ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

‘রিমোর্ট কন্ট্রোল’ জাহাজ তৈরি করলেন আকাশ

ছোটন সাহা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭৪০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৮, ২০২২
‘রিমোর্ট কন্ট্রোল’ জাহাজ তৈরি করলেন আকাশ রিমোর্ট কন্ট্রোল জাহাজ

ভোলা: রিমোর্ট কন্ট্রোল রোবোটিস্ট 'স্পেশাল অপারেশন মনিটরিং বোট' বা যুদ্ধ জাহাজ তৈরি করেছেন ভোলার চরফ্যাশনের নুরে বেলায়েত আকাশ নামে এক যুবক। মাত্র ২৮ দিনের প্রচেষ্টায় তিনি এ জাহাজটি তৈরি করেন।

 

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার মধ্যে বাতাস এবং ঢেউ প্রতিরোধ করে ঘণ্টায় দুই শতাধিক কিলোমিটার বেগে চলতে পারবে জাহাজটি। এটি ওয়াটার প্রুফ হওয়ায় ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা নেই। আর হেলে পড়লেও তা মুহূর্তের মধ্যে নিজে নিজেই পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসবে।  

সর্বোচ্চ গতিসম্পন্ন এ জাহাজটিকে নৌবাহিনীর সদস্যদের জন্য নির্মাণ করেছেন বলে জানান আকাশ। এটির বাস্তব রূপ দেওয়া গেলে প্রযুক্তিতে আরও কয়েক ধাপ এগিয়ে যাবে বলেও মনে করেন তিনি। তার আবিষ্কৃত এ জাহাজ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন উৎসুক জনতা।

সরকারের সহযোগিতা পেলে ভবিষ্যতে আরও প্রযুক্তিনির্ভর জাহাজ নির্মাণের ইচ্ছে রয়েছে তার।  

ভোলার চরফ্যাশন উপজেলার ওসমানগঞ্জ ইউনিয়নের হাসানগঞ্জ গ্রামের প্রবাসী আবু তাহের সিরাজের ছেলে নুরে বেলায়েত আকাশ। তিনি তার নিজ ঘরের একটি কক্ষে মাত্র ২৮ দিনে এ জাহাজটি নির্মাণ করেন।  
জাহাজ নির্মাণে বাস্তব ধারণা না থাকলেও ইউটিউব এবং গুগল দেখে নিজের মেধা খাটিয়ে জাহাজটি নির্মাণ করেন তিনি।
 
আকাশ বলেন, স্যানসোর, লাইভ ক্যামেরা ও স্যাটেলাইটসহ নানা প্রযুক্তিনির্ভর রিমোর্ট কন্ট্রোল সিস্টেমের এই জাহাজটি দেখলেই অনুমান করা যায় এ জাহাজের দুর্বার গতিতে চলার ক্ষমতা সম্পর্কে। যা যেকোন দুর্যোগের মধ্যেও স্বাভাবিক গতিতে চলতে পারবে বাধা অতিক্রম করেই। জাহাজটি ১০ কিলোমিটার অদূরের শত্রুপক্ষ বা বাধা-বিপত্তি গতিবিধি নজরদারি করতে পারবে এবং সংকেত দেবে। এছাড়াও রয়েছে ড্রোন ফ্লাই করার ব্যবস্থাও। যার মধ্যে দূরের অবস্থান নির্ণয় করা যাবে।

আকাশ আরও বলেন, দেশের প্রতি ভালোবাসা দেখিয়ে নৌবাহিনীর সদস্যদের নিরাপত্তা, টহল অভিযান ও যুদ্ধে ব্যবহারের জন্য এ ধরনের জাহাজ সহায়তা করবে বলে আমি মনে করি। আমার তৈরি এমন জাহাজ পৃথিবীতে দ্বিতীয়টা নেই। এটিই প্রথম প্রযুক্তিনির্ভর জাহাজ। এটি নাবিকবিহীন রিমোর্ট কন্ট্রোল এবং নাবিক নিয়েও পরিচালনা করা যাবে।  

আকাশ মনে করছেন সরকারি সহায়তা পেলে এ জাহাজের বাস্তব রূপ দিতে পারবেন যা পৃথিবীতে হয়ে উঠবে বিরল।  

এদিকে আকাশের তৈরি এ জাহাজ দেখতে ভিড় জমাচ্ছেন মানুষ। তার এ আবিষ্কারের প্রশংশা করেন তারা।
স্থানীয় এলাকার বাসিন্দা মনজুর, মো. সুমন ও শেখ সাদি বলেন, আকাশের জাহাজ তৈরির খবর পেয়ে আমরা তা দেখতে এসেছি, আমাদের অনেক ভালো লেগেছে। আমাদের এ নতুন বিজ্ঞানীর প্রতিভার মূল্যায়ন করা দাবি জানাই।  

আকাশের তৈরি জাহাজটি যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে আনতে সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন চরফ্যাশন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল নোমান।  

তিনি বলেন, মেরিন জাহাজটি যিনি নির্মাণ করেছেন এ জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। যদি মনে হয় এটি উপযুক্ত, তাহলে কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে তাকে সহযোগিতা করা হবে।

আকাশ বিজ্ঞান শাখায় উচ্চ মাধ্যমিক পাস করে ২০২০ সালে বরিশাল মেরিন একাডেমিতে ভর্তি হয়ে ইঞ্জিন প্রশিক্ষণ কোর্স করলেও জাহাজ প্রকৌশল সম্পর্কে বাস্তব অভিজ্ঞতা নেই। তবুও জাহাজ নির্মাণ প্রকৌশল এবং ইঞ্জিন সম্পর্কে প্রয়োজনীয় জ্ঞান রয়েছে তার। জাহাজের এ ডেমোটি বাস্তব রূপ দেওয়া সম্ভব বলে মনে করছেন তিনি।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৫ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৮, ২০২২
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।