তুরস্কের প্রখ্যাত আলেম ও মুহাদ্দিস মুহাম্মাদ আমিন সিরাজের জানাজা সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) জানাজায় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানসহ তুরস্কের মন্ত্রী, সংসদ সদস্য ও গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে শায়খ সিরাজের সঙ্গে দীর্ঘ দিনের পরিচিতির কথা জানান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান। এছাড়াও শায়খের কাছে বিভিন্ন সময় যাতায়াত করতেন এবং তার বক্তব্য ও নির্দেশনা শুনতেন বলেও জানান তিনি।
জানাজার পর এরদোয়ান নিজেও শায়খ সিরাজের খাটিয়া বহন করেন এবং ইস্তাম্বুলের আল ফাতেহ মসজিদ সংলগ্ন কবরে দাফন কাজে অংশ নেন।
গত ১৯ ফেব্রুয়ারি (শুক্রবার) তুর্কি আলেম শায়খ আমিন সিরাজ ইন্তেকাল করেন। তিনি ছিলেন বিংশ শতাব্দীর ধর্মহীন আধুনিক তুরস্কের পুনসংস্কাররত নিভৃতচারী মহান আলেম মনীষীদের অন্যতম ব্যক্তিবর্গ।
শায়খ আমিন সিরাজ নিজ ঘরে মাত্র ছয় বছর বয়সে পবিত্র কোরআন হেফজ করেন। তখন তুরস্কে আরবি ভাষা ও কোরআন পাঠ নিষিদ্ধ ছিল। সন্তানদের আরবি ভাষা ও পবিত্র কোরআন শেখানোর অপরাধে শায়খ সিরাজের বাবা হাফেজ মুস্তফা আফেন্দিকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
১৯৪০ সালে শায়খ সিরাজ শিক্ষা গ্রহণে ইস্তাম্বুল নগরীতে যান। বিখ্যাত আল ফাতেহ মসজিদের ইমাম ওমর আফেন্দির তত্ত্বাবধানে অনেক দিন শিক্ষা লাভ করেন। এরপর শায়খ সুলায়মান আফেন্দির কাছে সহিহ বুখারি গ্রন্থ পাঠ করেন এবং হাদিসের সর্বপ্রথম ‘ইজাজত’ তথা অনুমোদন লাভ করেন।
১৯৫০ সালে শায়খ সিরাজ অনেক বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে মিসরের বিশ্ববিখ্যাত আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান। তৎকালীন সময়ের বিখ্যাত আলেম শায়খ জাহেদ আল কাওসারি ও মুসতফা সাবরি আফেন্দিসহ মিসর ও শাম অঞ্চলের শ্রেষ্ঠ ইসলামী ব্যক্তিত্বদের কাছে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পাঠ নেন। ১৯৬০ সালে শায়খ আমিন সিরাজ তুরস্কে ফিরে ইসলামী শিক্ষা প্রসারে আত্মনিয়োগ করেন।
আধুনিক তুরস্কের ধর্মহীনতার বেড়াজালে যে নিভৃতচারী আলেমরা ইসলাম প্রসারে ব্যাপক ভূমিকা পালন করেন, তাদের অন্যতম ছিলেন শায়খ আমিন সিরাজ। লেখালেখি, সম্পাদনা, অনুবাদ, পাঠদান, দাওয়াতসহ মুসলিম সমাজ পুনর্গঠনে সর্বত্র নিজেকে সম্পৃক্ত রাখেন তুরস্কের এ মহান মনীষী। সাইয়েদ কুতুব রচিত তাফসির গ্রন্থ ‘ফি জিলালিল কোরআন’ শায়খ সিরাজ তুর্কি ভাষায় অনুবাদ করেন।
সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি
বাংলাদেশ সময়: ১৭০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১
এসআরএস