উভয়পক্ষই সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ব্যানারে সংবাদ সম্মেলন করে।
বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিচার বিভাগ নিয়ে সরকারের সাম্প্রতিক বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
এ নিয়ে মঙ্গলবার (০২ মে) দুপুরে আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে শুরুতে বিএনপিপন্থীরা বারের পক্ষ থেকে বক্তব্য তুলে ধরেন।
বারের সভাপতি জয়নুল আবেদীন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা। সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব।
দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, এখানে আমরা বলতে চাই বিচারিক দায়িত্ব কোনো গোপন বিষয় নয়। মাসদার হোসেন মামলার পরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে অনেক কথা হয়েছে। বিচারকদের চাকরির শৃঙ্খলা, বিধি প্রণয়নের জন্য সর্বোচ্চ আদালত থেকে অনেক নির্দেশনা দিয়েছেন। তারপরও চাকরির বিধি-বিধান, গেজেট আজ পর্যন্ত প্রকাশিত হয়নি। সরকার এজন্য মোট ৬৭ বার সময় নিয়েছে।
সুতরাং প্রধান বিচারপতির গোপনে কিছু বলার নেই। সরকার বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং বিচার বিভাগ স্বাধীনভাবে কাজ করুক তা চায় না, সময়ক্ষেপন তারই প্রমাণ।
সংবিধানের অভিভাবক হিসেবে সুপ্রিম কোর্ট আইন প্রণয়নে সংবিধান মানা হয় কি না এবং নির্বাহী বিভাগের কাজ সংবিধান অনুযায়ী হয় কি না, তা দেখার দায়িত্ব। অন্য দেশে আইনের শাসন, মানবাধিকার ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা আছে বলেই তাদের কথা বলতে হয় না।
জয়নুল আবেদীন আরও বলেন, যদি আইন বিভাগ সংবিধান মোতাবেক আইন প্রণয়ন না করেন বা সংবিধান পরিবর্তন করেন, সুপ্রিম কোর্টের এখতিয়ার রয়েছে সেই আইনকে বাতিল করার। রাষ্ট্রের আইন বিভাগ স্বাধীনভাবে আইন প্রণয়ন করতে পারছে কি না, শাসন বিভাগ আইন যথাযথভাবে পালন করছেন কি না, সে সব বিষয় দেখার এখতিয়ার এবং দায়িত্ব বিচার বিভাগের। তাই আমরা সব মহলকে বিচার বিভাগ সম্পর্কে অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে মন্তব্য করার অনুরোধ করছি।
এ সময় আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সহ-সভাপতি উম্মে কুলসুম রেখা, সহ-সম্পাদক শামীমা সুলতানা দীপ্তি এবং কার্যনির্বাহী সদস্য মো. হাসিবুর রহমান, মহসিনা আক্তার ও শেখ তাহসিন আলী উপস্থিত ছিলেন।
এরপর একইস্থানে বারের আওয়ামীপন্থী আইনজীবীরাও বক্তব্য উপস্থাপন করেন। বারের সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. অজি উল্লাহ বলেন, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সম্পাদকের উদ্যোগে যে সংবাদ সম্মেলন হয়েছে তা অত্যন্ত দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। কারণ, যে সব তুচ্ছ অজুহাতে এ সংবাদ সম্মেলন হয়েছে, তাতে বিচার বিভাগেরই মর্যাদারহানি হয়েছে। এই সংবাদ সম্মেলন রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এ ধরনের সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বার কিংবা বিচার বিভাগের কোনো স্বার্থ রক্ষা হয়নি, হবেও না।
তিনি বলেন, সরকারের কেউই বিচার বিভাগের স্বাধীনতায় কিংবা বিচার বিভাগের কোনো ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এম কোনো বক্তব্য দেন নাই, যাতে আইনজীবী সমিতর সভাপতি ও সম্পাদকের আজকের এ সংবাদ সম্মেলনের প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া আইনজীবী সমিতির সভাপতি এবং সম্পাদক সমিতির কার্যকরি অন্যান্য সদস্যের সঙ্গে কোনো প্রকার আলোচনা ছাড়াই ওই সংবাদ সম্মেলনে আয়োজন করেছিলেন। আমরা তাদের সম্মেলনের তীব্র নিন্দা জানাই।
এ সময় কোষাধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম হিরু, সহ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম এবং কার্যনির্বাহী সদস্য নূরে আলম উজ্জল, কুমার দেবুল দে ও হাবিবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, মে ০২, ২০১৭
ইএস/এসএইচ