ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ডা. জুবাইদা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক: আপিল বিভাগ 

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২২০ ঘণ্টা, জুন ১, ২০২২
ডা. জুবাইদা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক: আপিল বিভাগ 

ঢাকা: ২০০৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলা বাতিলের আবেদনের সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জুবাইদা রহমান আইনের দৃষ্টিতে পলাতক ছিলেন। তখন সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ না করে তিনি হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করেছেন।

এ আবেদন হাইকোর্ট নিজ এখতিয়ার ডিঙিয়ে অবৈধভাবে আমলে নিয়ে মামলার কার্যক্রমে রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দিয়েছেন।

জুবাইদা রহমানের মামলা বাতিলে হাইকোর্টের খারিজ করা রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিলের পূর্ণাঙ্গ রায়ে এমন মত দিয়েছেন আপিল বিভাগ। আর ২০১৭ সালে তাকে আত্মসমর্পণে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ বাতিল করেছেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগ হাইকোর্টের ২০০৮ সালের ৮ এপ্রিল দেওয়া ওই রুল ও স্থগিতাদেশকে স্পষ্টত বেআইনি এবং আইন বহির্ভূত বলেছেন।

গত ১৩ এপ্রিল জুবাইদা রহমানের আবেদন খারিজ করে দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি বুধবার পাওয়া যায়। সেদিন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চার বিচারপতির আপিল বেঞ্চ ওই রায় দিয়েছিলেন।

আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। জুবাইদার পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী।

খুরশীদ আলম খান বলেন, আপিল বিভাগ আবেদন খারিজ করে ডা. জুবাইদাকে হাইকোর্টের দেওয়া আত্মসমর্পণের নির্দেশ বাতিল করেছেন। এ রায়ের ফলে তার বিরুদ্ধে এ মামলা চলতে আর কোনো বাধা নেই। এখন আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। তিনি কোনো মামলা চালাতে গেলে আগে আদালতে হাজির হতে হবে।

২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক।  

মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে জুবাইদা রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।  

ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে জুবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন।  

ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন জুবাইদা রহমান।  

রায়ে আপিল বিভাগ বলেছেন, সংবিধানের ২৭ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী আইনের চোখে সব নাগরিক সমান এবং সব নাগরিকই আইনের সমান সুরক্ষা পাওয়ার অধিকারী। সর্বোচ্চ আদালতের বিচারকরা ভয় বা পক্ষপাতহীনভাবে আইন অনুসারে বিচারকাজ করার শপথ নিয়েছেন। মনে রাখতে হবে, বিচার বিভাগকে সবসময় মাথা উঁচু করে করে থাকতে হবে। এমনকি প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও। বিচার বিভাগের এমন কোনো নজির সৃষ্টি করা যাবে না, যা সবার জন্য প্রযোজ্য নয়। প্রত্যেক নাগরিকের আদালত থেকে সমান বিচার পাওয়ার অধিকার রয়েছে। আইনের আদালতের সামনে উঁচু-নিচু বলে কিছু নেই। আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, আবেদনকারী যখন ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৬১ ধারায় মামলা বাতিলের আবেদন করেন তখন তিনি আইনের চোখে পলাতক ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ২২২০ ঘণ্টা, মে ০১, ২০২২
ইএস/এনএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।