ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০২২ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৮
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মুহূর্ত , ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ মহাকাশে উৎক্ষেপণের খবর উত্তাপ ছড়িয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও। গুরুত্বের সঙ্গে খবরটি প্রচার করে বিশ্বের গণমাধ্যমগুলো।

শুক্রবার (১১ মে) দিনগত রাত (বাংলাদেশ সময়) ২টা ১৪ মিনিটে স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম কৃত্রিম উপগ্রহ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ডানা মেললো মহাকাশে। যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডাস্থ উৎক্ষেপণ স্টেশন থেকে ৩৬ হাজার কিলোমিটার দূরের নিজস্ব কক্ষপথে ছুটে গেলো বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১।

স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্য উদ্ধৃত করে বলা হয়, “আজ আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশ ও বাঙালি জাতির জন্য একটি অত্যন্ত আনন্দ ও গৌরবের দিন। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে আজ আমরা মহাকাশে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করছি। ’

এএফফি’র বরাত স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে খবরটি প্রকাশ করেছে পার্শবর্তী দেশ ভারতের এনডিটিভি। তাদের খবরে স্যাটেলাইটটির বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য উদ্ধৃত করা হয়। পার্শবর্তী বিভিন্ন দেশও এ স্যাটেলাইটের সেবা পেতে পারে বলে সংবাদে উল্লেখ করা হয়।

সিএনএনএ’র খবরে বলা হয়, স্যাটেলাইটটি সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর গ্রাউন্ডে সিগন্যালও এসেছে। এটি বাংলাদেশ ছাড়াও ওই অঞ্চলে টিভি ইন্টার ও অন্যান্য টেলিকম সেবা দেবে।

এছাড়া ফক্স নিউজসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ এর খবর প্রকাশ করা হয়।

যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি মহাকাশ অনুসন্ধান ও প্রযুক্তি কোম্পানি ‘স্পেসএক্স’ দেশটির ফ্লোরিডার কেপ কেনাভেরাল লঞ্চ প্যাড থেকে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করে। স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণে ব্যবহার হয় একটি ফ্যালকন-৯ ব্লক ফাইভ রকেট।

এর আগে গত ৪ মে ফ্লোরিডার কেপ কেনেডি স্পেস সেন্টারে নতুন এ রকেটের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ সম্পন্ন হয়।

গত বছরের ১৬ ডিসেম্বর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের কথা থাকলেও ফ্লোরিডায় ‘ইরমা’ ঝড় এবং প্রতিকূল আবহাওয়াজনিত কারণে কয়েক দফা পিছিয়ে নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয় ১০ মে (বৃহস্পতিবার)। কিন্তু সেইদিনও উৎক্ষেপণের ৪২ সেকেন্ড আগে তা একদিনের জন্য স্থগিত করা হয়।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের পিছনে ব্যয় হচ্ছে ২ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। ১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা বিদেশি চুক্তি এবং বাকি ১ হাজার কোটি টাকা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

বিটিআরসি জানিয়েছে, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটটি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রায় ২০ দিন লাগবে। স্যাটেলাইটটি সম্পূর্ণ চালু হওয়ার পর এর নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের গ্রাউন্ড স্টেশনে হস্তান্তর করা হবে। স্যাটেলাইটের গ্রাউন্ড স্টেশন স্থাপন করা হয়েছে গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর ও রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায়।

এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) সেবা, স্যাটেলাইট টেলিভিশনের সম্প্রচার এবং ইন্টারনেট সুবিধাসহ ৪০টি সেবা পাওয়া যাবে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে শুধু বৈদেশিক মুদ্রাই সাশ্রয় হবে না, সেই সাথে অব্যবহৃত অংশ নেপাল, ভুটানের মতো দেশে ভাড়া দিয়ে প্রতি বছর আয় হবে প্রায় ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। স্যাটেলাইটের আয়ু হবে ১৫ বছর।

স্যাটেলাইটের গায়ে লেখা রয়েছে ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’।  

বাংলাদেশ সময়: ০৬১৫ ঘণ্টা, মে ১২, ২০১৮
ইএস/ওএইচ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।