ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মার্কিন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা খোলা রাখার নির্দেশ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২০
মার্কিন মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানা খোলা রাখার নির্দেশ ছবি: সংগৃহীত

করোনা ভাইরাস মহামারির মধ্যে ঝুঁকি সত্ত্বেও যুক্তরাষ্ট্রের মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলোর কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

বুধবার (২৯ এপ্রিল) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসি, রয়টার্স এ তথ্য জানায়।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত মাংস ও খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণের সঙ্গে জড়িত প্রায় ছয় হাজার পাঁচশ’ জন কর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন এবং মারা গেছেন ২০ জন।

এতে বিশ্বজুড়ে খাদ্য সরবরাহ ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে হুঁশিয়ারি জানায় জাতিসংঘ।

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরুর পর ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের ২২টি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে দেশটিতে পোল্ট্রি, শূকর ও গরুর মাংস উৎপাদনের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠানগুলোর কসাইখানা, যেমন- স্মিথফিল্ড ফুডস, টাইসন ফুডস, কারগিল এবং জেবিএস ইউএসএ।

খাদ্যের ঘাটতি এবং সরবারাহে বিঘ্ন ঘটার আশঙ্কায় মঙ্গলবার (২৮ এপ্রিল) ১৯৫০ সালের ‘ডিফেন্স প্রোডাকশন অ্যাক্ট’ অনুযায়ী মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানাগুলো খোলা রাখার জন্য একটি নির্বাহী আদেশ জারি করেন ট্রাম্প।

এর আগে রোববার (২৬ এপ্রিল) টাইসন ফুডসের চেয়ারম্যান জন এইচ. টাইসন বলেন, খাদ্যের ‘সাপ্লাই চেইন’ ভেঙে যাচ্ছে এবং এতে মাংসের যোগানে ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

এদিকে, কাজ করতে গিয়ে কোনো কর্মী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে সরকার সাহায্য করবে, এমন কথাও বলা হয়েছে ওই নির্বাহী আদেশে।

মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রকাশিত ওই আদেশে বলা হয়, গরুর মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণের বড় একটি কারখানা বন্ধ থাকলে দৈনিক একক ব্যক্তিকে মাংস পরিবেশনের পরিমাণ এক কোটি পর্যন্ত কমতে পারে।

এ ধরনের কারাখানা বন্ধ হলে দেশে মাংস এবং পোল্ট্রি সরবরাহ কার্যক্রম ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে জাতীয় জরুরি অবস্থায় তা খোলা রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

মার্কিন প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, যেসব কর্মী এ কারখানাগুলোতে কাজ করবেন, তাদের ঝুঁকি কমানোর নির্দেশনা দেবে সরকার। বয়স্ক কর্মী, যারা বেশি ঝুঁকিতে রয়েছেন বা অন্য স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের বাড়িতে অবস্থান করতে বলা হবে।

তবে এতে সন্তুষ্ট হয়নি শ্রমিক ইউনিয়নগুলো। কয়েকজন কৃষক জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে অনেক দেরি হয়ে গেছে। যেসব শূকর বাজারে পাঠানো যায়নি, তাদের চেতনানাশক দিয়ে মেরে ফেলা হয়েছে।

ইউনাইটেড ফুড অ্যান্ড কমার্শিয়াল ওয়ার্কার্স (ইউএফসিডব্লিউ) ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন এক বিবৃতিতে বলে, ‘খাদ্য সরবরাহ নিয়ে আমারও উদ্বিগ্ন কিন্তু আজ যে নির্বাহী আদেশ মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানার কার্যক্রম চালু রাখতে বাধ্য করছে সেটিতে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের সুরক্ষা অগ্রাধিকার দিতে হবে। ’

কর্মীদের দৈনিক করোনা ভাইরাস পরীক্ষা এবং কসাইখানার কর্মীদের সর্বোচ্চ সুরক্ষার সরঞ্জাম প্রশাসনকে দিতে হবে বলে দাবি জানায় যুক্তরাষ্ট্রের বৃহত্তম মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ শ্রমিক ইউনিয়ম ইউএফসিডব্লিউ।

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের মাংস প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় ২ লাখ ৩ হাজার শূকর জবাই করে, যা স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৪৩ শতাংশ কম। এদিন জবাই করা হয় ৭৬ হাজার গরু, যা আগের চেয়ে ৩৮ শতাংশ কম। মার্কিন কৃষি মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়।

বাংলাদেশ সময়: ১২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৯, ২০২০
এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।