ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

দুষ্টু মেয়ের অদ্ভুত রূপকথা: ম্যারি অ্যানিং

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
দুষ্টু মেয়ের অদ্ভুত রূপকথা: ম্যারি অ্যানিং প্রতীকী ছবি

যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ উপকূলের এক জীর্ণ বাড়িতে বাস করতো ম্যারি। তাদের বাড়িটা সমুদ্রের এতোটাই কাছে যে, ঝড় এলে সমুদ্রের স্রোত চলে আসে ঘর পর্যন্ত। 

সমুদ্রের স্রোতের সঙ্গে আরও নানা রকম জিনিস ভেসে আসতো সৈকতে। মাঝে মাঝে সৈকতে বিভিন্ন প্রাণীর কংকাল পড়ে থাকতে দেখা যেতো।

সৈকতের তীর ধরে হেঁটে হেঁটে এসব কংকাল সংগ্রহ করতে ভালোবাসতো ম্যারি।

ম্যারিদের আর্থিক অবস্থা ছিল খুবই খারাপ। তাই সে স্কুলে যাওয়ার সুযোগ পায়নি। কিন্তু ম্যারি নিজে নিজে লিখতে এবং পড়তে শিখে নিয়েছিল। সে ভূতত্ত্ব বিষয়ক অনেক বই পড়ে এবং বিভিন্ন পাথর ও খনিজ সম্পর্কে বেশ ভালো জ্ঞান অর্জন করে। তাছাড়া সমুদ্রের স্রোতে ভেসে আসা বিভিন্ন প্রাণীর কংকালের ব্যাপারে তার আগ্রহতো আগে থেকেই ছিল।

একদিন সৈকতে হাঁটার সময় একটা অদ্ভুত আকৃতির পাথরে চোখ আঁটকে যায় ম্যারির। সে দৌড়ে বাড়ি থেকে তার হালকা ওজনের হাতুড়িটা নিয়ে আসে এবং তা দিয়ে খুব সাবধানে সেখান থেকে আলগা মাটি সরাতে থাকে। ধীরে ধীরে সেখান থেকে বেরিয়ে আসে ৩০ ফুট লম্বা একটা কংকাল।

কংকালটা দেখে খুবই অবাক হয় ম্যারি। এমন কংকাল সে জীবনেও দেখেনি। এর ঠোঁট অনেক লম্বা, কিন্তু এটা কোনো পাখির কংকাল না। এর চোয়ালে রয়েছে বড় বড় ধারালো দাঁত, কিন্তু এটাকে ঠিক হাঙর বলেও মনে হচ্ছে না! এর লম্বা লেজ দেখলে মনে হবে যেন সরীসৃপ। আবার দু’পাশের ডানাগুলো দেখলে মনে হবে মাছ।

এটা ছিল এমন এক ডায়নোসরের ফসিল যার সন্ধান তখনও জীবাশ্মবিদদের কাছে পৌঁছায়নি। ম্যারি এ ডায়নোসরটির নাম রাখে ‘ইচথায়োসোর’, যার অর্থ মেছোসরীসৃপ।

একসময় মানুষ মনে করতো পৃথিবীর বয়স মাত্র কয়েক হাজার বছর। কিন্তু ম্যারির আবিষ্কৃত মেছোসরীসৃপের কংকালটি প্রমাণ করে লাখ লাখ বছর আগেও পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল।  

বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিজ্ঞানীরা ম্যারিকে তার আবিষ্কারের জন্য অভিনন্দন জানাতে ছুটে আসেন। ম্যারির প্রতিভা সবাইকে অবাক করে। কারণ, কোনো স্কুলে লেখাপড়া না করেও নিজেকে একজন বিজ্ঞানী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে ম্যারি।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।