ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

নুসরাতকে যৌন হয়রানির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২১ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
নুসরাতকে যৌন হয়রানির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন পুনর্নির্ধারণ

ফেনী: ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফিকে যৌন হয়রানির অভিযোগে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলার বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেছেন আদালত।

বুধবার (১৩ নভেম্বর) ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালত সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ২৯ জানুয়ারি নতুন দিন ধার্য করেন।  

বুধবার মামলার বাদী ও নুসরাতের মা শিরিন আক্তারের সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।

কিন্তু সাক্ষী আদালতে উপস্থিত না থাকতে পারায় বিচারক সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ পুনর্নির্ধারণ করেন।

মামলার বাদীপক্ষের আইনজীবী শাহজাহান সাজু বলেন, চলতি বছরের ২৭ মার্চ আলিম পরীক্ষার্থীদের বিদায় অনুষ্ঠানের দিন মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ-দৌলা পিয়ন নুরুল আমিনকে দিয়ে তার কক্ষে নুসরাতকে ডেকে নিয়ে যান। এরপর নুসরাতকে সিরাজ বলেন, ‘তুই মাদ্রাসার অন্য ছেলেদের সঙ্গে প্রেম করিস, আমার সঙ্গে প্রেম করলে কী হয়? ওরা তোকে কী দেয়? আমি তোরে পরীক্ষার প্রশ্ন দেবো। ’ এমন প্রস্তাবে নুসরাত রাজি না হলে সিরাজ তাকে জড়িয়ে ধরেন এবং স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। পরে নুসরাত কাঁদতে কাঁদতে অধ্যক্ষ সিরাজের কক্ষ থেকে বের হয়, যা নুসরাতের অপর সহপাঠীরা দেখতে পায়।

পরদিন ২৮ মার্চ নুসরাতের মা স্থানীয় ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইয়াসিনকে নিয়ে মাদ্রাসায় যান এবং সিরাজের কক্ষে গিয়ে তাকে তার বেত দিয়ে আঘাত করেন। এক পর্যায়ে বিষয়টি মাদ্রাসা কমিটিকে জানানো হয়। পরে মাদ্রাসা কমিটি পুলিশ ডাকে। পুলিশ গিয়ে সিরাজকে আটক করে। সেদিনই সিরাজকে একমাত্র আসামি করে মামলা দায়ের করেন নুসরাতের মা শিরিন আক্তার। পুলিশ ওইদিনই সিরাজকে জেলহাজতে পাঠায়।

পরে কারাগার থেকে নুসরাতকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যার নির্দেশ দেন সিরাজ। তার অনুসারীরা ৬ এপ্রিল নুসরাতকে মাদ্রাসার ছাদে ডেকে নিয়ে তার গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। চারদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ১০ এপ্রিল হার মানে নুসরাত। সেই হত্যা মামলায় অধ্যক্ষ সিরাজসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে গত ২৪ অক্টোবর মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদ।  

এদিকে যৌন হয়রানির মামলায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) পরিদর্শক শাহ আলম ৮ জুলাই ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে সিরাজের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি জমা দেন।

পরদিন অভিযোগ গঠনের শুনানি হয় এবং অপরাধ আমলে নেন আদালত। আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০০৩ এর ১০ ধারায় ১৭ জুলাই অভিযোগ গঠন করেন। ২৭ অক্টোবর মামলাটির সাক্ষ্য দেওয়ার প্রথম দিন ধার্য্য ছিল। আদালতের অধিবেশন না থাকায় তা পিছিয়ে ১৩ নভেম্বর পরবর্তী দিন ধার্য করা হয়।  

নুসরাতের মা শিরিন বলেন, হত্যা মামলায় তো কুলাঙ্গার সিরাজের ফাঁসি হয়েছে। এই মামলায়ও যেন তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়।

রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুঁলি ফেনী জজ কোর্টের পিপি হাফেজ আহম্মদ জানান, নারী শিশু আইন ২০০৩ এর ১০ ধারায় এ মামলায় আসামির ১০ বছরের শাস্তি হতে পারে। অপরাধের সব তথ্য-প্রমাণ আছে। আমরা আশা করবো, ধারা অনুযায়ী এ মামলায়ও সিরাজের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১৯
এসএইচডি/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।