কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৬৯তম আসরে উৎসবের সর্বোচ্চ পুরস্কার স্বর্ণপাম (পাম দ’র) জেতার লড়াইয়ে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছে ২১টি ছবি।
এর মধ্যে আয়োজক দেশ ফ্রান্সের চারটি, যুক্তরাষ্ট্রের তিনটি, যুক্তরাজ্য ও রোমানিয়ার দুটি করে এবং ইরান, জার্মানি, স্পেন, বেলজিয়াম, কানাডা, ব্রাজিল, ফিলিপাইন, নেদারল্যান্ডস ও ডেনমার্কের একটি করে ছবি স্থান পেয়েছে।
ছবিগুলোর নির্মাতারা কেউ কারও চেয়ে কম নন। প্রতিটিই জিততে পারে স্বর্ণপাম। এমনিতেই কানে কোনো ছবি নিয়ে পূর্বাভাস করা যায় না। তার ওপর প্রতিযোগিতা বিভাগে বিখ্যাত সব নির্মাতাদের স্থান পাওয়ায় উৎসব শুরুর আগেই লড়াইটা জমে উঠেছে। বিচারকদের যে হিমশিম খেতে হবে তা আগে থেকেই বলে দেওয়া যায়।
এবারের আয়োজনে বিখ্যাত নির্মাতাদের মধ্যে কেন লোচ, পেড্রো আলমোডোভার, শন পেন, জ্যঁ-পিয়ের দারদেন ও লুক দারদেন ভ্রাতৃদ্বয় লড়বেন স্বর্ণপামের জন্য। ৭৯ বছর বয়সী লোচ ২০০৬ সালে ‘দ্য উইন্ড দ্যাট শেকস দ্য বার্লি’র সুবাদে স্বর্ণপাম জেতেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে তার “জিমি’স হল” প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছিল।
দু’বার (১৯৯৯ ও ২০০৫) স্বর্ণপাম জয়ী বেলজিয়ামের দারদেন ভাইরা আবার স্থান পেয়েছেন প্রতিযোগিতা বিভাগে। তাদের নতুন ছবি ‘দ্য আননৌন গার্ল’ এবার শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হতে পারে স্বর্ণপামের দৌড়ে।
পরিচালক হিসেবে অভিনেতা শন পেনের পঞ্চম ছবি ‘দ্য লাস্ট ফেস’ লড়বে প্রতিযোগিতা বিভাগে। এতে অভিনয় করেছেন তার প্রাক্তন প্রেমিকা শার্লিজ থেরন।
২১টি ছবির মধ্যে আছে নারী নির্মাতা আন্ড্রিয়া আর্নল্ডের ‘আমেরিকান হানি’ (শায়া লাবাফ)। কানের ইতিহাসে এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেলো নারী নির্মাতার ছবি।
ইরানি পরিচালক আসগর ফারহাদির 'দ্য সেলসম্যান'কেই বা বাদ দেবেন কীভাবে! কানে এর আগে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছিল আসগর ফারহাদির ‘দ্য পাস্ট’ (২০১৩)। এতে অভিনয়ের জন্য ফরাসি অভিনেত্রী বেরেনিস বেসো কানে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জেতেন। এছাড়া আসগর জেতেন ইকুমেনিক্যাল জুরি পুরস্কার।
এশিয়া থেকে ইরান ছাড়া প্রতিযোগিতা বিভাগে আশার আলো ফিলিপাইনের ব্রিলিয়ান্তে মেনদোজার 'মা, রোসা' আর দক্ষিণ কোরিয়ার পার্ক চ্যান-উ'র 'দ্য হ্যান্ডমেইডেন'। স্বর্ণপামকে এশিয়ায় নিয়ে আসার সমূহ সম্ভাবনা আছে এ দুটি ছবিরও।
প্রতিযোগিতা বিভাগের ছবিগুলোর নির্মাতাদের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ হলেন কানাডার হাভিয়ের দোলান। ২০১৪ সালে কানে 'মমি' ছবির মাধ্যমে জুরি পুরস্কার পেয়ে দারুণ আলোচিত হয়েছিলেন এই তরুণ। সম্প্রতি অ্যাডেলের 'হ্যালো' গানের ভিডিও নির্মাণ করে সাড়া ফেলেছেন তিনি। তার এবারের ছবি "ইট’স অনলি দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড" স্বর্ণপাম জিতে গেলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
অন্য নির্মাতাদের মধ্যে ক্রিস্টিয়ান মুনজিউর 'ব্যাকালরিয়েট', পেড্রো আলমোডোভারের 'জুলিয়েটা', পল ভারহোভেনের 'এল' ছবি তিনটিকে কোনোভাবেই ফেলে দেওয়া যাবে না। তারা যে কেউ স্বর্ণপাম জয়ের ক্ষমতা রাখেন। সত্যি বলতে কান উৎসবে প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পাওয়ায় সবচেয়ে বড় বিজয়। তাই স্বর্ণপাম না জিতলেও কারও মন খারাপ হয় না। এখানেই কানের আবেদন অন্য সব উৎসবের চেয়ে অনেক বেশি, অনেক বৈশ্বিক।
৬৯তম কান উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে নির্বাচিত ছবি
অলিভিয়েঁ অ্যাসাইয়াসের 'পার্সোনাল শপার' (ফ্রান্স), নিকোল গার্সিয়ার 'ফ্রম দ্য ল্যান্ড অব দ্য মুন' (ফ্রান্স), আলা জিরাডির 'রেস্টার ভার্টিক্যাল' (ফ্রান্স), ব্রুনো ডুমের 'স্ল্যাক বে' (ফ্রান্স), শন পেনের 'দ্য লাস্ট ফেস' (যুক্তরাষ্ট্র), জেফ নিকোলসের 'লাভিং' (যুক্তরাষ্ট্র), জিম ইয়ারমুশের 'প্যাটারসন' (যুক্তরাষ্ট্র), কেন লোচের 'আই, ড্যানিয়েল ব্লেক' (যুক্তরাজ্য), আন্ড্রিয়া আর্নল্ডের 'আমেরিকান হানি' (যুক্তরাজ্য), ক্রিস্টিয়ান মুনজিউর 'ব্যাকালরিয়েট' (রোমানিয়া), ক্রিস্টি পুইউ পরিচালিত 'সিয়েরা নেভাদা' (রোমানিয়া), জ্যঁ-পিয়ের দারদেন, লুক দারদেনের 'দ্য আননৌন গার্ল' (বেলজিয়াম), হাভিয়ার দোলানের "ইট’স অনলি দ্য এন্ড অব দ্য ওয়ার্ল্ড" (কানাডা), নিকোলাস উইন্ডিং রেফনের 'দ্য নিয়ন ডেমন' (ডেনমার্ক), পেড্রো আলমোডোভারের 'জুলিয়েটা' (স্পেন), ক্লিবা মেনডোঙ্কা ফিলো পরিচালিত 'অ্যাকুয়ারিয়াস' (ব্রাজিল), ব্রিলিয়ান্তে মেনদোজার 'মা, রোসা' (ফিলিপাইন), পার্ক চ্যান-উ'র 'দ্য হ্যান্ডমেইডেন' (দক্ষিণ কোরিয়া), পল ভারহোভেনের 'এল' (নেদারল্যান্ডস), টনি এর্ডমানের 'এভরিওয়ান এলস' (জার্মানি) এবং আসগর ফারহাদির 'দ্য সেলসম্যান' (ইরান)।
ফ্রান্স সময়: ২৩১৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৬
জেএইচ/এসআর
** বিচারকদের সামনে বাংলানিউজ
** সারারাত বৃষ্টির পর ‘ক্যাফে সোসাইটি’
** ইস্তাম্বুলে আইসক্রিম কিনলে ওয়াইফাই ফ্রি!
** ব্যাজের সঙ্গে ব্যাগভর্তি কাগজপত্র দিলেন আয়োজকরা
** কান উৎসবের পর্দা ওঠার অপেক্ষা