ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিন উপলক্ষে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আয়োজিত অনুষ্ঠান থেকে গ্রেফতার শহিদুজ্জামান রাজিব (৩৪) নামে এক শিক্ষানবিশ আইনজীবীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুব আহমেদ রিমান্ডের এই আদেশ দেন।
এ দিন আসামিকে আদালতে হাজির করে ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক আরিফুল আলম অপু।
রিমান্ড আবেদনে বলা হয়, আসামির কাছ থেকে দুটি কাঠের বাটযুক্ত চাকু উদ্ধার করা হয়েছে, যার মাধ্যমে তিনি সুপ্রিম কোর্ট এলাকায় অন্তর্ঘাতমূলক ও ধ্বংসাত্মক কার্যের পরিকল্পনা করেন। এই কাজের পেছনে কে বা কারা ইন্ধনদাতা ও পরিকল্পনাকারী রয়েছে, তা বের করতে আসামিকে ৫ দিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন।
আসামিপক্ষে অ্যাডভোকেট এ এইচ এম মঞ্জুরুল কবীর (মাসুদ দরজী) ও অ্যাডভোকেট মো. পারভেজ রিমান্ড বাতিল করে জামিন আবেদন করেন। শুনানিতে তারা বলেন, আসামি একজন শিক্ষানবিশ আইনজীবী। তিনি বার কাউন্সিলের আইনজীবী তালিকাভুক্তির এমসিকিউ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন। তিনি মানিকগঞ্জের দেবেন্দ্র কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলেন। আওয়ামী আদর্শে বিশ্বাসী হওয়ায় আবেগ তাড়িত হয়ে সরল বিশ্বাসে সুপ্রিম কোর্ট বারের আয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন।
তারা আরও বলেন, বাড়ি থেকে ঢাকার বাসায় গৃহস্থালির কাজের জন্য তিনি কাপড়ের ব্যাগে ছুরি নিয়ে আসেন। তার সঙ্গে থাকা সাদা কাপড় তিনি আইনজীবী হিসেবে পরিধানের জন্য শার্ট বানাতে নিয়ে আসছিলেন। অথচ উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে নাশকতার ঘটনা সাজিয়ে সাদা কাপড়কে কাফনের কাপড় বলে প্রচার চালানো হয়। আসামি সরল বিশ্বাসে ব্যাগসহ অনুষ্ঠানে যান। কোনো নাশকতার পরিকল্পনা ছিল না। তাই আসামির রিমান্ড বাতিল করে জামিনের প্রার্থনা করছি।
শুনানি শেষে বিচারক দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
বুধবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির শহীদ শফিউর রহমান মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্মদিনের অনুষ্ঠান চলছিল। যে অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ. ম. রেজাউল করিম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপসসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানস্থল থেকে নাশকতার পরিকল্পনার অভিযোগে আসামি শহিদুজ্জামান রাজিবসহ ৫ জনকে আটক করেন আইনজীবী ও বারের স্টাফরা। এ সময় রাজিবের কাছে থাকা ব্যাগ থেকে দুটি ছুরি ও সাদা কাপড় পাওয়া যায়। এরপর রাজিবসহ ৫ জনকে আটক করে শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বাকি চারজনকে ছেড়ে দিয়ে রাজিবের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্ট বারের স্টাফ রবিউল হাসান বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের ১৫(৩) ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৯, ২০২২
কেআই/এমজেএফ