এখন চলছে আরবি সপ্তম মাস রজব। রজব শব্দের অর্থ সম্মানিত।
এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘বারো মাসে বছর। তার মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি ধারাবাহিক- জিলকদ, জিলহজ ও মহররম আর চতুর্থটি হলো- রজব, যা জুমাদাল উখরা ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস। ’ -সহিহ বুখারি: ২/৬৭২
এ মাসগুলোর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) ও হজরত কাতাদা (রহ.) থেকে বর্ণিত হয়েছে, এ মাসগুলোতে কোনো আমল করার দ্বারা অন্য মাসের তুলনায় অধিক সওয়াব লাভ হয় এবং এ মাসগুলোতে কোনো গোনাহের কাজ করলে অন্য মাসের তুলনায় অধিক গোনাহ হয়। -তাফসিরে তাবারি: ৬/১৪৯-১৫০
আশহুরে হুরুমের বৈশিষ্ট্য প্রসঙ্গে ইমাম আবু বকর জাসসাস (রহ.) বলেন, এসব মাসে ইবাদতের প্রতি যত্নবান হলে বাকি মাসগুলোয় ইবাদত করা সহজ হয় এবং এ মাসগুলোতে গোনাহ থেকে বেঁচে থাকলে অন্য মাসেও গোনাহ থেকে বেঁচে থাকা সহজ হয়। -আহকামুল কোরআন: ৩/১৬৩
তাই আশহুরে হুরুমের অন্তর্গত রজব মাসের মর্যাদা রক্ষায় সচেষ্ট হওয়া উচিত। তবে স্মরণ রাখা উচিত, শরিয়তের পক্ষ থেকে এ মাসের জন্য বিশেষ কোনো নামাজ, বিশেষ কোনো রোজা অথবা বিশেষ পদ্ধতির কোনো আমলের হুকুম দেওয়া হয়নি। তাই বাজারের অনির্ভরযোগ্য বই-পুস্তকে রজব মাস উপলক্ষে বিশেষ নামাজ ও রোজার যেসব কথা পাওয়া যায় তা সবই ভিত্তিহীন। এ ধরনের মনগড়া আমল দ্বারা এ মাসের ফজিলত লাভ করা সম্ভব নয়। এগুলো থেকে আমাদের বেঁচে থাকা অপরিহার্য। বরং ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নতগুলো গুরুত্বের সঙ্গে আদায়ের পাশাপাশি সামর্থ্য অনুযায়ী স্বাভাবিক নফল নামাজ, রোজা, জিকির, তেলাওয়াত ও দান-সদকা করা বাঞ্ছনীয়।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, রজব মাসের পর শাবান মাস আর তার পরই পবিত্র রমজান। এই তিন মাসের পূর্ণ বরকত, রহমত ও ফজিলত যেন আমরা লাভ করতে পারি সেজন্য আল্লাহতায়ালার দরবারে বিশেষভাবে দোয়া করা দরকার। আমাদের পূর্বসূরি বুজুর্গ আলেমরা রজব মাসের শুরু থেকেই এই দোয়া বেশি বেশি করতেন- ‘আল্লাহুম্মা রারিক লানা ফি রজাবা ওয়া শাবানা- ওয়া বাল্লিগনা রামাজান। ’
অর্থ: হে আল্লাহ! আমাদের রজব ও শাবান মাসে বরকত দান করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন। এই দোয়াটি আমরা বেশি বেশি করতে পারি। আল্লাহতায়ালা আমাদের সেই তওফিক দান করুন। আমিন।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৬
এমএ/