ঢাকা, রবিবার, ১৬ ফাল্গুন ১৪৩১, ০২ মার্চ ২০২৫, ০১ রমজান ১৪৪৬

জাতীয়

কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা-সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৭, ২০২৩
কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা-সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৩ হাজার টাকা ঘোষণা এবং কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে এই খাতে কর্মরত শ্রমিকরা।

শনিবার (০৭ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক শ্রমিক সমাবেশে তারা এ দাবি জানান।

বিশ্ব শোভন কর্ম দিবস-২০২৩ উপলক্ষে যৌথভাবে এই শ্রমিক সমাবেশের আয়োজন করে গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন এবং ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টার।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, শ্রমিকদের মেহনতের ওপর দিয়েই তৈরি হয় উঁচু উঁচু ইমারত। অর্থনীতির চাকা তরতর করে ঘুরে তাদের ঘামে ভেজা শ্রমের ফলে। দেশ এগিয়ে যায়, প্রযুক্তি হয় উন্নত। এগিয়ে যায় সভ্যতা। কিন্তু যাদের শ্রমে-ঘামে এই উন্নতি, দিন শেষে তারাই থাকে অবহেলিত, বঞ্চিত। আমাদের অর্থনীতিতে যে দুটি সেক্টর বেশি অবদান রাখে, সে দুটি হলো পোশাকশিল্প ও রেমিট্যান্স। কিন্তু অর্থনীতিতে অবদান রেখেও তারা অবহেলার শিকার। অনেককে বলতে শোনা যায়, গার্মেন্টসে কাজ নিলে বোঝা যায়, পৃথিবী কতটা কঠিন!

তারা বলেন, পোশাকশিল্প খাতে বাংলাদেশ ভালো অবস্থানে রয়েছে, যা নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য গৌরবের। কিন্তু যাদের শ্রমের ফলে আজকের এ সাফল্য, তাদের প্রতি অবহেলা, ন্যায্য পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা না দেওয়া কখনো কাম্য নয়। বর্তমানে প্রতিটি নিত্যপণ্যের মূল্য অস্বাভাবিক মাত্রায় বেড়ে যাওয়াসহ দৈনিক জীবনযাপনের সামগ্রিক ব্যয় প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ৬৫ শতাংশ বেসিক, বছরে কমপক্ষে ১০ শতাংশ মজুরি বাড়ানো এবং সর্বোচ্চ পাঁচটি গ্রেড কাঠামোয় গার্মেন্টস শ্রমিকদের ন্যূনতম মাসিক মজুরি ২৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা উচিত।

বক্তারা আরও বলেন, এসডিজি অর্জনের অভীষ্ট লক্ষ্যসমূহের মধ্যে শোভন কর্মপরিবেশ নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আমরা কি সে লক্ষ্য পূরণ করতে পারছি? উন্নয়নের জন্য যারা নিরলস কাজ করে যাচ্ছে, তারাই যদি ভালোভাবে জীবনযাপন করতে সমর্থ না হন, তাহলে সে উন্নয়ন কতটা টেকসই হবে, সেটাই বড় প্রশ্ন। আজ নারীরা কর্মক্ষেত্রে যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয় অনেক শ্রমিক। ঈদে কিংবা উৎসবে অনেককে পরিবার থেকে দূরে থাকতে হয়। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে মধ্যপ্রাচ্যসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে যারা শ্রম দিয়ে দেশে রেমিট্যান্স নামক সোনার হরিণ পাঠান, দিন শেষে তাদেরই পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হয়। আমরা যদি রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সম্মান করতে ভুলে যাই, একদিন তারাও আমাদের ভুলে যাবে।

বক্তারা বলেন, দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাক এটাই সবার চাওয়া। এই অর্থনীতি এগিয়ে নিতে যারা দিনরাত মেহনত করে যাচ্ছে তাদের কথা ভুলে গেলে চলবে না। তাদের সম্মান করতে হবে, তাদের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। শ্রমিকদের জন্য কর্মপরিবেশ সুন্দর ও নিরাপদ করতে হবে। কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা-সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত হলে এসডিজির অভীষ্ট লক্ষ্যে অর্জিত হবে। আমাদের সব ধরনের কাজকে সম্মান করতে হবে। দৃষ্টিভঙ্গিতে আনতে হবে পরিবর্তন।

গ্রিন বাংলা গার্মেন্টস ওয়ার্কার্স ফেডারেশন ও ন্যাশনাল ওয়ার্কার্স ইউনিটি সেন্টারের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মো. ইলিয়াসের সভাপতিত্বে সমাবেশে এ সময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি সুইটি বেগম, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফরিদ উদ্দীন, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রুজিনা আক্তার সুমি, দপ্তর সম্পাদক রাবেয়া ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা নুর জাহান, মোসাম্মৎ খাদিজা বেগম, সালমা, জোসনা, আমেনা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০২৩
এসসি/এসআইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।