ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ইরান প্রশ্নে মার্কিন ‘আবদারে’ সাড়া নেই জার্মানি-জাপানের

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২, ২০১৯
ইরান প্রশ্নে মার্কিন ‘আবদারে’ সাড়া নেই জার্মানি-জাপানের ইরান ইস্যুতে পারস্য উপসাগরে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি, ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: গত সপ্তাহে ইরানের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের অংশ হিসেবে পারস্য উপসাগরে সমুদ্রপথ সুরক্ষা মিশনে অংশ নেওয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্র সংশ্লিষ্ট কয়েকটি দেশকে এগিয়ে আসার যে আহ্বান জানিয়েছিল, সেটাতে যোগ দিতে রাজি নয় জার্মানি এবং জাপান। তারা আহ্বানটিতে সাড়া না দিয়ে একরকম প্রত্যাখান করেছে।

এ নিয়ে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে সাগরে কোনো মিশনে অংশ নেবে না জার্মানি। কেননা, ইরানের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের চলমান কৌশল, তেহরানের ওপর কঠিন চাপ সৃষ্টি করা, যেটি জার্মানি চায় না।

আর বার্লিন মনে করে এটা ভুল কৌশল।

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পারস্য উপসাগরে কোনো মিশনে অংশ নেবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে জাপানও। তবে ওয়াশিংটন এবং তেহরান উত্তেজনায় এগিয়ে না এলেও নিজেদের স্বার্থ রক্ষায় এককভাবে ইরানের বিপক্ষে নামতে পারে টোকিও।  

জাপানের একটি সংবাদমাধ্যম বলছে, জাপান নিজেদের জাহাজের নিরাপত্তা রক্ষায় এই অঞ্চলে এককভাবে যুদ্ধজাহাজ পাঠাতে পারে।

জাপানের মন্ত্রিপরিষদের প্রধান সচিব ইয়োশিহিদে সুগা বিষয়টির ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, আমরা নিবিড়ভাবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ এক হয়ে কেমন কাজ চালাচ্ছে, আমরা তার তথ্য সংগ্রহ করা চালিয়ে যাচ্ছি।

পারস্য উপসাগর তথা হরমুজ প্রণালীতে নিজেদের তেলবাহী জাহাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ মিশনে নামতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। এজন্য জার্মানিসহ অস্ট্রেলিয়া, ফ্রান্স, বেলজিয়াম, জাপান, নরওয়ে, দক্ষিণ কোরিয়া যুক্তরাজ্য এবং সংশ্লিষ্ট আরও কয়েকটি দেশকে মিশনে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল ওয়াশিংটন।

দেশটি চায় অন্যান্য দেশের সঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোও এ মিশনে এগিয়ে আসুক। কিন্তু একসময় মার্কিন ‘সহযোগিতা’ নেওয়া দেশ জার্মানির এ আহ্বান ফিরিয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্দ হয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

বার্লিনের মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল এ সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, জার্মানির কিছু দায়িত্ব আছে। জার্মানি ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তি৷ এমন একটি সফলতার পেছনে বৈশ্বিকভাবে কিছু দায়িত্ব থাকা উচিত।

এসময় মার্কিন রাষ্ট্রদূত দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জার্মানিতে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের ৩৪ হাজার সৈন্যের পেছনে অর্থ ব্যয়ের প্রসঙ্গ টেনে বার্লিনের সিদ্ধান্তটির সমালোচনা করেন।

এদিকে, গত সপ্তাহে হরমুজ প্রণালীতে ব্রিটিশ একটি তেলবাহী জাহাজ আটক করে ফেলে ইরানের সেনাবাহিনীর অভিজাত ও প্রভাবশালী শাখা রেভ্যুলুশনারি গার্ডস কর্পস (আইআরজিসি)। এরপর এই অঞ্চলে জাহাজ চলাচলের বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে একটি নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার পরিকল্পনা করে যুক্তরাজ্য। যে কারণে যুক্তরাজ্যও চায় ইউরোপীয় দেশগুলোকে সঙ্গে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিশনে নেমে সমুদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে। লন্ডন এ মিশনে অংশ নিতে ইতোমধ্যেই ঘোষণাও দিয়ে বসেছে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের সাগরে নিরাপত্তা রক্ষার মিশনে অংশ নেওয়ার আহ্বানটি প্রথমে ‘প্রত্যাখান’ করেছে জার্মানি। এরপর প্রত্যাখান করে এশিয়া দেশ জাপান। তবে নরওয়ে এবং বেলজিয়াম মিশনে অংশ নেবে কি-না, সে বিষয়ে এখনও দ্বিধাগ্রস্ত। এছাড়া বাকি দেশগুলোর প্রতিক্রিয়া এ পর্যন্ত পাওয়া যায়নি।

২০১৫ সালের জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন (জেসিপিওএ) চুক্তি থেকে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রকে সরিয়ে নিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এরপর ইরানের ওপর কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ শুরু করেন তিনি। সে থেকে ওয়াশিংটন এবং তেহরানের মধ্যে চরম উত্তেজনা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০১৯
টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।