মানিকগঞ্জ: সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উল্লেখ করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আপনার পরিবারে আজ পর্যন্ত কোনো সৎ মানুষের সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইংল্যান্ডে আপনার যে ভাগ্নি এমপি হয়েছেন; সেখানে প্রতিটি পদে পদে স্বচ্ছতাসহ জবাবদিহি আছে, তাকেও আপনি ফ্ল্যাট কিনে দিয়েছেন, তার ছোট বোন রূপন্তীকেও দিয়েছেন আপনার সিন্ডিকেট দ্বারা।
রোববার (২৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে মানিকগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী ও জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের এক যুগ পূর্তি উপলক্ষে আলোচনা সভা, পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাজার নিয়ন্ত্রণের আহ্বান জানিয়ে রুহুল কবির রিজভী বলেন, আপনি জুলাই ঘোষণার কথা বলবেন, আপনি অনেক সংস্কারের কথা বলবেন, কিন্তু মানুষের পেটে খুদা থাকবে, তখন কোনো ঘোষণা শুনবে না। এটাও কন্ট্রোল করতে হবে, বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে, সিন্ডিকেটবাজদের ধরতে হবে, অপরাধীদের ধরতে হবে এবং তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। মানুষ যাতে মোটা চাল, মোটা কাপড় পড়ে জীবন যাপন করতে পারে, সেই নিশ্চয়তা দিতে হবে। এটাই শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের শ্রেষ্ঠ অর্জন। মানুষ যাতে পেট ভরে খেতে পারে, সে জন্য ১৪০০ খাল খনন করেছেন, শহরের আধুনিক চিকিৎসা সেবা যাতে গ্রামের মানুষ পান তার জন্য ২৭ হাজার পল্লি চিকিৎসকে ট্রেনিং দিয়ে গ্রামে-গঞ্জে নিয়োগ দিয়েছিলেন।
তিনি আরও বলেন, যে যন্ত্রপাতি দিয়ে শেখ হাসিনা ফ্যাসিবাদ তৈরি করেছে, সেই যন্ত্রপাতি (আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী) সংস্কার করতে হবে, পুলিশকে ঢেলে সাজাতে হবে। পাশাপাশি বিচার বিভাগের সত্যিকারে স্বাধীনতা দিতে হবে, কোনো নিরীহ মানুষ অত্যাচারিত হলে আদালতে এসে যাতে ন্যায়বিচার পেতে পারে, তার জন্য সংস্কার করতে হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, প্রশ্ন ফাঁস যেন শেখ হাসিনার আমলের একটা সংস্কৃতি, একটি কালচারে পরিণত হয়ে ছিল। তিনি চাননি দেশের লোক উন্নত হোক, নৈতিকভাবে গড়ে উঠুক জাতি, তা তিনি চাননি। স্কুলের কোনো এক শিক্ষক ছাত্রীর অশ্লীল ভিডিও করে তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন, নারায়ণগঞ্জের এক শিক্ষককে কান ধরে উঠবস করিয়েছে। রাষ্ট্র ও সমাজে নৈতিকতার ধস নামে, তা সর্বত্র প্রসারিত হয়; আমরা শেখ হাসিনার আমলে দেখেছি। দেশে কোনো শিক্ষা ব্যবস্থা ছিল না, শুধু ছিল বাপজানের নাম, ভাই-বোনের নাম ছাড়া যেন কোনো ইতিহাস নেই, কোনো শিক্ষা নেই; জোর করে ফ্যাসিবাদের রাজত্ব তৈরি করেছিল। দেশের সব প্রতিষ্ঠান তার (শেখ হাসিনা) আত্মীয়-স্বজনের নামে, তার ভাই শেখ কামালের নামে সেতু কেন? তার নামে তো ব্যাংক ডাকাতির অভিযোগও আছে, তার তো কোনো ব্যাখ্যা দেননি।
জিয়া স্মৃতি পাঠাগারের সভাপতি ডা. মো. জিয়াউর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মোস্তফার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রফেসর গোলাম হাফিজ কেনেডি, প্রফেসর রোবায়েত ফেরদৌস, আফরোজা খানম রিতা, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, এস এ জিন্নাহ কবীরসহ বিএনপির জেলা উপজেলা পর্যায়ের নেতারা।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩১ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৬, ২০২৫
এমজেএফ