ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

বাইডেনের ‘ক্ষমায়’ জীবন বাঁচলো ২ টার্কি মুরগির

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
বাইডেনের ‘ক্ষমায়’ জীবন বাঁচলো ২ টার্কি মুরগির

ঢাকা: আসন্ন ‘থ্যাংকসগিভিং ডে’তে হয়তো কোনো মার্কিন পরিবারের ভোজের উপকরণ হতে হতো ‘পিনাট বাটার’ ও ‘জেলি’ নামের দুই টার্কি মুরগিকে। হয়তো সেদিন কারও খাবার টেবিলে রোস্ট হিসেবে পরিবেশন করা হতো তাদের।

সম্প্রতি অনেক পথ পেরিয়ে হোয়াইট হাউসে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের হাত পর্যন্তও পৌঁছে গিয়েছিল মুরগিগুলো। তবে শেষ পর্যন্ত রসুইঘর পর্যন্ত যেতে হচ্ছে না ‘পিনাট বাটার’ ও ‘জেলিকে’।  

থ্যাকসগিভিং ডে সামনে রেখে শুক্রবার (১৯ নভেম্বর) মুরগিগুলোর জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেছেন বাইডেন। আর এর মধ্য দিয়ে যেন দ্বিতীয় জীবন খুঁজে পেল পিনাট বাটার আর জেলি। খবর সিএনএনের।  

প্রতিবছর নভেম্বর মাসের চতুর্থ বৃহস্পতিবার থ্যাংকসগিভিং ডে পালন করে যুক্তরাষ্ট্র। সে অনুযায়ী, আগামী বৃহস্পতিবার দিবসটি পালন করা হবে। এদিন বাড়িতে বাড়িতে টার্কি মুরগির রোস্ট খাওয়ার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে।

হোয়াইট হাউসে প্রতিবছর থ্যাংকসগিভিং ডে সামনে রেখে প্রেসিডেন্টের টার্কি মুরগিকে ক্ষমা করার রীতি পালন করা হয়। এরই অংশ হিসেবে ইন্ডিয়ানার খামারে বড় হয়ে ওঠা টার্কি মুরগি পিনাট বাটার ও জেলিকে ওয়াশিংটন ডিসিতে পাঠানো হয় গত সপ্তাহে। ওয়াশিংটনে লুক্সে উইলার্ড হোটেলে রাখা হয়েছিল এগুলোকে। হোয়াইট হাউসে পাঠানোর আগে বৃহস্পতিবার মুরগিগুলো নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিনাট বাটার ও জেলিকে প্রেসিডেন্টের হাতে উপহার হিসেবে তুলে দেওয়া হয়। সে অনুষ্ঠানেই তাদের জন্য ক্ষমা ঘোষণা করেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। এর মধ্য দিয়ে এ ছুটির মৌসুমে রসুইঘরের আগুনে ঝলসানো থেকে রেহাই পেল পিনাট বাটার-জেলি।

মুরগিগুলোকে পারডু বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যানিমেল সায়েন্সেস এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ ফার্মে পাঠানো হয়েছে। এখন থেকে সেখানেই থাকবে এগুলো।

অনুষ্ঠানে মজাচ্ছলে প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ‘মেজাজ কেমন, দেখতে কেমন—এগুলোর ভিত্তিতে পিনাট বাটার ও জেলিকে বেছে নেওয়া হয়েছে। আমার তো সন্দেহ হচ্ছে তারা টিকা নিয়েছে কি না, সেটাও হয়তো যাচাই করা হয়েছে। তবে হ্যাঁ, এখন আর এ টার্কি মুরগিগুলোকে আগুনে ঝলসানো হবে না। ’

বাইডেন মজা করে আরও বলেন, ‘পিনাট বাটার ও জেলি এ দুটো নাম তো আর মেনে নেওয়া যাচ্ছে না। আপনাদের কাছে স্বীকার না করে পারছি না, যদিও আমার স্ত্রী চায় না আমি স্বীকার করি, তবু বলছি, মধ্যাহ্নভোজে এ খাবারগুলো খেতে আমি পছন্দ করি। ’

১৯৪৭ সাল থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্টের বাড়িতে টার্কি মুরগি সরবরাহ করে আসছে দ্য ন্যাশনাল টার্কি ফেডারেশন। অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে উপহার হিসেবে টার্কি মুরগি গ্রহণের এ রীতি চালু হয় সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রুম্যানের শাসনকাল থেকে। ট্রুম্যানই টার্কি ফাউন্ডেশনের কাছ থেকে প্রথম টার্কি মুরগি গ্রহণ করেছিলেন। তবে তিনি কখনোই এ মুরগি ছেড়ে দেননি। বরং উপহার হিসেবে পাওয়া সে মুরগি দিয়ে ভোজন সারতেন প্রেসিডেন্ট ও তার পরিবারের সদস্যরা।

লোকমুখে প্রচলিত আছে, প্রেসিডেন্টের ইতিহাসে আব্রাহাম লিংকন প্রশাসনই প্রথম উপহার হিসেবে পাওয়া টার্কি মুরগি ছেড়ে দিয়েছিল। থ্যাংকসগিভিং ডেতে ওই মুরগি দিয়ে প্রেসিডেন্ট পরিবারের নৈশভোজ করার কথা ছিল। লিংকনের ছোট ছেলে তার বাবাকে পোষা টার্কি মুরগি ছেড়ে দিতে অনুরোধ জানানোর পর সে মুরগিকে আর ভোজের উপকরণ করা হয়নি। তবে এটি একেবারেই লোকমুখে প্রচলিত কথা, এর কোনো দালিলিক প্রমাণ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০২১
এনটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।