ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ছোটদের ‘শেখ সাহেব’

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১২
ছোটদের ‘শেখ সাহেব’

বঙ্গবন্ধুর নাম শোনেনি এমন মানুষ খুব কমই আছে। তারপরও বলছি, যে কয়েকজন মানুষের জন্য আজ আমরা এই স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক, বাংলা ভাষায় কথা বলি, তাদের অন্যতম জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।



সবার কাছে তিনি ‘শেখ সাহেব’ নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। তিনি তদানীন্তন ভারতীয় উপমহাদেশের বঙ্গ প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার পাটগাতি ইউনিয়নের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা শেখ লুৎফর রহমান এবং মা সায়েরা খাতুন।

বাবা শেখ লুৎফর রহমান ছিলেন গোপালগঞ্জ দায়রা আদালতের সেরেস্তাদার (যিনি আদালতের হিসাব সংরক্ষণ করেন)। চার কন্যা এবং দুই পুত্রের সংসারে তিনি ছিলেন তৃতীয় সন্তান।

১৯২৭ সালে শেখ মুজিব গিমাডাঙ্গা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়াশোনা শুরু করেন। ৯ বছর বয়সে ১৯২৯ সালে তিনি গোপালগঞ্জ পাবলিক স্কুলে ভর্তি হন এবং এখানেই ১৯৩৪ সাল পর্যন্ত পড়াশোনা করেন। ১৯৩৭ সালে গোপালগঞ্জ মাথুরানাথ ইনিস্টিউট মিশন স্কুলে সপ্তম শ্রেণীতে ভর্তি হন।

১৯৩৪ থেকে চার বছর তিনি বিদ্যালয়ের পাঠ চালিয়ে যেতে পারেননি। কারণ তার চোখে জটিল রোগের কারণে সার্জারি করাতে হয়েছিল। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুল থেকে তিনি ম্যাট্রিকুলেশন পাশ করেন। ১৯৩৮ স‍ালে আঠারো বছর বয়সে ফজিলাতুন্নেসার সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের জন্য জীবনের ১৪টি বছর তিনি কারাগারে কাটিয়েছেন।

গোপালগঞ্জ মিশন স্কুলের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্র থাকা অবস্থায় মুজিব তৎকালীন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে প্রথমবারের মতো কারাবরণ করেন। কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় তিনি হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও শেরে বাংলা একে ফজলুল হকসহ তৎকালীন প্রথম সারির রাজনৈতিক নেতাদের সান্নিধ্যে আসেন। রাজনৈতিক জীবনের শুরু থেকেই সংগ্রাম-আন্দোলন চালিয়ে গেছেন অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী এই নেতা।

একাত্তরের মার্চে বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বেই শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন। ৭ মার্চ তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। ’ সেদিন বাঙালি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল এ ভাষণ। ২৫ মার্চ পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হামলা চালায়। আর ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। ৯ মাসের সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্ম হয় বাংলাদেশের।

১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি লাভ করে দেশে ফিরে আসেন বঙ্গবন্ধু। মনোনিবেশ করেন দেশ পুনর্গঠনে। কিন্তু তিনি সে সুযোগ বেশি দিন পাননি। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বিপথগামী কিছু সেনা সদস্যের হাতে নিহত হন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের বেশ কয়েকজন সদস্য। দেশের বাইরে থাকায় ঘাতক চক্রের হাত থেকে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা।

বাংলাদেশ সময় : ১০১৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৭, ২০১২

সম্পাদনা: আরিফুল ইসলাম আরমান, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি ও আহমেদ জুয়েল, অ্যাসিসট্যান্ট আউটপুট এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।