রাজশাহী থেকে: দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রাজশাহী আসবেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। তার আগমনকে ঘিরে আমের রাজধানী রাজশাহী এখন পরিণত হয়েছে উৎসবের নগরীতে।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পর রোববার (২৯ জানুয়ারি) রাজশাহী সফরে আসছেন টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রাজশাহী মাদরাসা মাঠে রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগদানের পাশাপাশি শেখ হাসিনা সারদায় পুলিশ একাডেমিতে একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন।
মাদরাসা মাঠের জনসভা থেকে রাজশাহীর ৩৩ উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
রাজশাহী মহানগরের মাদরাসা মাঠ, রেলগেট কামরুজ্জামান চত্বর, সিরোইল বাস টার্মিনাল, ভদ্রা, তালাইমারী, আলুপট্টি, কুমারপাড়া, সাহেববাজার জিরোপয়েন্ট, সোনাদীঘির মোড়, ফায়ার ব্রিগেড মোড়, সিনঅ্যান্ডবির মোড়, লক্ষ্মীপুর মিন্টু চত্বর, টমটম চত্বর, বর্ণালীর মোড় এলাকা ঘুরে দেখা যায় গোটা নগরীতে এখন সাজ সাজ রব।
প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে ঘিরে ব্যানার-ফেস্টুন- তোরণে ছেয়ে গেছে গোটা শহর। শহরের গুরুত্বপূর্ণ জায়গা, পার্ক, স্থাপনা, ভবন, দপ্তরগুলোকে সাজানো হয়েছে বিশেষ ভাবে।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি মেগাপ্রজেক্টসহ সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে ব্যানার-ফেস্টুনে।
প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে পরিচ্ছন্ন শহর হিসেবে পরিচিত রাজশাহীকে করা হয়েছে আরও ঝকঝকে-তকতকে।
মাদ্রাসা ময়দানে আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের প্রতীক 'নৌকা'র আদলে প্রস্তুত করা হচ্ছে বিশাল মঞ্চ। বিশাল মঞ্চের পাশাপাশি মাদরাসা ময়দানকে বিভিন্ন পোস্টার-প্ল্যাকার্ডে সাজানো হয়েছে।
সমাবেশ স্থল ঘিরে গড়ে তোলা হয়েছে কয়েক স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। নির্দিষ্ট কয়েকটি গেট দিয়ে আর্চওয়ের ভেতর দিয়ে নিরাপত্তা তল্লাসির মধ্য দিয়ে মাঠে প্রবেশ করতে হবে নেতাকর্মীদের।
শুধু মাদরাসা ময়দান ছাড়াও গোটা রাজশাহী নগরীতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পোশাকধারী আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সাদা পোশাকে নিরাপত্তার কাজ করছেন বিপুল সংখ্যক সদস্য।
এদিকে শেখ হাসিনার আগমন এবং জনসভাকে সফল করতে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে কাজ করছেন জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতারা। জনসভায় ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতি নিয়েছেন তারা।
প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত নেতা-কর্মীরা। উৎসবের আমেজে আছেন তারা। খণ্ড খণ্ড মিছিল, লিফলেট বিলিসহ মানুষকে জনসভায় আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছেন তারা। মহল্লায় মহল্লায় চলছে মাইকিং। পাশাপাশি নিজেদের সকল নেতাকর্মীর জনসভায় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে চালাচ্ছেন সাংগঠনিক তৎপরতা।
ব্যাপক জনসমাগমের প্রস্তুতির কথা জানিয়ে শনিবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে রাজশাহী মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও রাজশাহী সিটি মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রাজশাহীর পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলায় গিয়ে সভা-সমাবেশ ও প্রচার মিছিল করা হয়েছে। সব জায়গাতেই আমরা ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। রাজশাহীতে প্রধানমন্ত্রীর জনসভা স্মরণকালের সর্ববৃহৎ হবে। সবার কাছেই জনসভাটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই জনসভায় প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য রাখবেন।
খায়রুজ্জামান লিটন বলেন, রোববারের জনসভায় ৭ লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেজন্য সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। পুরো মহানগরী জনসভার মাঠে পরিণত হবে।
ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, জনগণ ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। মাদরাসা ময়দানের বাইরে আশাপাশের এলাকাগুলোও লোকে লোকারণ্য হয়ে যাবে আশা করছি।
এর আগে ২০১৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি রাজশাহীর এ ঐতিহাসিক মাদরাসা ময়দানেই জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশ থেকে নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এর আগে ২০১৩ সালের ৫ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর বাগমারায় ও ২০১৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি চারঘাটে আওয়ামী লীগের জনসভায় এসেছিলেন তিনি। এছাড়া ২০১৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর রাজশাহীর পবার হরিয়ানের বিশাল জনসভায় যোগ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৮, ২০২৩
এসএস/এমইউএম/এসআইএস