ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

দুই বছর বন্ধ সেতুর নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
দুই বছর বন্ধ সেতুর নির্মাণ কাজ, দুর্ভোগে এলাকাবাসী

পিরোজপুর: পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় নকশা জটিলতায় দুই বছর ধরে একটি সেতুর নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।  উপজেলার নলী জয়নগর গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী বরগুনার পাথরঘাটার নাচনাপাড়া রশিদিয়া বন্দর বাজার সংলগ্ন হলতা নদীতে নির্মাণাধীন ওই সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী কয়েকটি গ্রামের মানুষ হাট বাজারে যাতায়াতের জন্য চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, মঠবাড়িয়া উপজেলার নলী জয়নগর গ্রামের হলতা নদীর ওপর ৩৯ মিটার দৈর্ঘের গার্ডার সেতু নির্মাণের জন্য ২০১৯ সালের ১৭ নভেম্বর পিরোজপুরের আবির অ্যান্ড সর্দার (জেবি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেওয়া হয়। সেতুটি নির্মাণ কাজের মেয়াদ ছিল ১৮ মাস। ২০২০ সালের শেষ দিকে সেতুটির নির্মাণ কাজ ৩৫ ভাগ শেষ হওয়ার পর দুই বছর ধরে কাজ বন্ধ রয়েছে।

আবির অ্যান্ড সর্দার (জেবি) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী আহসান হাফিজ বলেন, সেতুর দুই পাশের পাইলের কাজ শেষ। এরপর নদীর মধ্যে পায়ার (খুঁটি) নির্মাণ করতে গিয়ে দেখি পায়ার তৈরির জন্য স্থায়ী কেজিং (পায়ারের চারপাশে লোহার পাইপের বেষ্টনী) দরপত্রে ধরা হয়নি। এ কারণে সেতুর নির্মাণ কাজ ফেলে রেখে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের পিরোজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে স্থায়ী কেজিং এর টাকা বরাদ্দ দেওয়ার জন্য আবেদন করেছি। টাকা বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করব।

সরেজমিনে দেখা যায়, মঠবাড়িয়া উপজেলার সাপলেজা ইউনিয়ন বলেশ্বর নদ থেকে শুরু হয়ে হলতা নদী মঠবাড়িয়া ও পাথরঘাটা উপজেলার নাচনাপাড়া ইউনিয়নের মধ্যে দিয়ে চলে গেছে। হলতা নদীর দুই তীর ভরাট হয়ে নদী সরু হয়ে গেছে। নাচনাপাড়া রশিদিয়া বন্দর বাজার সংলগ্ন সেতু কাজ শুরু হয়ে থেমে আছে। নদীর দুই তীরে শুধু সেতুর পাইলের কাজ করা হয়েছে। নির্মাণাধীন সেতুর পাশে সাঁকো তৈরি করে মানুষ চলাচল করছেন।

উপজেলার নলী জয়নগর গ্রামের মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের গ্রামসহ আশপাশের গ্রামগুলোর কৃষকেরা কৃষিপণ্য নিয়ে হলতা নদীর সেতুটি পার হয়ে নাচনাপাড়া বাজারে যাতায়াত করতেন। এছাড়া নাচনাপাড়া বাজারে প্রতি সপ্তাহের শনিবার ও বুধবার গরু ছাগলের হাট বসে। পুরানো সেতুটি ভেঙে নতুন সেতু করার পর কৃষক ও গরু ব্যবসায়ীদের অনেক পথ ঘুরে বাজারে যেতে হচ্ছে। দীর্ঘ দুই বছর ধরে সেতুর কাজ বন্ধ থাকায় গ্রামবাসীর দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

স্থানীয় অটোরিকশা চালক মো. মিজান মিয়া বলেন, মঠবাড়িয়ার সাপলেজা, নলী, নলী জয়নগরসহ আশপাশের গ্রামগুলোর মানুষ এ সেতু পার হয়ে নাচনাপাড়া বাজার, কাকচিড়া লঞ্চঘাট, পাথরঘাটা ও বরগুনায় যাওয়া আসা করেন। এখন সেতু না থাকায় সাঁকো পার হতে হয়। সাঁকো দিয়ে যানবাহন চলাচল করতে পারে না।  

মঠবাড়িয়ার নলী গ্রামের মোটরসাইকেল চালক ইমাজ উদ্দিন বলেন, আমরা ভাড়া নিয়ে সেতু পার হয়ে বিভিন্ন এলাকায় যেতাম। নতুন করে সেতু নির্মাণের জন্য পুরানো সেতুটি ভেঙে ফেলার পর তিন বছর ধরে ভোগান্তিতে রয়েছি। ভাড়া নিয়ে ওপরে (পাথরঘাটার নাচনাপাড়া) যেতে পারছি না। যাত্রীদের সেতুর কাছে নেমে নদী পার হয়ে অন্য গাড়ি করে গন্তব্যে যেতে হয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) মঠবাড়িয়া উপজেলা প্রকৌশলী মো. জিয়ারুল ইসলাম বলেন, করোনা মহামারি ও অর্থাভাবে সেতুটির কাজ নিদিষ্ট সময়ে শেষ করা যায়নি। এরপর দেখা গেল নদীর মধ্যে পায়ার তৈরির জন্য স্থায়ী কেজিং আইটেম দরপত্রে ধরা হয়নি। এসব কারণে সেতুটির নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। আমরা স্থায়ী কেজিং এর জন্য পুনরায় নকশা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। নকশা অনুমোদন ও অর্থ বরাদ্দ পেলে কাজ শুরু করা হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১০৫২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৭, ২০২৩
এসএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।