শনিবার (২৪ মার্চ) একটি টুইটার পোস্টের মাধ্যমে ৪৫ বছর বয়সী বেলত্রেমের মৃত্যুর খবরটি জানান ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জেরার কয়াম।
টুইটার পোস্টটিতে তিনি বলেন, তিনি (বেলত্রেমে) দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন।
শুক্রবার (২৩ মার্চ) ফ্রান্সের ত্রেবেসের একটি সুপারমার্কেটে সৃষ্টি হওয়া জিম্মি সংকট সামাল দিতে প্রধান অবদান রাখেন বেলত্রেমে। পুলিশ মার্কেট থেকে বেশ কয়েকজন জিম্মিকে বন্দুকধারী হামলাকারীর কাছ থেকে সরিয়ে নিলেও একজন নারী ভেতরে রয়ে যান। হামলাকারী তাকে জিম্মি অবস্থায় মানববর্ম হিসেবে ব্যবহার করছিলেন।
এমন পরিস্থিতি সামাল দিতে বেলত্রেম প্রবেশ করেন মার্কেটটিতে। ওই নারীকে ছেড়ে দেওয়ার বদলে তিনি নিজে জিম্মি হয়ে অবস্থান করতে চাইছিলেন। এ বিষয়ে হামলাকারীর সঙ্গে কথা বলতে থাকলে একপর্যায়ে সুযোগ বুঝে জিম্মিকে মুক্ত করার প্রচেষ্টা চালান। এসময় তাদের মধ্যে গুলিবিনিময় হয়।
গুলির শব্দে পুলিশ দ্রুত মার্কেটের ভেতর ছুটে গেলে দেখতে পায়, হামলাকারী গুলিতে নিহত হয়েছেন এবং বেলত্রেম গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন। তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপালে নেওয়া হয়। বেশ কয়েক ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে হাসপাতালেই তার দেহাবসান ঘটে।
একটি বিবৃতিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো এ পুলিশ অফিসারের সাহসিকতার ব্যাপক প্রশংসা করেন এবং তাকে একজন ‘হিরো’ বলে আখ্যা দেন। জিম্মি সংকট অবসানের পর থেকেই ফরাসি গণমাধ্যমগুলোতে বেলত্রেমের বীরত্বের খবর ছাপা হতে শুরু করে এবং প্রায় সবখানে তাকে একজন ‘জাতীয় বীর’ বলে উল্লেখ করা হয়।
ফরাসি গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে জানা যায়, হামলাকারীর নাম রিদওয়ান লাকদিম। ফরাসি নাগরিক হলেও তার জন্ম মরক্কোতে। ত্রেবেসের পার্শ্ববর্তী শহর কার্কাসোনিতে পরিবারের সঙ্গে বসবাস করতেন তিনি।
নিজেকে জঙ্গি সংগঠন ইসলামি স্টেটসের সদস্য বলে দাবি করেন ২৫ বছর বয়সী লাকদিম। সুপার র্মাকেটে অবস্থানরত ব্যক্তিদের জিম্মি করে ২০১৫ সালের ১৩ নভেম্বর প্যারিস হামলায় প্রধান অভিযুক্ত সালাহ আবদেসলামের মুক্তি দাবি করেন তিনি।
শুক্রবারের হামলায় হামলাকারী লাকদিম ও বেলত্রেমেসহ মোট নিহতের সংখ্যা পাঁচ। বাকিদের মধ্যে ছিলেন এক গাড়ি আরোহী, সুপার মার্কেটের এক কর্মী, এক কাস্টমার।
মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন ফ্রান্সের জিম্মি উদ্ধারকারী পুলিশ
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ২৪, ২০১৮
এনএইচটি