সিলেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৩। দিনটি সিলেটের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়।
এই হামলার ঘটনায় চিড় ধরে সিলেটবাসীর মনে। ২০১৪ সাল সেই ক্ষত কিছুটা হলেও ঘুচিয়েছে। অনন্য নির্মাণ শৈলী আর নান্দনিক রূপে গড়ে ওঠা সিলেট শহীদ মিনারের উদ্বোধন হয় ১০ ডিসেম্বর (বুধবার)।
এদিন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত পতাকা ও পায়রা উড়িয়ে দৃষ্টিনন্দন এই শহীদ মিনারের শুভ উদ্বোধন করেন। বিজয়ের মাসে নতুন এই উপহারে ক্ষত চিহ্ন কিছুটা হলেও ঘুচেছে সিলেটবাসীর।

প্রায় তিন কোটি ব্যয়ে পুণর্নির্মিত এই শহীদ মিনারের ১শ’ ফুট চওড়াবিশিষ্ট ভূমির ওপর ৪৫ ফুট উচ্চতার শহীদ স্মৃতি স্তম্ভ। রয়েছে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য আলাদা র্র্যাম্প, ভূগর্ভস্ত প্রদর্শনী কেন্দ্র ও গ্রন্থাগার, মুক্তমঞ্চ, অনুশীলন কক্ষ, গ্রিনরুম ও ব্যাক স্টেইজ এবং সম্মুখ চত্বর।
নান্দনিক শিল্পকর্মের এই স্থাপত্যে প্রস্ফুটিত হয়েছে চা বাগানের ফাঁকে ভোরে নবদিগন্তে সূর্যের রক্তিম আলোকছটা। আর আবহমান বাংলার সংগ্রামী চেতনার বিদ্রোহের চিত্র।
এদিকে ২০১৪ সালেই হারানো ধ্বংসস্তূপে নতুন রূপ পায় সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। বছরের ১৩ অক্টোবর ভস্মিভূত স্থলে পুরোনো শৈলী রেখেই নতুন পূণর্নির্মিত ছাত্রবাসের ১ ও ২ নং ব্লক, ডিজিটালাইজড করা হয়েছে। এই শ্রেণি কক্ষ উদ্বোধন করেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।

এর আগে একই বছরেই ছাত্রাবাসের ১, ২ ও ৪ নম্বর ব্লক পূণর্নির্মাণ এবং ব্লক- ৩ ও ৫ ছাড়াও শ্রীকান্ত ব্লক, ছাত্রাবাস সুপার কোয়াটারের ৫টি ব্লক, ছাত্রাবাস সুপার কোয়ার্টারসহ (ব্লক-শ্রীকান্ত) অপর একটি ছাত্রাবাসের মেরামত ও সংস্কার কাজ করা হয়।
২০১২ সালের ৮ জুলাই সন্ধ্যা রাতে ছাত্রলীগ-শিবির সংষর্ষে পুড়িয়ে দেওয়া হয় শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী এমসি কলেজ ছাত্রাবাস। আগুনের লেলিহান শিখায় পুড়ে যাওয়া মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত ঐতিহ্যবাহী এই ছাত্রাবাসের ধ্বংসস্তূপ দেখে কেঁদেছিলেন অনেকে। পুড়ে যাওয়া ধ্বংসস্তূপ দেখে খোদ শিক্ষামন্ত্রীও চোখের জল ফেলেন।
এরই ধারাবাহিকতায় ৪ কোটি ৯৯ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ব্যয়ে পুড়ে যাওয়া ছাত্রবাস পূণর্নির্মাণ ও সংস্কার কাজ করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৩৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩১, ২০১৪