ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

নিখোঁজ রোহিঙ্গারা লুকিয়েছিলেন জঙ্গলে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
নিখোঁজ রোহিঙ্গারা লুকিয়েছিলেন জঙ্গলে পুরনো ছবি

মালয়েশিয়ার উত্তরাঞ্চলের উপকূলে নৌকা ডুবে অন্তত ২৪ রোহিঙ্গা মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কিন্তু তারা জীবিত আছেন।

সাঁতরে উপকূলের জঙ্গলে তারা লুকিয়েছিলেন। সেখান থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়েছে।

মালয়েশিয়া কোস্টগার্ডের বরাত দিয়ে রোববার রয়টার্সের খবরে বলা হয়, শনিবার গভীর রাতে একটি নৌকা ল্যাংকাওয়ি দ্বীপের পশ্চিম উপকূলে যাওয়ার সময় ২৫ জন লোক সাগরে ঝাঁপ দিয়ে সাঁতরে উপকূলে ওঠার চেষ্টা করে। তাদের মধ্যে একজন ডাঙায় উঠতে পারলেও ২৪ জনের কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি।  

তারা পানিতে ডুবে মারা গেছেন বলে আশঙ্কা করা হয়।  

সোমবার মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ড নিশ্চিত করেছে, রোহিঙ্গারা জীবিত আছেন এবং তাদেরকে উদ্ধার করা হয়েছে। সংখ্যায় তারা ২৬ জন।  

মালয়েশিয়ার কোস্টগার্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, নৌকাডুবির পর সাঁতরে লাংকাউই দ্বীপের তীরে পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন তারা। এ সময় তাদের সবার মৃত্যু হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হলেও আশপাশের দ্বীপে ঝোপঝাড়ের মধ্যে তারা লুকিয়ে ছিলেন।  

ডুবে যাওয়া নৌকাটি থেকে সাঁতরে উপকূলে পৌঁছাতে পারা এক রোহিঙ্গা যুবককে আটক করে মালয়েশিয়ার কোস্ট গার্ড। ২৭ বছর বয়সী এই যুবকের নাম নুর হোসেন।

ঘটনা জানার পর অনুসন্ধান ও উদ্ধার অভিযানে নামে কোস্ট গার্ড। পরদিনই বাকি রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করেন তারা।

মালয়েশিয়ার মেরিটাইম এনফোর্সমেন্ট এজেন্সির ডিরেক্টর জেনারেল মোহাম্মদ জুবিল মাত সোম বলেন, রোহিঙ্গারা দ্বীপের ভেতর ঝোপঝাড়ের মধ্যে লুকিয়ে ছিলেন। কর্তৃপক্ষ এসব রোহিঙ্গাকে আটক করেছে। এদের মধ্য থেকে দুইজন রোহিঙ্গা অভিবাসীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ধারনা করা হচ্ছে তারাই এই মানবপাচারের সঙ্গে জড়িত।

রোহিঙ্গা শরণার্থী বহনকারী নৌকাটি কেন ডুবে গিয়েছিল বা সেটি উদ্ধার করা গেছে কিনা, সে সম্পর্কে কিছু জানায়নি কর্তৃপক্ষ। এই রোহিঙ্গা শরণার্থীরা কোথা থেকে মালয়েশিয়ার উপকূল পর্যন্ত গিয়েছিলেন, সেটি এখনো জানানো হয়নি।

বাংলাদেশের কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে থাকা রোহিঙ্গাদের অনেকেই অবৈধভাবে, ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্রপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছেন - এমন খবর এর আগেও পাওয়া গেছে।

ফেব্রুয়ারি মাসে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি ট্রলার ডুবে যায়, যে ট্রলারে থাকা অনেকেই কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে দালালের মাধ্যমে অবৈধভাবে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন বলে কর্তৃপক্ষ সে সময় জানিয়েছিল।

এরপর এপ্রিল মাসে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা বোঝাই আরেকটি ট্রলার উদ্ধার হয়, যে নৌকাটি প্রায় দুই মাস সমুদ্রে ভেসে ছিল বলে খবর প্রকাশিত হয়েছিল। ওই নৌকায় থাকা রোহিঙ্গারাও মালয়েশিয়ায় যাওয়ার চেষ্টা করছিল বলে বলা হয়েছিল।

এপ্রিলের শুরুতে দুই শো'রও বেশি মানুষ নিয়ে মালয়েশিয়ার উপকূল থেকে রোহিঙ্গা বোঝাই একটি নৌকা আটক করার কথা জানিয়েছিল দেশটির কোস্টগার্ড।

দীর্ঘদিন ধরে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়ে এলেও সম্প্রতি করোনা পরিস্থিতির কারণে রোহিঙ্গাদের কয়েকটি নৌকা সাগরে ফেরত পাঠিয়েছে মালয়েশিয়া।  

মালেশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মহিউদ্দিন ইয়াসিন গত মাসে জানান, মহামারির কারণে অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ অবস্থায় নতুন করে আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেওয়া হবে না।

সূত্র: সিএনএ, বিবিসি।

বাংলাদেশ সময়: ১৯১০ ঘণ্টা, জুলাই ২৭, ২০২০
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।