মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব। আল্লাহ মানুষকে অগণিত সুন্দর গুণ দিয়ে সৃষ্টি করেছেন।
অপরদিকে মানুষের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে আল্লাহতায়ালার অসংখ্য সতর্ক বাণী রয়েছে। মানুষের মন্দ চরিত্রের অন্যতম হলো- কারও বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা। ষড়যন্ত্রকারীরা সচেতনভাবে আলোকে অন্ধকার এবং অন্ধকারকে আলো বানিয়ে ফেলে। তারা প্রতারণা, গোপনীয়তা ও কুশলতার মাধ্যমে স্বার্থ হাসিল করে।
ষড়যন্ত্র শব্দের এর ভাবার্থ হচ্ছে, কোনো কিছুকে জটিল ও কুটিলভাবে চিন্তা করা। হাজার বছর ধরে পৃথিবীর মানুষের অনেক কিছুতে পরিবর্তন হলেও মৌলিক স্বভাব-চরিত্র বদলায়নি এতটুকু। আজো ষড়যন্ত্র চলছে আগের মতোই।
ষড়যন্ত্রের উৎস হচ্ছে সন্দেহ, অবিশ্বাস এবং নেতিবাচক মানসিকতা। ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে যা করা সম্ভব প্রাতিষ্ঠানিকভাবে তা করা সম্ভব নয়। ষড়যন্ত্র মূলতঃ শয়তানের চাল।
এই ষড়ডন্ত্র থেকে বেঁচে থাকতে ইসলামি চিন্তাবিদরা নিম্নের দোয়াটি বেশি বেশি পাঠ করতে বলেছেন।
أَعُوذُ بِاللَّهِ أَنْ أَكُونَ مِنَ الْجَاهِلِينَ
দোয়া: ‘আউজু বিল্লাহি আন আকুনা মিনাল জাহিলিন। ’
অর্থ: ‘আল্লাহর আশ্রয় নিচ্ছি, যাতে আমি অজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত না হই। ’
প্রেক্ষাপট: হজরত মুসা (আ.) ছিলেন বনি ইসরাইলের নবী। তার অনুসারীরা ইহুদি হিসেবে পরিচিত। ইহুদিরা ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে হঠকারী জাতি। তারা প্রতিটি কথায় ও কাজে আল্লাহর নবীর সঙ্গে বেয়াদবি করত ও তাকে নানাভাবে মানসিক যন্ত্রণা দিত। একবার আমিল নামক এক ধনাঢ্য লোককে তার উত্তরাধিকার সম্পদ ভোগ করা বা তার সুন্দরী স্ত্রী কিংবা মেয়েকে বিয়ে করার কুমতলবে তার ভাতিজা গোপনে হত্যা করে আর তার লাশ ফেলে রাখে অন্য পাড়ায় নিয়ে। এ ঘটনায় তাদের মধ্যে চরম বিরোধ দেখা দেয়। শেষ পর্যন্ত ঘটনার ফয়সালার জন্য হজরত মুসা (আ.)-এর দ্বারস্থ হয়। মুসা (আ.) বলেন, হত্যাকারী চিহ্নিত করার জন্য আল্লাহপাক একটি গাভী জবাই করার হুকুম দিচ্ছেন। কিন্তু তারা বিষয়টিকে পেঁচাতে থাকলে জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সূরা বাকারার ২ : ৬৮-৭৫ আয়াতে এ ঘটনার বিশদ বিবরণ রয়েছে। এহেন জটিল পরিস্থিতিতে মুসা (আ.) আল্লাহর কাছে আশ্রয় চেয়ে দোয়া করেন এবং বলেন, ‘মূর্খদের অন্তর্ভুক্ত হওয়া থেকে আমি আল্লাহর কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করছি। ’ -সূরা বাকারা: ৬৭
মূর্খদের দ্বারা কোনো ষড়যন্ত্রের শিকার হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সঠিক ফয়সালা লাভের ক্ষেত্রে এ দোয়া বিশেষ উপকারী।
বাংলাদেশ সময়: ২০২০ ঘন্টা, মে ১২, ২০১৫
এমএ/