ঢাকা, রবিবার, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ০২ মার্চ ২০২৫, ০১ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থ পরিপন্থী ধারা বাতিলসহ ৬ দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৩
ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থ পরিপন্থী ধারা বাতিলসহ ৬ দাবি ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থ পরিপন্থী ধারা বাতিলসহ ছয় দাবি জানিয়েছে চরাঞ্চল ও নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও কৃষিস্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটি।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংগঠনটির নেতারা এ দাবি জানান।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, দেশের নদীভাঙা অঞ্চলে বসবাসকারী তিন কোটি মানুষের জান-মালের ঝুঁকি নিয়ে সব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে অনাবাদযোগ্য উঁচু-নিচু জমি আবাদযোগ্য করে দেশের কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ ও সব গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল আন্দোলনে বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে, কৃষকের ভূমির অধিকার প্রতিষ্ঠায় যুগযুগ ধরে লড়াই করেছে। অথচ স্বাধীন দেশে আইনের মারপ্যাঁচে আজ চরের মানুষ তার পৈত্রিক জমির প্রজাস্বত্ব হারিয়েছে।

তারা বলেন, ভূমি অফিস, জেগে উঠা চরে পূর্বতন মালিক বা তার উত্তরাধীকারকে জমি খারিজ দেয় না। বিগত সময়ে বিভিন্ন জরিপে নিজ নামে জমি-জমা রেকর্ড করা স্বত্বেও ভূমি অফিস খাজনাদি না নেওয়ায় এসব অঞ্চলের মানুষ জমি-জমা বিক্রি করতে পারছে না। এতে এসব অঞ্চলের মানুষ জমি-জমা থাকা সত্ত্বেও প্রয়োজনে বিক্রি করতে পারছে না।

বক্তারা আরও বলেন, নদী ভাঙনে সর্বস্ব হারানো মানুষের ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের কোনো ব্যবস্থা নেই। বর্তমানে বিশেষজ্ঞ সমীক্ষা ছাড়াই সারাদেশে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে নদী খনন করার নামে চলছে বালু ব্যবসার মহোৎসব। বালু মাফিয়াচক্র ড্রেজিংয়ের নামে কৃষকদের কায়েমি জমি কেটে নিচ্ছে। নদীর পাড় সংরক্ষণও ঢালু সঠিক মাপমতো না করায় নদী খননের পরে জমিজমা ভেঙে আবার নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে। নদী ভাঙন রোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এসব ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ক্ষতিপূরণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা নেই। তাই নদীভাঙন অঞ্চলের মানুষের অস্তিত্ব রক্ষায় লড়াই সংগ্রামে নামতে হয়েছে।

তাদের দাবিগুলো হলো-

১। ভূমি আইন ২০২৩ এ 'যখনই চর জেগে উঠবে তখনই চলতি কর পরিশোধ সাপেক্ষে প্রজাস্বত্ব বহাল হবে' এমন বিধান রেখে অবিলম্বে সংসদে আইন পাশ করা। ভূমি আইনে কৃষক স্বার্থের পরিপন্থী ধারা বাতিল করা।

২। চরাঞ্চালে ডিএস, সিএস, এসএ, আরএস রেকর্ড ও চিটার ভিত্তিতে প্রজাস্বত্ব বহাল ও খাজনা খারিজ চালু করা।

৩। মাদারগঞ্জে তিন ফসলি জমিতে সৌর বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করে অন্যত্র স্থানান্তর করা।

৪। বিনা ক্ষতিপূরণে কৃষকের জমিতে কোনো প্রকল্প করা যাবে না, তিন ফসলি জমিতে প্রকল্প নেওয়া বন্ধ করা। প্রকৃত কৃষকদের সাশ্রয়ী মূল্যে সার, বীজ, কীটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণ দেওয়া।

৫। নদী ভাঙনরোধে ও জলাবদ্ধতা নিরসনে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে। নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষককে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা।

৬। চরাঞ্চল, বীর অঞ্চল ও শহরে ভিন্ন ভিন্ন জমির সিলিংএর বন্দোবস্ত রেখে সারাদেশে গ্রাম-শহরে ব্যক্তিগত স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির সিলিং পুনঃনির্ধারণ করা। উদ্বৃত্ত সম্পত্তি ভূমিহীন-আশ্রয়হীন মানুষের মধ্যে ভাগ করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৫০৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৩
এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।