ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ আষাঢ় ১৪৩১, ১৮ জুন ২০২৪, ১০ জিলহজ ১৪৪৫

জাতীয়

গাছ আমাদের প্রাণ, বেশি করে গাছ লাগান: প্রধানমন্ত্রী

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৭ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
গাছ আমাদের প্রাণ, বেশি করে গাছ লাগান: প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছবি: পিএমও

ঢাকা: বর্ষায় বেশি করে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, গাছ আমাদের প্রাণ, এটি আমাদের শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য অক্সিজেন দেয়।

শনিবার (১৫ জুন) গণভবনে আষাঢ় মাসের প্রথম দিনে কৃষক লীগের তিন মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে তিনি এ আহ্বান জানান।

 

শেখ হাসিনা বলেন, গাছ আমাদের প্রাণ, আমরা শ্বাস-প্রশ্বাস নেই, অক্সিজেন নেই। গাছ যত বেশি আমরা লাগাতে পারবো, আমাদের ফল দেবে, কাঠ দেবে। এগুলো বিক্রি করে অর্থও পাওয়া যাবে। ভেষজ গাছ নানা ধরনের ওষুধ তৈরিতেও কাজে লাগে। কাজেই বৃক্ষ যত বেশি আমরা লাগাতে পারবো- এটি আপনাকে ফল দেবে, খাদ্য দেবে আবার অর্থ উপার্জনের পথও সুগম করবে।

সবাইকে অন্তত একটি করে ফলজ, বনজ ও ভেষজ গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এভাবে আমাদের দেশটাকে যদি আমরা সবসময় সবুজ করে রাখতে পারি তাহলে বাংলাদেশ আর পিছিয়ে থাকবে না। সেজন্য সবাইকে আমাদের এভাবেই চিন্তা করতে হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, দুর্যোগ প্রতিরোধে গাছ আমাদের প্রথম সুরক্ষা দেয়। উপকূলে সবুজ বেষ্টনী তৈরি করা, ম্যানগ্রোভ তৈরি করা, জলোচ্ছ্বাস থেকে উপকূলকে বাঁচাতে হলে আমাদের ব্যাপক হারে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।

কোনোভাবেই কৃষি জমি নষ্ট না করা, বিশেষ করে তিন ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয় সে বিষয়ে সবাইকে সতর্ক করে সরকারপ্রধান বলেন, আমরা দেখি যেখানে সেখানে একটা জমি কেনে তার শিল্প কলকারখানা করে। অর্থাৎ কৃষি জমি নষ্ট করে ফেলে। তিন ফসলের জমি সেটা কোনো মতেই নষ্ট করা যাবে না, সেখানে কেউ কোনো শিল্প কলকারখানা করতে পারবে না।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যত্রতত্র কলকারখানা করে যাতে জমি নষ্ট করতে না পারে সেজন্য আমরা ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল করছি। এটা করার এক মাত্র উদ্দেশ্য আমার কৃষি জমি রক্ষা করতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমার লোকসংখ্যা বাড়ছে। নগরায়ণ হচ্ছে, উন্নয়ন হচ্ছে তারপরও কিন্তু তাতে করে ফসলি জমি যেন নষ্ট না হয়। যে জমি আছে সেখানে যেন আমরা খাদ্য উৎপাদন করে নিজেরাই স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করতে পারি।

শেখ হাসিনা বলেন, কৃষি বাঁচলে দেশ বাঁচবে। কারণ আমাদের অর্থনীতির মূল নির্ভরশীল হচ্ছে কৃষির ওপর। কাজেই কৃষি অর্থনীতিকে আমরা উন্নত করে শিল্পায়নের দিকে যাবো। কিন্তু কৃষি বাদ দিয়ে না। কৃষিকে উন্নত করবো এবং কৃষিভিত্তিক শিল্প আমাদের দেশে গড়ে উঠবে।

একই জমিতে বার বার একই ফসল না ফলিয়ে ভিন্ন ফসল ফলানোর পরামর্শ দিয়ে তিনি আরও বলেন, এতে জমির উর্বরতা কম নষ্ট হয়।

সেচ কাজে সৌর বিদ্যুৎ নির্ভর করতে সরকারের উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেচটাকে সম্পূর্ণভাবে সোলার প্যানেলে (সৌর শক্তি) নিয়ে যেতে চাচ্ছি।

১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর গণভবনে দুই হাজারের মতো গাছ লাগিয়েছিলেন জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এর আগের গাছগুলো জাতির পিতার হাতে লাগানো। এরপর আমরা বিভিন্ন ধরনের ফলের গাছ লাগাই এবং লাগাচ্ছি। এখানে বিভিন্ন ধরনের ফসল উৎপাদন করে দেখছি ভালোই হয়। হাঁস-মুরগি-গরু-ছাগল সবই আছে আমাদের।

তিনি আরও বলেন, এখন গণভবন প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন সেই সঙ্গে একটি খামার বাড়ি।

অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী গাছ লাগানোর জন্য কৃষক লীগ নেতাদের পুরস্কার দেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে উপহার হিসেবে পুরস্কার তুলে দেন।

পরে প্রধানমন্ত্রী গণভবনে আমলকী, কালোজাম ও পলাশ গাছের চারা রোপণ করেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কৃষক লীগ সভাপতি সমীর চন্দ ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

সঞ্চালনা করেন কৃষক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামীমা শাহরিয়ার।

বাংলাদেশ সময়: ১৪২৬ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২৪
এমইউএম/আরবি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।