ঢাকা: আদালতের অনুমতি নিয়ে রাশিয়ান স্ত্রী আনা প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন অনলাইনে ক্যাসিনো ব্যবসার অভিযোগে গ্রেফতার সেলিম প্রধান।
বুধবার (০৩ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে সেলিমের অবৈধ সম্পদের মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ হয়।
এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে এজলাস কক্ষে রাশিয়ান স্ত্রীর সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন সেলিম প্রধান।
এদিন রেজাউল করিম নামে একজন ব্যাংকার এই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। মোট ৩৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।
এদিকে সেলিম প্রধানের রুশ স্ত্রী আনা প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, আমি তিন দিন আগে এসেছি, এখন দেশেই থাকব। আমাদের সন্তান আছে। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই। আইনের মধ্যে থেকে ন্যায়বিচার চাই।
অবৈধভাবে ৫৭ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের এই মামলায় ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত সেলিম প্রধানের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। সেদিন সাক্ষ্য দেন মামলাটির বাদী দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন। এ মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্ত দুদক মামলাটি তদন্ত করে তার নামে মোট ৫৭ কোটি টাকার অধিক অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
মামলার অভিযোগপত্রে বলা হয়, দুর্নীতি ও ক্যাসিনোর মাধ্যমে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন।
সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এ টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা।
২০১১ সালে মুনাফা করে এক কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে আট কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন, তিনি এ সংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এর আগে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধানকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৩, ২০২২
কেআই/এএটি