ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বাড়ছে উপসর্গহীন করোনা রোগী

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২০
যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারে বাড়ছে উপসর্গহীন করোনা রোগী যুক্তরাষ্ট্রের কারাগারগুলোতে বাড়ছে উপসর্গহীন করোনা রোগী। ছবি: সংগৃহীত

যুক্তরাষ্ট্রের ওহিও অঙ্গরাজ্যের কারাগারগুলোতে যখন করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে শুরু করলো তখন এগুলোর দায়িত্বে থাকা পরিচালকের মনে হচ্ছিল, তিনি এক ভূতের সঙ্গে লড়াই করছেন। কোত্থেকে সংক্রমণ শুরু হলো তা সবসময় খুঁজে বের করা সম্ভব ছিল না। তাই সব কয়েদিরই করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা শুরু হলো।

ম্যারিয়ন কারেকশনাল ইনস্টিটিউট থেকে তারা পরীক্ষা শুরু করে। সেখানে কয়েদি ছিল আড়াই হাজার, যাদের অনেকেই বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত।

২ হাজার ৩শ’ জনের করোনা ভাইরাস পরীক্ষার পর দেখা গেলো ২ হাজার ২৮ জনই পজিটিভ বা আক্রান্ত। প্রায় ৯৫ শতাংশের শরীরেই তখনো কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।

আরকানসাস, নর্থ ক্যারোলিনা, ওহিও এবং ভার্জিনিয়া অঙ্গরাজ্যের কারাগারগুলোতে পরীক্ষা করে দেখা যায় ৩ হাজার ২৭৭ জন করোনা ভাইরাস পজিটিভ। কিন্তু অবাক করা বিষয় হলো, তাদের মধ্যে ৯৬ শতাংশের শরীরেই কোনো উপসর্গ দেখা যায়নি।

কারাগার কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে রোববার (২৬ এপ্রিল) রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

এতে বোঝা যায়, উপসর্গহীন রোগী, যারা আক্রান্ত হলেও শরীরে উপসর্গ দেখা দেয় না, তারা ভাইরাসটি বহন করে অন্যদের মধ্যে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। মার্কিন অঙ্গরাজ্যের কারাগারগুলোতে যে ১৩ লাখ কয়েদি রয়েছে, শুধু তাদের মধ্যেই এভাবে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ছে তা নয়। বিশ্বজুড়েই উপসর্গহীন রোগীরা ভাইরাসটি ছড়াতে অন্যতম ভূমিকা রাখছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

ফলে সংক্রমণের উপসর্গ রয়েছে, শুধু এমন ব্যক্তিদেরই করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করা উচিত হচ্ছে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কেননা উপসর্গহীন রোগীরা অবাধে চলাফেরার মাধ্যমে ভাইরাসটি ছড়িয়ে দিতে পারে। তবে সংক্রমণের প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত উপসর্গহীন রোগীদের অনেকের শরীরেই পরবর্তীকালে উপসর্গ দেখা দেয়।

প্রাদুর্ভাবের কেন্দ্র নিউইয়র্কের কারাগারগুলোর ৫১ হাজার কয়েদির মধ্যে শনাক্ত কোভিড-১৯ রোগী ২৬৯ জন। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত শুধু উপসর্গ রয়েছে এমন কয়েদিদেরই করোনা ভাইরাস পরীক্ষা করছেন। তাই প্রকৃত সংখ্যা আরও অনেক বেশি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

২০১৭ সালের হিসাব অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে কারাগারে বন্দি রয়েছেন ২৩ লাখ মানুষ। তাদের অর্ধেকই রয়েছেন অঙ্গরাজ্যগুলোর কারাগারে। বাকিরা কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় কারাগারে রয়েছেন।

ইতোমধ্যে অধিকাংশ কারাগারই গণহারে পরীক্ষা কার্যক্রম শুরু করেছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তারা উপসর্গ দেখা দিয়েছে এমন কয়েদিদেরই পরীক্ষা করছে। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা প্রকৃত আক্রান্তের চেয়ে অনেক কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

মানবাধিকার কর্মী এবং আইনজীবীদের অনেকেই বলছেন, এ পরিস্থিতিতে অসহিংস বয়স্ক এবং রোগাক্রান্ত কয়েদিদের মুক্তি দেওয়া উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।