ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

মুফতি হান্নানের ২য় ফাঁসির মামলার বিচার শুরু হচ্ছে হাইকোর্টে

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৩৭ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৬
মুফতি হান্নানের ২য় ফাঁসির মামলার বিচার শুরু হচ্ছে হাইকোর্টে

ঢাকা: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর হামলার দায়ে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের পর এবার হাইকোর্টে রমনার বটমূলে হামলা মামলার বিচার শুরু হচ্ছে জঙ্গি নেতা মুফতি হান্নানের বিরুদ্ধে।

এ মামলায়ও বিচারিক আদালত নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষ নেতা মুফতি হান্নানকে ফাঁসির দণ্ড দিয়েছিলেন।

সর্বোচ্চ দণ্ড অনুমোদনের জন্য এখন মামলাটি হাইকোর্টে শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে।

হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের সরকারের আইন কর্মকর্তা এ মাসের শেষ সপ্তাহেই এ মামলার শুনানি শুরু করতে পারবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন।

১ম ফাঁসির দণ্ড
২০০৪ সালে ২১ মে সিলেটের হয়রত শাহজালালের মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা করা হয়। এ হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তাসহ তিনজন নিহত হন।

এ ঘটনায় করা মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত মুফতি হান্নান, শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল ও দেলোয়ার হোসেন ওরফে রিপন- এ তিনজনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ওরফে মফিজুর রহমান ওরফে মফিজ এবং মুফতি মঈন উদ্দিন ওরফে আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

নিয়ম অনুসারে মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন করতে প্রয়োজনীয় নথি হাইকোর্টে আসে। পাশাপাশি ২০০৯ সালে আসামিরা জেল আপিলও করেন। প্রায় সাত বছর পর গত ৬ জানুয়ারি এ মামলায় হাইকোর্টে শুনানি শুরু হয়ে ৩ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়। পরে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ১১ ফেব্রুয়ারি এ রায় ঘোষণা করা হয়। গত ২৮ এপ্রিল রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপিও প্রকাশিত হয়।

২য় ফাঁসির দণ্ড
২০০১ সালের ১৪ এপ্রিল রমনা বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে বোমা হামলা চালানো হয়। হামলায় ঘটনাস্থলেই নয়জনের মৃত্যু হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান আরও একজন।

এ ঘটনায় নীলক্ষেত পুলিশ ফাঁড়ির সার্জেন্ট অমল চন্দ্র ওই দিনই রমনা থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা করেন।

হত্যা মামলায় রায় ঘোষিত হলেও বিস্ফোরক মামলাটি ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন রয়েছে।

হত্যা মামলায় ২০১৪ সালের ২৩ জুন বিচারিক আদালত মুফতি হান্নানসহ আটজনকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং ছয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দেন।

ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত অন্য আসামিরা হলেন- মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন, মাওলানা তাজউদ্দিন, হাফেজ জাহাঙ্গীর আলম বদর, মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার, মাওলানা আবদুল হাই ও মাওলানা শফিকুর রহমান।

তাদের মধ্যে মুফতি আব্দুল হান্নান, মাওলানা আকবর হোসেন, আরিফ হাসান সুমন ও মাওলানা আবু বকর ওরফে মাওলানা হাফেজ সেলিম হাওলাদার কারাগারে এবং বাকিরা পলাতক রয়েছেন।

যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- শাহাদাত উল্লাহ জুয়েল, মাওলানা সাব্বির, শেখ ফরিদ, মাওলানা আব্দুর রউফ, মাওলানা ইয়াহিয়া ও মাওলানা আবু তাহের।

এরপর ডেথ রেফারেন্স এবং আসামিদের জেল আপিল ও ফৌজদারি আপিলের শুনানির জন্য মামলাটি হাইকোর্টে আসে।

আট আসামির মৃত্যুদণ্ড নিশ্চিতকরণ ও আসামিদের জেল আপিলের শুনানির জন্য ইতোমধ্যে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি আমির হোসেনের বেঞ্চের কার্যতালিকায় উঠেছে।

ওই আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবীর বলেন, ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর হামলার মামলাটি শেষ হয়েছে। ওই মামলার পূর্ণাঙ্গ রায়ও প্রকাশিত হয়েছে। এখন শুনানির জন্য রমনা বটমূলে হামলার মামলাটি এসেছে। আশা করছি, এ মাসের শেষ সপ্তাহে শুনানি শুরু করতে পারবো।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৪ ঘণ্টা, মে ২৩, ২০১৬
ইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।