ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

জাতীয়

হাজারো চাপে আঞ্চলিক সড়ক, ভারী বৃষ্টি হলেই যায় তলিয়ে

ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
হাজারো চাপে আঞ্চলিক সড়ক, ভারী বৃষ্টি হলেই যায় তলিয়ে

মৌলভীবাজার: জেলার আঞ্চলিক একটি সড়ক সংস্কারের অভাবে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক বন্যায় আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়ায় ভারী বৃষ্টি হলেই তলিয়ে যায় রাজনগর-খেয়াঘাটবাজার সংযোগ সড়কটি।

ধারণ ক্ষমতা ও চলাচলের মেয়াদ অনেক আগে শেষ হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সংস্কারের কোনো উদ্যোগ না থাকায় এ বেহাল দশা।

জানা গেছে, রাজনগর সদর থেকে মাত্র ১৭ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য সড়কটি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইউডি) থেকে ২০১৯ সালে সড়ক বিভাগকে হস্তান্তর করা হলেও সংস্কারের মুখ দেখেনি এখনো। সড়কটি সংস্কার টেন্ডার প্রক্রিয়ায় গেলেও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনসহ দেশে বাজেট সংকোচ থাকায় সংস্কার কাজ নাও হতে পারে এমনটা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের একটি সূত্র।

সড়কের বহু অংশ নিচু থাকায় চলতি ও গত বছরের বন্যায় মনু নদের বাঁধ ভেঙে সড়কের পার্শ্ববর্তী কাওয়াদিঘি হাওরে পানি প্রবেশ করে। ফলে সড়কের রাজনগর সদর, পাচগাঁও ও ফতেপুর ইউনিয়নের বহু জায়গা তলিয়ে যায়। ভারী যানবাহন চলাচল করে বহু জায়গা দেবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। দীর্ঘস্থায়ী বন্যায় ভাঙনের ফলে সড়কটিতে দুর্ঘটনা কেবল বেড়েই চলেছে।

সড়ক বিভাগ সূত্র জানায়, ২০১৯ সাল থেকে এলজিইডির কাছ থেকে মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগকে হস্তান্তর করা হলে উল্লেখযোগ্য কোনো বড় বাজেট আসেনি। তাই তারা কেবল ইট সলিং ছাড়া আর কোনো সংস্কার কাজ করেননি।

সড়কের প্রায় ৯০ ভাগ জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। লাগাতার বৃষ্টি হলে সড়কের রাজনগর সদর, মোকামবাজার, আজাদের বাজার, মধুর দোকানসহ বহু জায়গায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়া সড়কের বিভিন্ন বাজার অংশে জবরদখল থাকায় এটি দিন দিন আরও ছোট হয়ে আসছে। এতে প্রতিনিয়ত যানজট লেগে থাকে। স্বাভাবিক নিয়মে সড়ক দিয়ে গাড়ি চলাচল করতে পারে না। এ কারণে সড়ক এলাকার রাজনগর ও সিলেটের বালাগঞ্জ উপজেলার প্রায় ৩ লাখ মানুষ উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও ব্যবসা-বাণিজ্য থেকে পিছিয়ে পড়েছেন।

অপর একটি সূত্র জানায়, সম্প্রতি সিলেটের সঙ্গে মৌলভীবাজারের যোগাযোগ ব্যবস্থা আরও সহজ করতে ওই সড়কের কুশিয়ারা নদীতে ফেরি চলাচলের প্রস্তাব পাঠানো হয়। কিন্তু সেটি এখনো আলোর মুখ দেখেনি। ফেরি চলাচল ব্যবস্থা না থাকায় কুশিয়ারায় নৌকা নিয়ে যান চলাচলে নানা দুর্ঘটনা ঘটছে। ১৭ কিমি. সড়কটি দুই লেনসহ আঁকাবাঁকা জায়গা কেটে ভূমি অধিগ্রহণ, সোজা করে সড়ক নির্মাণ ও কুশিয়ারায় সেতু তৈরি করতে ইতোমধ্যে সেতুর নকশাসহ যাবতীয় কাজ শেষে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে ফাইল পাঠায় সড়ক বিভাগ। এতে খরচ ধরা হয় ১ হাজার কোটি টাকা।

সড়কের কিনারায় অবস্থিত কুশিয়ারা নদীর কয়েক স্থানকে সেতু নির্মাণের জন্য পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হলে শেষমেশ রাজনগর অংশের হামিদপুর ও নদীর ওপারের বালাগঞ্জ অংশের রাধাকোনা গ্রামের ওপর দিয়ে সেতু নির্মিত হবে এমনটা চূড়ান্ত হয়। সড়ক বিভাগের প্রকৌশলীরা সরকারি ঊর্ধ্বমহল থেকে অনুসন্ধানসহ সেতুর নকশা তৈরি করেন। বর্তমানে সেতুর ডিজাইন কাজ চলমান। এছাড়া রাজনগর অংশের সেতুর সংযোগ সড়ক সংস্কারে পরামর্শক নিয়োগ দিয়েছে। ওই প্রজেক্টটি সরকারের উচ্চপর্যায়ে চূড়ান্ত হওয়ার কথা থাকলেও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে পরিবর্তন আসলে আলোর মুখ দেখছে না সড়কটি।

উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান প্রার্থী আমীর আলী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সড়ক সংস্কার না হওয়ায় চলাচলের প্রায় অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। যে কারণে অটোরিকশার ভাড়া বেশি নেওয়া হচ্ছে এবং বাস ঠিকমতো চলাচল করতে পারছে না।

মৌলভীবাজার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কায়সার হামিদ বলেন, সড়কটি মেরামতের জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। অ্যাডিশনাল সিলেট জোন থেকে দরপত্রটি আহ্বান করা হয়। বাজেট সংকোচ না হলে সংস্কার হবার সম্ভাবনা বেশি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫২৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০২৪
বিবিবি/এমজে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।