ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

পাকিস্তানি ব্লগার হত্যার ষড়যন্ত্র: কাঠগড়ায় ব্রিটিশ ‘হিটম্যান’ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০২২
পাকিস্তানি ব্লগার হত্যার ষড়যন্ত্র: কাঠগড়ায় ব্রিটিশ ‘হিটম্যান’  হিটম্যান মুহাম্মদ গহির খান

ঢাকা: নেদারল্যান্ডসে বসবাসকারী এক পাকিস্তানি ব্লগারকে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে এক ব্রিটিশ ভাড়াটে খুনিকে (হিটম্যান) দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। আগামী মার্চ থেকে তার সাজা শুরু হবে।

 

আদালতের শুনানিতে বলা হয়েছে, পাকিস্তানের কিছু মানুষ ৩১ বছর বয়সী মুহাম্মদ গহির খানকে ‘হিটম্যান’ বা ভাড়াটে খুনী হিসেবে নিয়োগ করেছিল। খবর বিবিসির।

গত জুনে লন্ডনে ফিরলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর তিনি হত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য দোষী নন বলে আবেদন করেন।  

আইনজীবীরা জানিয়েছেন, যাকে হত্যার পরিকল্পপনা করা হয়েছিল তার নাম আহমেদ ওয়াকাস গোরায়া। তিনি পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিয়ে ব্যঙ্গ করে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগগুলোর বিবরণ দিয়ে ফেসবুকে একটি ব্লগ তৈরি করেছিলেন।

কিংস্টন ক্রাউন আদালতে বলা হয়েছে, গোরায়া সে সময় রটারডামে বসবাস করছিলেন। পাকিস্তান সরকারের কার্যকলাপের বিরুদ্ধে কথা বলার জন্য তিনি পরিচিত ছিলেন। আর সেই কারণেই তাকে টার্গেট করা হয়।  

জুরিকে বলা হয়েছিল, ভাড়াটে গহির খান পূর্ব লন্ডনের এক সুপার মার্কেটের কর্মী। তিনি বিপুল অংকের ঋণগ্রস্ত। রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ করে, তিনি এক লাখ পাউন্ডের বিনিময়ে ওই পাকিস্তানিকে হত্যা করার জন্য ‘মুডজ্’ নামের এক ব্যক্তির প্রস্তাবে “উৎসাহব্যঞ্জক” প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছিলেন।

রাষ্ট্রপক্ষের নেতৃত্ব দিতে গিয়ে অ্যালিসন মরগান কিউসি বলেন, গোরায়া ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে এফবিআই থেকে তথ্য পেয়েছিলেন, তিনি একটি হত্যার তালিকায় আছেন। এরপর তিনি অনলাইনে ও ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন ধরনের হুমকি পান। পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের পক্ষ থেকেই সেসব হুমকি আসছিল বলে তিনি মনে করেন।  

ওয়াকাস গোরায়া বিবিসিকে বলেছেন, তিনি নিশ্চিত যে পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থাগুলো শেষ পর্যন্ত এই ষড়যন্ত্রের পেছনে রয়েছে এবং এটি পাকিস্তানের অভ্যন্তরে ও বাইরে ভিন্নমতাবলম্বী কণ্ঠস্বরের বিরুদ্ধে ব্যাপক দমন-পীড়নের অংশ।

পাকিস্তানের কর্মকর্তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।  

বিবাদী খান এবং ‘মুডজ্‌’ নামের মধ্যস্থতাকারী ব্যক্তির মধ্যে অভিযোগে বর্ণিত হোয়াটসঅ্যাপ বার্তাগুলো আদালতকে দেখানো হয়েছিল, যেখানে মৎস্য শিকারের প্রসঙ্গ কোড হিসেবে ব্যবহার করে হত্যার বিষয়ে আলোচনা করতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে লক্ষ্যকে একটি ‘হাঙ্গর’– এর বিপরীতে ‘একটি ছোট মাছ’ হিসেবে বর্ণনা করা হয় এবং বলা হয়, একটি ‘ছোট ছুরি’ কাজটির জন্য যথেষ্ট হবে।

অভিযোগে বর্ণিত ষড়যন্ত্র সম্পর্কিত বার্তাগুলোতে উল্লিখিত আরেক ব্যক্তিকে ‘বিগ বস’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়।  

রাষ্ট্রপক্ষ বলেছে, আসামিকে গোরায়ার বাড়ির ঠিকানা ও ছবি পাঠানো হয়েছিল। তিনি রটারডাম সফর করেছিলেন যেখানে তিনি একটি ছুরি কিনেছিলেন। কিন্তু তিনি গোরায়ার সঠিক অবস্থান খুঁজে বের করতে পারেননি। ফলে যুক্তরাজ্যে ফেরত আসেন এবং তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।  

রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মিস মরগান কিউসি আদালতকে বলেন, মি. খান সবগুলো বার্তা প্রেরণ-গ্রহণ করা ও রটারডামে ভ্রমণের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তবে তিনি দাবি করেছেন, তিনি অর্থ রেখে দিতে চেয়েছিলেন এবং হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো তার অভিপ্রায় ছিল না। বাদীপক্ষের অভিযোগ হচ্ছে, তিনি গোরায়াকে হত্যা করার জন্যই সেখানে গিয়েছিলেন।  

বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০২২
নিউজ ডেস্ক

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।