ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মেসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালেমা নসিব হয়

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭০১ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০১৬
মেসওয়াক করলে মৃত্যুর সময় কালেমা নসিব হয়

সামাজিক প্রাণী মানুষ। মানুষে মানুষে কথাবার্তা বলতে হয়, লেনদেন করতে হয়, একসঙ্গে বসে কাজকারবার করতে হয়।

পাশে বসে যাতায়াত করতে হয়। ইসলামি শরিয়ত কতই না সুন্দর! শরিয়ত শুধু নামাজ-রোজা, হজ-জাকাত ও জেহাদের প্রতিই গুরুত্ব দেয়নি, বরং ব্যক্তির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা থেকে শুরু করে, সামগ্রিক জীবন সুন্দর করতে, সামাজিক জীবন উন্নত করতে কত নিয়মকানুনই না দিয়েছে ইসলামি শরিয়ত।

এগুলো আমল করলে আবার সওয়াবেরও ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। জনৈক আলেম তো এভাবে বলেন, আমাদের ভাত খাওয়াও সওয়াবের কাজ, ঘুমানোও সওয়াবের কাজ। নিজের মুখ পরিষ্কার করে নিজেকে পরিচ্ছন্ন করব আমরা, তাও সওয়াব দেবেন আল্লাহতায়ালা। এর চেয়ে বড় সৌভাগ্যের আর কী আছে?

সঠিকভাবে মেসওয়াক করলে মুখের দুর্গন্ধ তো দূর হবেই, সঙ্গে সঙ্গে একটা সুন্নতও আদায় হয়ে যাবে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বেশি বেশি মেসওয়াক করতেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আমার উম্মতের যদি কষ্ট না হতো, তাহলে আমি প্রতি নামাজের সময় তাদের মেসওয়াক করার আদেশ দিতাম। ' –সহিহ বোখারি: ৮৩৮

আরেক হাদিসে প্রত্যেক অজুর সময় উল্লেখ রয়েছে। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও বেশি বেশি মেসওয়াক করতেন, সাহাবায়ে কেরামকেও উৎসাহ দিতেন। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, 'মেসওয়াক মুখকে পবিত্র, পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন করে এবং তা আল্লাহতায়ালার সন্তুষ্টির মাধ্যম। ' -মেশকাত: ৩৮১

মেসওয়াকের গুরুত্ব ও ফজিলত বোঝা যায় হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আরেকটি হাদিস দ্বারা। হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্তেও মেসওয়াক করেছেন। -সহিহ বোখারি: ৪০৮৪

নিয়মিত মেসওয়াক করলে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জিত হয়। পাকস্থলী ঠিক থাকে ও শরীর শক্তিশালী হয়। স্মরণশক্তি ও জ্ঞান বাড়ে, অন্তর পবিত্র হয়, সৌন্দর্য বাড়ে। ফেরেশতারা তার সঙ্গে মুসাফাহা করেন, নামাজে বের হলে সম্মান করেন, নামাজ আদায় করে বের হলে আরশ বহনকারী ফেরেশতারা তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। শয়তান অসন্তুষ্ট হয়। পুলসিরাত বিজলির ন্যায় দ্রুতগতিতে পার হওয়ার সৌভাগ্য অর্জিত হয় এবং ডান হাতে আমলনামা মেলে ও মৃত্যুর সময় কালেমা নসিব হয়।

বস্তুত মেসওয়াকের দ্বীনী ও পরকালীন উপকারিতার পাশাপাশি এর তাৎক্ষণিক কল্যাণও প্রশ্নাতীত। কারও মুখে যদি দুর্গন্ধ থাকে, তাহলে তার সঙ্গে কথা বলাটাই কষ্টকর হয়ে পড়ে। অথচ অনেক সময় সে বুঝতেই পারে না- তার মুখ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে আর সে দুর্গন্ধে অন্যদের কষ্ট হচ্ছে। নিয়মিত যদি কেউ মেসওয়াক করে তাহলে মুখের দুর্গন্ধ থেকে সে নিজে মুক্তি পাবে আর অন্যরা নিষ্কৃতি পাবে তার মুখের দুর্গন্ধজনিত কষ্ট থেকে।

আল্লাহর মেহেরবানিতে মেসওয়াক দুনিয়ার সর্বত্রই সহজলভ্য ও সহজে বহনযোগ্য। আল্লাহর রেজামন্দি অর্জন করা থেকে তবে কেন আমরা নিজেদের বঞ্চিত করব?

বাংলাদেশ সময়: ১৭০২ ঘন্টা, মে ১৪, ২০১৫
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।