে তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেন।
দু’ঘন্টার বেশি সময় ধরে দেওয়া এ ভাষণে মি. পুতিন যুক্তরাষ্ট্র ও ন্যাটোসহ রাশিয়ার প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বশক্তিগুলোকে রাশিয়ার অজেয় সামরিক শক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দেন।
এ সময় প্রসঙ্গক্রমে তিনি রাশিয়ার সর্বাধুনিক ও অনন্য মারণাস্ত্র ভাণ্ডারের কথা তুলে ধরেন। স্মরণ করিয়ে দেন, সবচেয়ে বেশি সংখ্যক এবং সবচেয়ে আধুনিক পরমাণু অস্ত্রধারী দেশ যুক্তরাষ্ট্র বা অন্য কেউ নয়, বরং রাশিয়া।
পুতিন বলেন, রাশিয়ার উদ্ভাবিত মারণাস্ত্র ও ক্ষেপণাস্ত্রের কার্যকারিতা ও সর্বাত্মক ধ্বংস-ক্ষমতার জুরি মেলা ভার। রাশিয়ার এস-৩০০, এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্র বাহী সাবমেরিন, দূরপাল্লার বোমারু বিমান, আন্ত:মহাদেশীয় বুলাভা ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, মাঝারি পাল্লার ইস্কান্দার ও সারমাত ক্ষেপণাস্ত্র, ভূমি থেকে ভূমিতে, আকাশ থেকে ভূমি ও আকাশে নিক্ষেপণযোগ্য বিভিন্ন পাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র, এসইউ-৫৭ ফিফথ জেনারেশন স্টিলথ জঙ্গিবিমান, মিগ-৩৫ ও মিগ-৫৫ সহ বহুবিধ অস্ত্রের ক্ষমতা ও কার্যকারিতার সবিস্তার বর্ণনা তুলে ধরেন পুতিন।
পুতিন বলেন, আমাদের ক্রুজ মিসাইল যে কোনো ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে নস্যাৎ করে এবং সকল আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যর্থ করে,ও রাডারের চোখ ফাঁকি দিয়ে পৃথিবীর যে কোনো লক্ষ্যবস্তুতে নির্ভুলভাবে আঘাত হানতে সক্ষম। যুক্তরাষ্ট্র নিজের ভূখণ্ডে, ইউরোপে ও এশিয়ায় যে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা মোতায়েন করেছে (মিনিটম্যান), রাশিয়ার ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের গতিরোধ করার কোনো ক্ষমতা এসবের কোনোটির নেই।
রুশ পার্লামেন্টের যৌথ অধিবেশনে পুতিনের দেওয়া এই ভাষণ টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
দীর্ঘকাল চুপচাপ থাকার পর রাশিয়া আবার বিশ্বমঞ্চে আবির্ভূত হয়ে শক্তিশালী ও আপসহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে বলে উল্লেখ করেন পুতিন। এ প্রসঙ্গে তিনি মধ্যপ্রাচ্যে, বিশেষ করে সিরিয়ায় আইসিস, আল কায়েদা ও আল নুসরা ফ্রন্টের বিরুদ্ধে রাশিয়ার বিমানবাহিনীর ও রুশ যুদ্ধাস্ত্রের অভূতপূর্ব সফলতা ও কার্যকারিতার কথা তুলে ধরেন।
রাশিয়ার ভবিষ্যৎ অস্ত্র কর্মসূচির কথাও সবিস্তারে তুলে ধরেন পুতিন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রচলিত অস্ত্রের বাইরেও রাশিয়া হাইপারসোনিক অস্ত্র, রোবোটিক অস্ত্র, ইলেকট্রোম্যাগনেটিক অস্ত্রসহ আরও বহু অস্ত্র তৈরির কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩০ ঘণ্টা, মার্চ ০১, ২০১৮
জেএম