ঢাকা: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক পদে শিক্ষক সিরাজাম মুনিরাকে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর থেকে তার বকেয়া বেতন ও প্রাপ্য অন্যান্য সুবিধা ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই শিক্ষকের করা এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
আদালতে মুনিরার আবেদনে শুনানি করেন আইনজীবী জ্যেতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম মেম্বার মোহাম্মদ নাসিম মারা যাওয়ার পর ২০২০ সালের ১৩ জুন তাকে কটূক্তি করে ফেসবুকে একটি পোস্ট দেন সিরাজাম মুনিরা। এরপর আবার মুহূর্তেই সেটি মুছেও ফেলেন। কিন্তু ততক্ষণেই স্পর্শকাতর এ পোস্ট নজরে চলে আসে অনেকের। স্ক্রিনশট ছড়িয়ে পড়ে অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।
এরপর ওইদিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আবু হেনা মুস্তফা কামালের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় সিরাজাম মুনিরাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করা হয়। পরবর্তীতে হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়ে তিনি কারামুক্ত হন।
এ মামলা থেকে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর তাকে অব্যাহতি দেন রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক ড. মো. আব্দুল মজিদ।
এরপর সিরাজাম মুনিরা পেশা ও পদে ফিরতে চাইলেও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ‘সাময়িক বরখাস্তের’ আদেশ প্রত্যাহার করেনি।
এ অবস্থায় গত ৩ এপ্রিল হাইকোর্টে রিট করেন সিরাজাম মুনিরা। রিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সাময়িক বরখাস্তের’ আদেশ প্রত্যাহার না করার সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করা হয়।
ওই রিটের শুনানি শেষে আদালত অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ রুল জারি করেন।
রুলে বাংলা বিভাগের প্রভাষক হিসেবে সিরাজাম মুনিরাকে সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না এবং তাকে পুনর্বহাল করে তার বকেয়া বেতন ও অন্যান্য প্রাপ্য সুবিধা দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়েছেন।
চার সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বিবিদ্যালয়ের উপাচার্য, রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আইনজীবী জ্যেতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, রংপুরের সাইবার ট্রাইব্যুনাল মুনিরাকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিলেও তিনি পেশায় ফিরতে পারছেন না। গত ৯ জানুয়ারি মুনিরা পদে ফিরতে আবেদন করলেও তা গ্রহণ করেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মুনিরাকে চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, মামলাটির চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদনে অনাস্থা জানিয়ে আবেদন করা হয়েছে। আবেদনটি এখনও সাইবার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন। তাই তাকে পুনর্বহাল করা যাবে না।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৭, ২০২২
ইএস/আরবি