ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা বাতিলের ঘোষণা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪২ ঘণ্টা, আগস্ট ৫, ২০১৯
জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ সুবিধা বাতিলের ঘোষণা

ঢাকা: ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ মর্যাদা বাতিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।
 

সোমবার (০৫ আগস্ট) এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম।  

সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, সোমবার ভারতের সংসদে দেশটির সংবিধান অনুযায়ী জম্মু ও কাশ্মীরকে দেওয়া বিশেষ সুবিধা বাতিল করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

জম্মু ও কাশ্মীরকে ঘিরে চলমান উত্তেজনা পরিস্থিতির মধ্যেই এমন ঘোষণা দিলেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। যার মাধ্যমে রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর। ফলে এখন থেকে ভারতের কেন্দ্রীয় শাসনের আওতায় থাকবে জম্মু ও কাশ্মীর।

অমিত শাহ বলেন, জম্মু ও কাশ্মীরকে বিভক্ত করে দু’টি আলাদা ইউনিয়ন করা হবে। এতে করে এটি আর আলাদা রাজ্য থাকবে না। কেন্দ্রীয় ভারতেরই অংশ হবে।

এর আগে সোমবার সকালেই কাশ্মীর ইস্যুতে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা।

দেশটির সরকার পক্ষের এমন ঘোষণার পর থেকেই এর নিন্দা জানাতে শুরু করেছেন বিরোধী দলের সদস্যসহ কাশ্মীরের রাজনৈতিক নেতারাও।

এক টুইটার বার্তায় গৃহবন্দি থাকা কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি বলেন, আজকের দিন ভারতীয় গণতন্ত্রের ইতিহাসে একটি ‘কালো দিন’ হিসেবে চিহ্নিত হলো। ভারত সরকারের নেওয়া একতরফা এ সিদ্ধান্ত অবৈধ। এটি দেশের সংবিধান পরিপন্থী। সরকারের এমন সিদ্ধান্তে বিপত্তিমূলত পরিণতি হবে এ উপমহাদেশের।

তিনি আরও বলেন, সরকার কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল তা খুবই স্পষ্ট। তারা এ রাজ্যের বাসিন্দারের ভয় দেখিয়ে রাজ্যটি দখল নিতে চায়। অবশেষে কাশ্মীরকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় ব্যর্থ হলো ভারত।

টুইটার বার্তায় কংগ্রেস নেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, এমন সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধানকে হত্যা করলো বিজেপি সরকার।

তবে বিজেপি সরকারের এমন ঘোষণায় তাদের প্রতি অভিনন্দন জানিয়ে টুইটারে পোস্ট করছেন বিজেপির অনেক নেতাই।  

দেশটির সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা সুষমা স্বরাজ বলেন, এটি মোদী সরকারের নেওয়া একটি সাহসী ও ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত।

বিজেপি নেতা অরুণ জেটলি বলেন, মোদী সরকারের নেওয়া এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে দেশের ঐতিহাসিক একটি ভুল শোধরানো হল।

সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, কাশ্মীরে এক ধরনের স্বায়ত্তশাসন রয়েছে। তাদের নিজস্ব সংবিধান আছে, পতাকা আছে, আছে আলাদা জাতীয় সংগীতও।

এদিকে রোববার (৪ আগস্ট) রাত থেকেই কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি ও ওমর আবদুল্লাহ এবং আরও এক নেতা সাজাদ লোনকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। একইসঙ্গে কাশ্মীরের অনেক এলাকাতে ইন্টারনেট ও ল্যান্ডফোন পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এছাড়া সেখানে কোনো ধরনের র‌্যালি এবং সভা-সমাবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

এর আগে সন্ত্রাসী হামলার হুমকির জেরে কাশ্মীরে সতর্কতা জারি করা হয়। একই সঙ্গে সেখানকার অমরনাথ মন্দিরে তীর্থযাত্রায় আসা হাজারো হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষসহ সাধারণ পর্যটকদের দ্রুত কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়। এরপর থেকেই কাশ্মীর ছাড়তে শুরু করেন তীর্থযাত্রী ও পর্যটকরা।

পাকিস্তান সমর্থিত জঙ্গিরাই বার্ষিক এ তীর্থযাত্রায় হামলার পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। তবে ভারতের এ দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে পাকিস্তান।

অন্যদিকে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের কেরান গ্রামের সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বর্ডার অ্যাকশন টিমের (বিএটি) সদস্যদের অনুপ্রবেশের চেষ্টা ঠেকিয়ে দিয়েছে বলে দাবি করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। এ ঘটনায় পাঁচ অনুপ্রবেশকারী নিহত হয়েছেন।

যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় কাশ্মীরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। একইসঙ্গে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত সৈন্য।

কাশ্মীরকে দেওয়া এ বিশেষ মর্যাদা বাতিল ছিল মোদী-অমিত শাহ জুটির অন্যতম নির্বাচনী অঙ্গীকার। টানা দ্বিতীয়বারের মতো ক্ষমতায় এসে তাই নিজেদের প্রতিশ্রুতি রক্ষার দিকেই এগোলো মোদী সরকার।

আরও পড়ুন>>>কী হবে কাশ্মীরে- হামলা নাকি বিভক্তি?

                      কাশ্মীরের সাবেক দুই মুখ্যমন্ত্রী গৃহবন্দি

                      কাশ্মীরে হামলার হুমকি, সতর্কতা জারি

বাংলাদেশ সময়: ১২৪২ ঘণ্টা, আগস্ট, ২০১৯
এসএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।