বরগুনা: বরগুনার আমতলীতে একটি কিন্ডার গার্টেনের নজরুল ইসলাম (৩২) নামে খণ্ডকালীন এক শিক্ষকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। বাড়ির পাশে গাছে গলায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় পাওয়া তার মরদেহের জামার পকেটে মিলেছে একটি চিরকুট, যেখানে লেখা ছিল—‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঝুলন্ত মরদেহটি উদ্ধার করে বরগুনা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ।

নজরুল আমতলীর উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের হরিদ্রাবাড়িয়া গ্রামের মো. খালেক খানের ছেলে। তিনি আমতলী সদর ইউনিয়নের খলিয়ান এলাকার ছোবাহান বিশ্বাস কিন্ডার গার্টেনে খণ্ডকালীন শিক্ষকতা করতেন।

জানা গেছে, নজরুল ইসলামের সঙ্গে একই গ্রামের এক তরুণীর দেড় বছর পূর্বে পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দেড় মাস বয়সী এক ছেলে সন্তানও রয়েছে। বিয়ের পর থেকে অভাব-অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই বাগবিতণ্ডা হতো। প্রতিবেশীরা এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ-বৈঠকও করেছেন। শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর পর্যন্ত বাড়িতে সাংসারিক কাজ করার পর বিকেলে ঘর থেকে বের হয়ে রাতে আর ফেরেননি নজরুল। অনেক জায়গায় খোঁজ করেও তাকে আর পাওয়া যায়নি।  

শনিবার সকাল ১০টার সময় ওই বাড়ির এক কিশোর পুকুর পাড়ের আম গাছের প্রায় ২০ ফুট ওপরে নজরুলের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পায়। সে চিৎকার দিলে বাড়ির লোকজন ছুটে আসে এবং পুলিশকে খবর দেয়। পুলিশ দুপরের সময় মরদেহ উদ্ধার করে। এসময় তার পরনের গেঞ্জির পকেটে একটি চিরকুট পাওয়া যায়। যেখানে লেখা ছিল—‘বউয়ের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে চলে গেলাম’।  

নজরুলের স্ত্রী কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার মনোমালিন্য ছিল না। কিন্তু কেন এভাবে চিরকুট লিখে চলে গেল জানি না। ’ এ কথা বলে তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

আহাজারি করতে করতে নজরুলের বাবা খালেক বলেন, ‘আমার বাবার কী অসুবিধা ছিল আমি কিছুই জানি না যে তাকে মরতে হবে। টাকা লাগলে আমি দিতাম। তারপরও বাবা কেন তুই মইরা গেলি, ও আমার বাবারে তুই ফির‌্যা আয়। ’

আমতলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাখওয়াত হোসেন তপু বলেন, ‘মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বরগুনায় হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ’ 

তিনি নজরুলের পকেট থেকে একটি চিরকুট উদ্ধারের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘সেটি আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়েছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১০৫৫ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০৮, ২০২৪
এইচএ/