ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানের নির্বাচনে ‘সেনা হস্তক্ষেপ’ দেখেনি ইইউ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫১৫ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৮
পাকিস্তানের নির্বাচনে ‘সেনা হস্তক্ষেপ’ দেখেনি ইইউ পাকিস্তানের একটি নির্বাচনী কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর প্রহরা। ছবি: সংগৃহীত

পাকিস্তানের জাতীয় নির্বাচনে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করেছে বলে সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মুসলিম লিগসহ (পিএমএল-এন) বেশ কয়েকটি দল অভিযোগ করলেও এমন কিছু ‘চোখে পড়েনি’ ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পর্যবেক্ষক দলের। যদিও নির্বাচনে ‘নির্বাচনের আগের অস্বচ্ছ চর্চা’র ব্যাপারে শঙ্কা জানিয়েছে তারা।

বুধবার (২৫ জুলাই) নির্বাচনের পর শুক্রবার (২৭ জুলাই) ইসলামাবাদে সংবাদ সম্মেলন করে পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন ইইউর নির্বাচন পর্যবেক্ষক মিশনের প্রধান মাইকেল গালার। যদিও তাদের সংবাদ সম্মেলন পর্যন্তও বেশ কিছু আসনের ফলাফল বাকি ছিল, তবে ফলাফলে ওই ক’টি আসন বড় কোনো প্রভাব ফেলতে পারবে না বলে জানিয়েছেন গালার।

নির্বাচনী ফলাফল নয়, প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণেই ইইউ সবসময় মনোযোগী থেকেছে উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, নির্বাচন তুলনামূলকভাবে স্বচ্ছই হয়েছে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপেরও কোনো ঘটনা চোখে পড়েনি।

নির্বাচনের শুরু থেকেই নওয়াজের দলসহ বিরোধীরা বলে আসছিল, ইমরান খান সেনাবাহিনীর পৃষ্ঠপোষকতা পাচ্ছেন। নিরাপত্তার দায়িত্বে নিয়োজিত সেনাবাহিনী ফলাফলেও গড়াপেটা করেছে, এগিয়ে দিয়েছে ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফকে (পিটিআই)। আগের জাতীয় নির্বাচনের পর নওয়াজ শরিফ সরকার গঠন করলেও পুরো মেয়াদে তার বিরুদ্ধে ইমরান যে রাজপথ উত্তপ্ত রেখেছিলেন, তার পেছনে সেনাবাহিনীই কলকাঠি নেড়েছিল অভিযোগ করে এই ফলাফলের দিকে আঙুল তোলা হচ্ছিল বেশি।

ইইউ পর্যবেক্ষক মিশনের প্রধান বলেন, নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া স্বচ্ছ এবং বেশ স্বাভাবিক ছিল। তবে ফল গণনায় কিছু সমস্যা হয়েছে, প্রক্রিয়াগুলো স্বাভাবিকভাবে অনুসৃত হয়নি বিধায় এমনটি হয়ে থাকতে পারে।

নির্বাচন কমিশন থেকে প্রাপ্ত সবশেষ ফলাফল অনুযায়ী, ২৭২টি সংসদীয় আসনের মধ্যে পিটিআই এগিয়ে আছে ১১৬টি আসন নিয়ে। অন্য দিকে নওয়াজের পিএমএল-এন ৬৫ আসনে এবং বেনজির ভুট্টোর পুত্র বিলাওয়াল ভুট্টোর নেতৃত্বাধীন দল পাকিস্তান পিপলস পার্টি (পিপিপি) এগিয়ে আছে ৪২টি আসন নিয়ে। সরকার গঠন করতে প্রয়োজন হয় ১৩৭টি আসনের। সে হিসেবে ইমরানের দল সংখ্যাগরিষ্ঠ হিসেবে সমমনা কোনো ছোট দলকে নিয়েই সরকার গঠন করতে পারবে।

এদিকে নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি ও অনিয়মের অভিযোগ তুললেও শেষ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকার করেছে পিএমএল-এন। তারা বলেছে, গণতন্ত্র সুদৃঢ়করণের স্বার্থে পরাজয় মেনে নিচ্ছে পিএমএল-এন। অনেক সন্দেহ সত্ত্বেও তারা বিরোধী দলের আসনে বসতে যাচ্ছে।

এর আগে ফলাফল ইমরানের দলের দিকে আসছিল বলে বৃহস্পতিবারই তা প্রত্যাখ্যান করে বসে পিএমএল-এন। গড়াপেটার অভিযোগ তোলে পিপিপিও। কিন্তু সকালেই পাকিস্তানজুড়ে বিজয়োল্লাসে মেতে ওঠে পিটিআই।

পিএমএল-এন ও পিপিপিসহ বিরোধীরা নিন্দা জানালেও বৃহস্পতিবার বিকেলে জাতির উদ্দেশে ভাষণে বিজয় ঘোষণা করেন ইমরান খান। সেখানে তিনি বলেন, পিটিআই জনগণের ম্যান্ডেটে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আমরা নেতৃত্বে যাচ্ছি। সেই সঙ্গে এটাও বলছি, আমি ক্ষমতায় গেলে সত্যিই ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ঠিক করবো। ভারত যদি এক পা এগোয়, আমরা দুই পা এগোবো।

১৯৯২ সালের বিশ্বকাপজয়ী এ ক্রিকেটার নির্বাচনে সেনাবাহিনীর সমর্থন পেয়েছেন বলে অভিযোগ ছড়ালেও তিনি বলেন, পাকিস্তানের এ যাবতকালের সবচেয়ে স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন হয়েছে এবার। তিনি তার ভাষণে ‘নয়া পাকিস্তান’ গড়ারও ঘোষণা দেন।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৮ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।