ফরিদপুর: ফরিদপুরে চালককে হত্যা করে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক ছিনতাইয়ের ঘটনায় দুইজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) দুপুরের দিকে ফরিদপুর পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান তাদের গ্রেপ্তারের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেছেন।
পুলিশ সুপার (এসপি) মো. শাহজাহান বলেন, হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগে মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার রাজাচর গ্রামের মো. আজিজুল মুন্সী (৩২) ও একই উপজেলার শরীফকান্দি গ্রামের মো. হৃদয় মাতুব্বরকে (২৫) গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (২৩ আগস্ট) রাতে ঢাকা ও শিবচর উপজেলা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে, গত ২৫ জানুয়ারি ভোরে ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার চরমানাইর ইউনিয়নের রহমতউল্যাহ মাতুব্বরের কান্দি গ্রামে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ের একটি সরিষা ক্ষেত থেকে শাহজাহান বেপারী (৪০) নামে এক ইজিবাইক চালকের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গত ০১ ফেব্রুয়ারি নিহতের চাচাতো ভাই আক্কাস আলী বাদী হয়ে ‘অজ্ঞাতনামা আসামিরা গলায় গামছা ও মাফলার দিয়ে পরিকল্পিতভাবে শ্বাস রোধ করে লাশ গুম করার দায়ে’ একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন ফরিদপুরের সদরপুর থানায়।
সংবাদ সম্মেলনে এসপি মো. শাহজাহান বলেন, গত ২৪ জানুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ওই দুই ব্যক্তিসহ মোট তিনজন শাহজাহানের ইজিবাইকটি বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরার জন্য ভাড়া নেন। রাত দেড়টার দিকে তারা ফরিদপুরের সদরপুরের চরমানাইর ইউনিয়নের রহমতউল্যাহ মাতুব্বরের কান্দি গ্রামে আড়িয়াল খাঁ নদের পাড়ে একটি সরিষা ক্ষেতে নিয়ে গলায় গামছা ও মাফলার পেঁচিয়ে ইজিবাইক চালক শাহজাহানকে হত্যা করে তার ইজিবাইকটি নিয়ে চলে যান। পরে হত্যাকারীরা ইজিবাইকের পাঁচটি ব্যাটারি খুলে একটি অটোভ্যানে করে ভাঙ্গা জামে মসজিদ সংলগ্ন জনৈক আব্দুল শেখের ব্যাটারির দোকানে ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। ইজিবাইকটি গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরের ফতেপট্টি এলাকা থেকে উদ্ধার করে। পুলিশ গত ৮ ফেব্রুয়ারি ব্যাটারি ক্রেতা আব্দুল শেখকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে।
এসপি শাহজাহান জানান, ব্যাটারি ক্রেতা আব্দুল শেখের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী গত ২৩ আগস্ট ঢাকা ও শিবচরে অভিযান চালিয়ে আজিজুল ও হৃদয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। অটোভ্যান চালক মুকসুদপুরের ফতেপট্টি আয়নাল শেখ আসামিদের শনাক্ত করেন। আসামিরা তার ভ্যানে করে ইজি বাইকের ব্যাটারি ফরিদপুরের ভাঙ্গায় এনে বিক্রি করেছিলেন।
পুলিশ সুপার শাহজাহান বলেন, আজিজুল ও হৃদয়কে বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়। তারা এ হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি না দিলে তাদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।
এ সময় অন্যদের মধ্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মোহাম্মদ ইমদাদ হুসাইন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও তদন্ত) শৈলেন চাকমা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. সালাহউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ভাঙ্গা সার্কেল) তালাত মাহমুদ শাহান শাহ, ট্র্যাফিক পরিদর্শক (টিআই) তুহিন লস্কর, সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুন আল রশিদ, এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ওহিদুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১০৫ ঘণ্টা, আগস্ট ২৪, ২০২৩
এসআরএস