গৌরবের ৬৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে দিনভর নানা অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর।
সকাল দশটায় রাজধানীর তোপখানা রোডের মেহেরবা প্লাজার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও খেলাঘরের পতাকা উত্তোলন শেষে সাড়ে দশটায় খেলাঘরের সূতিকাগার দৈনিক সংবাদ কার্যালয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন সংগঠনের কর্মী-সংগঠক, অভিভাবক ও ভাই-বোনেরা।
বিকেল ৫টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় সঙ্গীত ও নৃত্যকলা কেন্দ্র মিলনায়তনে আলোচনা সভা, স্মৃতিচারণ, পুনর্মিলনী, সাংস্কৃতিক ও খেলাঘর প্রবর্তিত সাংবাদিক বজলুর রহমান ভাইয়া স্মৃতিপদক প্রদান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে।
এ অনুষ্ঠানে সাংবাদিক বজলুর রহমান ভাইয়া স্মৃতিপদকে ভূষিত হবেন সাংবাদিক তোয়াব খান, প্রাবন্ধিক-গবেষক মফিদুল হক , শিল্পী আবুল বার্ক আল্ভী এবং খেলাঘর সংগঠক অধ্যাপক নিরঞ্জন অধিকারী। পদকপ্রাপ্ত গুণিজনদের হাতে পদক ও সম্মাননাপত্র তুলে দিয়ে এবং উত্তরীয় পরিয়ে তাদেরকে সম্মানিত করা হবে।
সাংবাদিক বজলুর রহমান ভাইয়ার মৃত্যুর পর ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর এ পদক প্রদান করে আসছে খেলাঘর।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক এমপি। উদ্বোধন করবেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব নাসির উদ্দিন ইউসুফ। বিশেষ অতিথি থাকবেন বিশিষ্ট সমাজসেবী অ্যাডভোকেট আজমত উল্লা খান। সভাপতিত্ব করবেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার।
প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এ আয়োজনে বাঙালির ঐতিহ্যমণ্ডিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে খেলাঘরের ছোট্ট সোনামনি বন্ধুরা।
কবি হাবিবুর রহমান ভাইয়া, শহীদ শহীদুল্লাহ কায়সার, রণেশ দাশগুপ্ত, সত্যেন সেন, পটুয়া কামরুল হাসানসহ তৎকালীন সময়ের সূর্য সন্তানেরা খেলাঘর প্রতিষ্ঠা করেন। সংগঠন গড়বার লক্ষ্য ছিল, সদ্য স্বাধীন পাকিস্তানি প্রতিক্রিয়াশীলতা ও বাঙালির মূল চেতনাবিরোধী অপপ্রয়াসকে প্রতিরোধ করে দেশের ভবিষ্যৎ নাগরিক শিশু-কিশোরদের প্রগতিমনস্ক ও বাঙালি সংস্কৃতি ও জাতীয়তাবাদের চেতনায় গড়ে তোলা।
কালক্রমে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং কার্যক্রমে যোগ হয়েছে আরও অনেক কিছু। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে অংশ নেওয়া খেলাঘর বর্তমান প্রেক্ষাপটে এখন দেশ-জাতির প্রতি দায়বোধ ও ঋণশোধের আকাঙ্ক্ষা থেকেই চায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় শিশু-কিশোর ভাই-বোনদের গড়ে তুলতে। ক্রমশ: সংগঠন থেকে আন্দোলনে পরিণত হওয়া খেলাঘরের স্লোগান তাই ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নতুন প্রজন্ম গড়ে তোল’।
শিশু-কিশোরদের সুপ্ত প্রতিভা বিকাশের মাধ্যমে দেশপ্রেমিক মানবতাবাদী আদর্শে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তোলা, লেখাপড়ার পাশাপাশি সাহিত্য চর্চা, খেলাধুলা, নাট্য, বিতর্ক ও বিজ্ঞান চর্চা, নাচ-গান, আবৃত্তি-অভিনয়, ছবি আঁকাসহ সৃজনশীল কার্যক্রম এবং শিশু অধিকার প্রতিষ্ঠা ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে আন্দোলন চালিয়ে আসছে খেলাঘর।
বর্তমানে দেশজুড়ে ছয় শতাধিক শাখা আসরের সমন্বয়ে শিশু-কিশোরদের নিয়ে কাজ করছে খেলাঘর। পাশাপাশি মৈত্রীর বন্ধনে শান্তিময় বিশ্ব গড়বার কার্যক্রমে খেলাঘর এখন আন্তর্জাতিক পরিসরেও বিস্তৃত।
খেলাঘরের এগিয়ে চলার ৬৫ বছর উপলক্ষে দেশের সকল কর্মী-সংগঠক, অভিভাবক, ভাই-বোন, শুভাকাঙ্খীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন খেলাঘর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতিমণ্ডলীর চেয়ারম্যান অধ্যাপিকা পান্না কায়সার ও সাধারণ সম্পাদক আবুল ফারাহ পলাশ।
অধ্যাপিকা পান্না কায়সার তার শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, ‘খেলাঘরের ছোট্টমনি, সংগঠক, নেতাকর্মী ও সহযোদ্ধাদের খেলাঘরের ৬৬তম শুভ জন্মদিনের শুভানন্দ ও আনন্দিত শুভেচ্ছা জানাই। ৬৫ বছরের আনন্দ ধারায় স্নাত হয়ে খেলাঘরের পথচলা গৌরবের ও আনন্দের। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশকে আলোকিত করে সাম্প্রদায়িকতা, জঙ্গিবাদকে উৎখাত করার অঙ্গীকার এবারের খেলাঘরের জন্মদিনে’।
‘খেলাঘরের জন্মদিনে ভাই-বোনদের অনুষ্ঠানমালায় স্বচ্ছ সুন্দর বাংলাদেশের ছবি ফুটে উঠবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৬
এএসআর