ঢাকা, সোমবার, ১৫ পৌষ ১৪৩১, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ব্রিটিশ আমলের সলংগা গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে নোটিশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
ব্রিটিশ আমলের সলংগা গণহত্যাকে স্বীকৃতি দিতে নোটিশ

ঢাকা: সিরাজগঞ্জের সলংগা হাটে ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ব্রিটিশ পুলিশের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের ঘটনাকে ‘সলংগা গণহত্যা দিবস’ হিসেবে জাতীয়ভাবে স্বীকৃতি দেওয়া এবং সংশ্লিষ্ট জায়গাটিতে একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপনের জন্য আইনি নোটিশ পাঠানো হয়েছে।  

বুধবার (২৭ মার্চ) সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও স্থানীয় বাসিন্দা মো. আসাদ উদ্দিন এ নোটিশ পাঠান।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর নোটিশটি পাঠানো হয়েছে।

আইনজীবী মো. আসাদ উদ্দিন জানান, ১৯২২ সালের ২৭ জানুয়ারি ছিল সলংগা হাটের দিন। এটিই ছিল এলাকার সবচেয়ে বড় হাট। সেখানে হাজার হাজার মানুষের সমাগম ঘটে। সেদিন যুবক আব্দুর রশিদের (যিনি বাংলাদেশ গণপরিষদের প্রথম অধিবেশনের সভাপতি ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি মাওলানা আব্দুর রশিদ তর্কবাগীশ নামে পরিচিত) নেতৃত্বে সলংগা হাটে চলতে থাকে ব্রিটিশ পণ্য বর্জনের প্রচারাভিযান। ‘বিলেতি পণ্য বর্জন কর, এদেশ থেকে ব্রিটিশ হটাও’- শ্লোগানে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রচারাভিযান যখন তুঙ্গে, তখন কংগ্রেস অফিস থেকে আব্দুর রশিদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করেই সেদিন ব্রিটিশ বেনিয়াদের নৃশংসতার এক রক্তাক্ত অধ্যায় বিরচিত হয় সলংগায়।  

সমগ্র ভারতবাসীর জন্য রক্তাক্ত বিদ্রোহের ঐতিহাসিক এক দৃষ্টান্ত সৃষ্টি হয় সেখানে। ৩৯ জন ব্রিটিশ পুলিশের রাইফেলের মুহুর্মুহু গুলিতে রক্তের বন্যা বয়ে যায় সলংগার মাটিতে। নিহতদের লাশ বেঁধে নিয়ে যাওয়া হয় সিরাজগঞ্জের রহমতগঞ্জে। সেখানে তৈরি করা হয় বাংলাদেশের প্রথম ‘গণকবর’। আজও সে ‘গণকবর’ সলংগার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এছাড়া হোসেনপুর, বাসুদেবকোলসহ সলংগার বিভিন্ন জায়গায় নিহতদের কবরস্থ করা হয়। সরকারি হিসাবে এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা দেখানো হয় সাড়ে চার হাজার। কিন্তু বেসরকারি তথ্যমতে এ সংখ্যা দশ সহস্রাধিক বলে জানা যায়।

সলংগা বিদ্রোহের বয়স একশ’ বছর পার হয়েছে। এত বছর পরও দিবসটি জাতীয় দিবস হিসাবে ঘোষণা এবং একটি স্মৃতিস্তম্ভ স্থাপন না হওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ না করা হলে উচ্চ আদালতের নির্দেশনার জন্য আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানান এই আইনজীবী।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৭ ঘণ্টা, মার্চ ২৭, ২০২৪
ইএস/এসআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।