তুষারের যা স্বভাব! দুম করে একটা কথা বলে বসবে। করলোও তাই।
আমার কথা-কাজে কে বাগড়া দেয়, তা ধরতেই দু’আনা বাড়িয়ে বলেছিলাম; পেয়েও গেলাম। বুঝেছিস? গিট্টু দা ক্ষেপে যান!
ক্লাবের সবাই অনেক চেষ্টায় গিট্টু দা’কে শান্ত করে। তুষারকে ধমক লাগায়। তুষারও চুপসে যায়। বলে, স্যরি দাদা, ভুল হয়ে গেছে। গিট্টু দা শান্ত হন। কারণ তিনি নতুন ভাবনার পাখায় ভর করে উড়ছেন।
আগের কথায় ফিরে যান। বলেন, শোন, পড়াশোনা ছাড়া জীবন মিছে। তাই বলে আবার ভাবিস নে, শুধু ক্লাসের বই পড়লেই হবে। ক্লাসের বই অবশ্যই পড়বি। কিন্তু আমি এখন যেটা বলছি, সেটা ভিন্ন। পড়তে হবে ইতিহাস, গল্প, নাটক-নভেল, উপন্যাস। যাকে কিনা বলা হয় সাহিত্য পাঠ।
আবেগের তোড়ে গিট্টু দা বলে যেতে থাকেন। শোন, আমার কিন্তু বই পড়ার খুব নেশা ছিল। তাই ছোটবেলায় ভাবতাম, বড় হয়ে লাইব্রেরির দোকানে চাকরি নেবো। তাইলে অনেক বই পড়তে পারবো। অবশ্য এই বই পড়তে গিয়ে বিপদও হয়েছে। মাথার যে কয়টা স্ক্রু একটু ঢিলা, তা ওই বই পড়তে পড়তেই হয়েছে। তবে তোদের হবে না। কারণ তোরা যে একেকটা চিজ। তোরা নিয়ম মেনে পড়বি।
একটু থামেন গিট্টু দা। এই সুযোগে অমিত প্রশ্ন করে বসে, তাইলে দাদা কি এখন লাইব্রেরিতে চাকরি নেয়ার কথা ভাবছেন? গিট্টু দা ফের রেগে যান। আবার সবাই গিট্টু দা’কে শান্ত করে।
গিট্টু দা এবার ভূমিকা ছেড়ে দেন। ছেলেবেলায় কী কী করেছেন তাও বাদ। মূল ঘোষণা দেন, গিট্টু কিশোর ক্লাবের একটি পাঠাগার হবে। তোরা কি বলিস? সবার মতামতের জন্য প্রশ্ন করলেও গিট্টু দা উত্তরের জন্য অপেক্ষা করেন না। তিনিই বলতে থাকেন, আমি তো জানি, তোরাও এই সিদ্ধান্তে দারুণ খুশি হয়েছিস। আগামী শুক্রবার পাঠাগার গঠনের মিটিং। প্রত্যেকে পরিকল্পনা আর একটা করে স্লোগান নিয়ে আসবি, প্রচারণা চালানোর জন্য। এ কথা বলেই গিট্টু দা কেটে পড়েন।
[চলবে....]
বাংলাদেশ সময়: ২১০৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এএ