ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি: ওয়াসার এমডি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি: ওয়াসার এমডি

ঢাকা: ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী তাকসিম এ খান বলেছেন, আমার জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি।

বুধবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর কাওরানবাজারে ওয়াসা ভবনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

তাকসিম এ খান বলেন, ‘ঢাকা ওয়াসায় ডিজিটাইজেশন করায়, দাপ্তরিক কাজে স্বচ্ছতা নিশ্চিতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ায় এবং দুর্নীতির দায়ে অনেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ায় কিছু মানুষ আমার বিপক্ষে প্রমাণ ছাড়া মিথ্যা অভিযোগ করে আসছে। অথচ কোনো সময় একটা অভিযোগেরও সত্যতা প্রমাণ করতে পারেনি। ’

তিনি বলেন, যদি আইনের ব্যত্যয় হয়ে থাকে, তবে আইন অনুযায়ী কেন ব্যবস্থা নেওয়া হলো না। যদি গতকালের ঘটনায় আইনের ব্যত্যয় হয়ে থাকে, তবে আগামী এক-দুই মাসের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাঁচ বছরের মধ্যে যদি আইন ভাঙা হয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা কেন নেওয়া হলো না? আইন সঠিকভাবেই মানা হচ্ছে। কোথাও আইন ভাঙা হয়নি।

ওয়াসার কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘২০১০ সালের রোডম্যাপে আমাদের ছিল জিরো টলারেন্স অ্যাগেইনস্ট করাপশন। বহু কর্মকর্তা-কর্মচারীকে অনৈতিক কার্যকলাপ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা হয়েছে। যারা অবৈধ কাজ করতেন, তাদের এই কাজের সুযোগ বন্ধ করে দিয়েছি। তারা কি আমার ওপর সন্তুষ্ট থাকবেন? অসাধু কর্মকর্তারাই চেষ্টা করছেন আমাকে হেয় করতে এবং ওয়াসার পদ থেকে সরিয়ে দিতে। ’

তিনি বলেন, ‘ওয়াসার দায়িত্ব আমি নেওয়ার আগে কী পরিস্থিতি ছিল আর বর্তমানে কী পরিস্থিতি, সেটা সবার জানা। ২০০৯ সালের আগে বছরের একটা সময় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনীকেও দায়িত্ব দেওয়া লাগত। ২০১০ সালের পর আর এমন পরিস্থিতি হয়নি। দায়িত্ব পাওয়ার পর ঢাকা ওয়াসা পানির সিস্টেম লস বা অপচয় রোধের দিকে নজর দিই। সিস্টেস লস দূর করতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়েছে। কারণ আগে রাজধানীর বস্তি এলাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঞ্চলে ওয়াসার পাইপলাইন সহজেই লিকেজ হয়ে যেত। সেই লিকেজ পাইপলাইন দিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানি অপচয় হয়েছে। এই সিস্টেম লস ঠেকাতে পানির বিতরণ কার্যক্রম বা নেটওয়ার্ক পরিবর্তন করা হয়। ফলে বর্তমানে পানির অপচয় রোধ করা সম্ভব হয়েছে, যেখানে এশিয়ার অন্যান্য দেশে গড়ে ৪০ শতাংশ পানির সিস্টেম লস হয়। এখন ঢাকা ওয়াসায় মাত্র ৫ শতাংশ পানির সিস্টেম লস হচ্ছে। এমন ব্যবস্থাপনা ইউরোপের দেশ ছাড়া অন্য কোনো দেশে নেই। ’

তিনি বলেন, ‘ওয়াসার বিভিন্ন প্রকল্পে তিন হাজার ২০০ কোটি টাকা দুর্নীতির অভিযোগ করা হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য। প্রজেক্টসংক্রান্ত অভিযোগ সবই অসত্য। যদি দুর্নীতি হয়েই থাকে, অনুসন্ধান করে কী করলেন? এই অভিযোগটি ২০১৫ সালের। গত সাত বছরে কোনো তদন্ত ও অনুসন্ধানে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। কোনো মামলাও হয়নি। কোনো প্রজেক্টের সঙ্গে ওয়াসার এমডির সম্পর্ক থাকে না। দাতা সংস্থা সব দেখভাল করে। ’

তাকসিম এ খান বলেন, ‘আমি আমার জীবনে একটি টাকাও হারাম খাইনি। গর্বের সঙ্গে, আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি। যত অভিযোগ আছে, এতে ভয়ের বা লজ্জার কিছু নেই। আপনারা বুঝবেন। এগুলো ওয়াসার অসাধু কর্মকর্তারাই করছেন। ’

এর আগে, দুদকের দেওয়া এই প্রতিবেদন দেখে ওয়াসার এমডির নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে করা রিট গত মঙ্গলবার নিষ্পত্তি করে আদেশ দেন হাইকোর্ট।  

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৭, ২০২২
এমএমআই/আরএইচ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।