স্থানীয় সময় শনিবার (৭ এপ্রিল) রাতে সাও পাওলোর কাছে নিজের জন্মশহর সাও বার্নার্দো দো কাম্পোতে পুলিশের সামনে হাজির হন তিনি। একটি দুর্নীতি মামলায় গত বৃহস্পতিবার (৫ এপ্রিল) লুলার অনুপস্থিতিতে তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পর সাবেক প্রেসিডেন্ট ওই শহরে শ্রমিক ইউনিয়নের ভবনে নেতাকর্মীদের নিয়ে অবস্থান নেন।
সাজা ঘোষণাকালে শুক্রবার (৬ এপ্রিল) বিকেল ৫টার মধ্যে লুলাকে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হলেও তিনি তা অমান্য করেন। শেষতক শনিবার রাতে শ্রমিক ইউনিয়নের ভবন থেকে বেরিয়ে পুলিশের কাছে সমর্পণ করেন নিজেকে।
সংবাদমাধ্যম জানায়, পুলিশের গাড়িতে ওঠার পর লুলার সমর্থকরা তার বহর ঘিরে রাখে। তাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য হেলিকপ্টার এলে আতশবাজি ফাটিয়ে বিক্ষোভ করে তারা। এসময় বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে দাঙ্গা পুলিশ। পরে হেলিকপ্টারযোগে লুলাকে দক্ষিণাঞ্চলের শহর কিউরিতিবায় নিয়ে যাওয়া হয়। এখানেই ১২ বছরের সাজা ভোগ করবেন ব্রাজিলের সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
২০০৩ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ আমেরিকার সর্ববৃহৎ দেশটির প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করেন লুলা। তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় তেল কোম্পানি পেট্রোব্রাসকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার শর্তে ১ দশমিক ২ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঘুষ গ্রহণের অভিযোগে ২০১৬ সালে দুর্নীতি মামলাটি হয়।
গত বছর সে মামলায় লুলাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। সাবেক প্রেসিডেন্ট এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আপিল করেন। ৫ এপ্রিল সেই আপিল খারিজ করে দিয়ে ১২ বছরের কারাদণ্ডই বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে ৭২ বছর বয়সী লুলাকে কারাগারে পাঠাতে শুক্রবার বিকেল ৫টার মধ্যে তাকে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
যদিও প্রথম থেকেই এ মামলা ও রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন লুলা। তিনি আত্মসমর্পণের আগে বলেন, আগামী অক্টোবরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি যেন অংশ নিতে না পারেন সেজন্যই এ রায় দেওয়া হয়েছে।
তার দলের জরিপ মতে, ভোটের লড়াইয়ে লুলাই এখন পর্যন্ত এগিয়ে আছেন। সেজন্য তার ওয়ার্কার্স পার্টির পক্ষ থেকেও এই রায়কে গণতন্ত্র ও ব্রাজিলের জন্য দুঃখজনক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৪৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৮, ২০১৮
এইচএ/