নাটোর: নাটোরের গুরুদাসপুরে ১৭ বছর বয়সে আড়াই বছর বয়সী একটি শিশুকে হত্যার দায়ে হৃদয় সরকার নামে এক যুবককে ১০ বছরের বিনাশ্রম আটকাদেশ দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে হৃদয়ের বয়স ২২ বছর।
বুধবার (১৭ আগস্ট) দুপুরে নাটোরের নারী ও শিশু আদালতের বিচারক মুহাম্মদ আবদুর রহিম এ আদেশ দেন।
রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, গ্রেফতারের পর থেকে হৃদয় যে ক’দিন আটক ছিরেন, সে ক’দিন রায়ে ঘোষিত ১০ বছরের আটকাদেশ থেকে বাদ যাবে।
আটকাদেশ প্রাপ্ত হৃদয় সরকার গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়া এলাকার প্রদীপ সরকারের ছেলে। অপরদিকে হত্যার শিকার শিশু দৃষ্টি ঘোষ একই এলাকার মোহন কুমার ঘোষের মেয়ে।
রাষ্ট্রপক্ষের সরকারি আইনজীবী আনিছুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করে বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার সময় হৃদয়ের বয়স ছিল ১৭ বছর। তাই অপ্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে তার বিচার হয়েছে। রায় দেওয়ার সময় হৃদয় প্রাপ্তবয়স্ক হলেও ঘটনার সময়ের বয়স বিবেচনায় নিয়ে শিশু আইন অনুযায়ী তাকে দণ্ড দেওয়া হয়েছে। মামলার অন্য দুই আসামি হচ্ছেন হৃদয়ের বাবা ও মা।
এদিকে মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৫ মে সকাল ১১টায় উপজেলার চাঁচকৈড় বাজারপাড়া এলাকার মোহন কুমার ঘোষের মেয়ে দৃষ্টি নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর না পেয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানান শিশুটির বাবা। পরের দিন মোহনের প্রতিবেশী প্রদীপ সরকারের বাড়িতে একটি টিনের বাক্স থেকে শিশুটির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় পুলিশ প্রদীপ সরকার (৪১), তার স্ত্রী সন্ধ্যা রিতা (৩৫) এবং ছেলে হৃদয় সরকারকে আটক করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা দৃষ্টিকে হত্যার কথা স্বীকার করেন।
এ ঘটনায় শিশুটির বাবা মোহন সরকার বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে গুরুদাসপুর থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা সেই সময়ের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুব্রত কুমার মাহাতো তদন্ত করে হৃদয়ের বিরুদ্ধে হত্যা এবং অন্যদের বিরুদ্ধে হত্যায় সহায়তা ও মরদেহ গুম করার অভিযোগ এসে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। ঘটনার সময় হৃদয় অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় নাটোরের শিশু আদালতে তার এ বিচার হয়।
এর কয়েকদিন আগে নাটোরের জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলায় হৃদয় সরকারের মা সন্ধ্যা রিতাকে (৩৫) সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। একই আদালত দৃষ্টি হত্যায় কোনো সহযোগিতার প্রমাণ না পাওয়ায় হৃদয় সরকারের বাবা প্রদীপ সরকারকে বেকসুর খালাস দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৫ ঘণ্টা, আগস্ট ৮, ২০২২
এসআই